
কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি : গ্রামীন জনপদের খেয়াঘাটগুলোতে চলছে ইজারাদারদের নৈরাজ্য। কলাপাড়ার নীলগঞ্জ ইউপির গ্রামীন জনপদের দৌলতপুর ও ফতেপুর খেয়াঘাট, মাঝখান দিয়ে বয়েচলা আন্ধার মানিক নদীর ওপারেই পার্শ্ববর্তী উপজেলা তালতলীর শিয়ারিপাড়া ও নিউপাড়া খোয়াঘাট। প্রতিদিন এ খেয়াঘাট দিয়ে হাজারো মানুষের পারাপার। দীর্ঘদিন ধরে চলছে খেয়া পারপারের নামে এসব ঘাটে চলছে নিরব চাঁদাবাজী। সরকার নির্ধারিত কোন ভাড়া তালিকা নেই। নেই কোন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা, কেবল মাত্র খেয়ায় চেপে বসলেই গুনতে হবে অতিরিক্ত টাকা। আর রাতের চিত্র হয়ে ওঠে আরো ভয়ংকর। জরুরি কাজে পারাপার কিংবা অসু¯’ রোগী নিয়ে এসব খেয়া দিয়ে নদীর ওপারে পৌঁছাতে হলে দর কষাকষি ছাড়াই দিতে হ”েছ চড়া মূল্য।
সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মানুষের সেবা নয়, খেয়াঘাটগুলোতে যাত্রী পারাপারে সরকার নির্ধারিত কোন ভাড়া তালিকা লাগাননি ইজারাদাররা। ই”ছামতো খেয়ায় যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হ”েছ মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া। জনপ্রতি ভাড়া আদায় করা হ”েছ বিশ টাকা। আর রাত হলেই পাল্টে যায় এ চিত্র। অসু¯’ রোগী কিংবা ঠেকায় পড়ে পারাপার হতে হলে গুনতে হয় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। আর চড়া মূল্য আদায়ে প্রতিবাদ কিংবা দর কষাকষি করলেই হতে হয় লাঞ্চনার শিকার। এখানে বিকল্প পারাপারের ব্যব¯’া না থাকায় অনেকটা বাধ্য হয়েই খেয়াঘাটে ভাড়ার নামে চাঁদা দিতে হ”েছ যাত্রী সাধারনের।
ভুক্তভোগী ফতেহপুর খেয়াঘাটের যাত্রী জয়নাল মিয়া বলেন, কুয়াকাটাসহ বিভিন্ন জায়গায় ব্যবসার কাজে প্রতিদিনই এ ঘাট দিয়ে পার হতে হয় তাকে। কিš‘ নিরুপায় হয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভাড়ার নামে চাঁদা দিয়ে যা”েছন তিনি।
মাত্র দুই লাখ টাকায় ফতেপুর ঘাট ইজারা নেয়া কাশেম সরদারের কাছে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন সদোত্তর দিতে পারেননি।
অন্যদিকে দৌলতপুর খেয়াঘাটেরও একই চিত্র। এ ঘাটদিয়েও জনপ্রতি আদায় করা হ”েছ বিশ টাকা। একইভাবে এ ঘাটেও রাতের পারাপারে যাত্রীদের দিতে হয় অতিরিক্ত চাঁদা। এ ঘাটের যাত্রী সিতারা বিবি বলেন, মেয়েবাড়ি যা”েছন নাতি-নাতনিদের দেখতে, বিশ টাকা ভাড়া দিতে কষ্ট হয়েছে তার। মিনিমাম ১০ টাকা হলে ভালো হত। এ ঘাটের যাত্রীরা অভিযোগ করেন, সরকার নির্ধারিত যাত্রী ভাড়া তালিকা না থাকায় ই”েছমত ভাড়া আদায় করছে ঘাট পরিচালকরা। এরফলে ঘাটগুলোতে বছরে কয়েক লাখ টাকা চাঁদা হাতিয়ে নি”েছ এসব চাদাবাজরা।
দৌলতপুর ঘাটের ইজারাদার সুমন শিকদার বলেন, প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয়ে দুই উপজেলা সংশ্লিষ্ট হওয়ায় (আন্ত:জেলা) বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয় থেকে ঘাট ইজারা নিয়েছেন। তিনি মাঝিকে সরকারি তালিকানুযায়ী ভাড়া আদায় করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে অতিরিক্ত ভাড়া কেন নেয়া হ”েছ এ প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
এবিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র বৈদ্য জানান, বিভাগ থেকে ওইসব ঘাটের ইজারা দেয়া হয়েছে। তবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।