স্থানীয় শিক্ষানুরাগী মুরব্বিরা আলোকিত সমাজ গড়া এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে গুনগত শিক্ষার আলোকে বিকশিত করার জন্য নিজের অর্থ ও জমি প্রতিষ্ঠানের নামে লিখে দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে যাচ্ছেন। এজন্য উক্তরুপ পরিকল্পনা গ্রহণকারী ব্যক্তিবর্গ এক একটি প্রতিষ্ঠান ও অনুসরনীয় ব্যক্তি হিসেবে গন্য হয়ে আসছেন এবং সমাজের নিকট তাহারা প্রশংসিত এবং তাহারা মৃত্যু বরণ করেও ওমর হয়ে আছেন।
প্রতিষ্ঠান পরিচালনা : সমাজের সৎ ও উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তিবর্গের উপর প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার দায়িত্ব অর্পণ করা আবশ্যক। উচ্চ শিক্ষিত ও সৎ ব্যক্তিবর্গ গুনগত শিক্ষা বিস্তার ও শিক্ষা বান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে সক্ষম এবং তাদের হাতে প্রতিষ্ঠানের তহবিলও নিরাপদ থাকে। তাহারা আইন বহির্ভূত কোন কার্যক্রম পরিচালনা করতেও অগ্রসর হয়না বরং বিধি অনুসরণ পুর্বক পরিচালনায় সহযোগিতা করেন।
আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার আলোকে দৃঢ়ভাবে স্বাক্ষী দিচ্ছি যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় শিক্ষিত লোকজনের বিকল্প নেই। তবে রাজনৈতিক ও বিত্তশালীদের অতিরিক্ত খবরদারির কারণে প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় স্বল্প শিক্ষিত লোকজন এগিয়ে রয়েছে।
পরিচালনা পরিষদ কে শিক্ষকদের নিয়ে বিভিন্ন সভা করতে হয়। সেক্ষেত্রে পরিষদের ব্যক্তিবর্গকে বিষয় ভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করার প্রয়োজন হয়। তাদের যদি বিষয় ভিত্তিক জ্ঞান না থাকে, সেক্ষেত্রে তাদের থেকে জ্ঞানগর্ব বক্তব্য আশা করা যায় না। যেমনটি তেতুল গাছ থেকে আপেলের আশা করা যায় না।
আলোকিত সমাজ ও কর্মক্ষম মানব সম্পদ প্রস্তুত করাই শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য। এর জন্য সৎ চরিত্রবান শিক্ষক ও পরিচালনা পরিষদের প্রয়োজন। সৎ চরিত্রবান ব্যক্তিই পারে সৎ চরিত্রবান মানব সম্পদ উপহার দিতে। এজন্য আইনকানুন প্রস্তুত করা ও আন্তরিক ভাবে অনুশীলন করাও প্রয়োজন আছে।
প্রতিষ্ঠান সব সময় সমাজের সম্পদ এবং উহার একক দাবীদার কেউ নেই। যদি ব্যক্তিগত নামে প্রতিষ্ঠান হোউক না কেন। ব্যক্তির চেয়ে সমাজ ও প্রতিষ্ঠান উর্ধ্বে এবং তুলনার বিষয়ও নহে। হ্যাঁ, প্রতিষ্ঠাতার আন্তরিকতার বিষয়টিকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই।
প্রতিষ্ঠানের সকল কিছুই সামাজিক সম্পদ এবং আর্থিক উন্নয়ন ও পরিচালনায় মনোযোগের সাথে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন সমাজের ও প্রতিষ্ঠানের তসরুপ না হয়ে যায়। এক্ষেত্রে ক্ষমা চাওয়ার ক্ষেত্রটি বড়ই কঠিন এবং সুযোগই নেই। এজন্য আন্তরিক ভাবে সাবধানে পরিচালনা করতে হয়।
এক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সাথে একত্রিত হওয়ার সুযোগ হয়েছে। পরিচালনা পরিষদের দুর্ব্যবহার ও অর্থ তসরুপের ঘৃণ্য ইতিহাস প্রকাশ পেয়েছে। প্রতিষ্ঠান প্রধানদেরকে আন্তরিকতা ব্যতীত বাধ্য হয়ে অপরাধীকে মুক্ত করার বিষয় বিবেচনা করতে হয়। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু আইনের আওতায় নেওয়ার সুযোগ কমই আছে। পরিচালনা পরিষদের একটি অংশ অন্যায় আচরণ ও তসরুপে জড়িয়ে যায়। সেহেতু ক্ষেত্র মতে প্রতিষ্ঠান প্রধান অসহায় হিসেবে গন্য হয়। মাঝে মাঝে বাধ্যতামূলক ভাবে অপসারণ করাও হয়।আর যাহারা সৎ ও চরিত্রবান তাহারা প্রতিদিন প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয় না এবং তাদের পেশায় কর্ম ব্যস্ত থাকেন।আর বেকার ও অসত এবং চরিত্রহীনরা প্রতিষ্ঠানের তহবিল তসরুপ করেই যাচ্ছেন।
গুনগুন শিক্ষা বিস্তারের জন্য আবশ্যক বিষয় হলো :
গুনগত মানসম্পন্ন শিক্ষার জন্য চাই সুদক্ষ শিক্ষক এবং পরিচালনা পরিষদের নিরাপদ সার্ভিসের ক্ষেত্র নিশ্চয়তা করতে হবে। অপরিহার্য উপাদান ও পূর্বশর্ত হচ্ছে। ১. মানসম্পন্ন শিক্ষক ২.আধুনিক ও যুগোপযোগী শিক্ষাক্রম ৩. শিক্ষাদান সামগ্রী ও ভেীত অবকাঠামো ৪.উপযুক্ত মূল্যায়ন পদ্ধতি ৫. সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ৬. বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ৬. সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করা, ৭. শিক্ষক ও কর্মচারীদের আর্থিক স্বচ্ছতা বিধান করা প্রমুখ।
গুনগত শিক্ষা অর্জনের প্রতিবন্ধকতা :
১. নৈতিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় ২. সন্ত্রাস ও অপরাজনীতির ভয়ানক বিস্তার ৩. শিক্ষকদের দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধে কাংখিত পর্যায়ে না থাকা ৪. তুলনামূলক ভাবে শিক্ষকদের আর্থিক সুযোগ সুবিধার অপর্যাপ্ততা ৫. শিক্ষকতা পেশায় কতিপয় আদর্শচ্যুত ব্যক্তির অনুপ্রবেশ ও ৬। পর্যাপ্ত অবকাঠামোর স্বল্পতা ইত্যাদি।