নিজস্ব প্রতিবেদক:নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে বাংলাদেশ ব্যাংককে পেশাদার, বিচক্ষণ ও সর্বোচ্চ স্বাধীন সংস্থা হিসেবে দেখতে চান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
তিনি বলেন, ‘গভর্নর হিসেবে আমার দায়িত্ব চার বছর। মেয়াদ শেষে আমি বাংলাদেশ ব্যাংককে একটি পেশাদার প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে চাই। এখানে ইন্টেলেকচুয়াল বা মেধাবী বিচক্ষণ কর্মকর্তাদের মিলনমেলা থাকবে এবং এপেক্স রেগুলেটরি বডি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল উদ্যোগে রোববার বিদায়ী পিআরএল গমনকারী কর্মকর্তাদের সংবর্ধনা ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিন, সাবেক-বর্তমান ডেপুটি গভর্নর এবং সাবেক-বর্তমান নির্বাহী পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন অফিসার্স ওয়েলফেয়ারের সভাপতি এইচ.এম. দেলোয়ার হোসাইন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর বলেন, ‘অনেক সময় কাজের প্রয়োজনে সাবেক গভর্নরদের পরামর্শ নিতে হয়। সেজন্য ফরাসউদ্দিন স্যারকে সবসময় কাছে পেয়েছি। তবে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে সব পরামর্শ বাস্তবায়ন করা যায় না। বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগদানের পরপরই আমি কিছু কাজ গুরুত্ব সহকারে হাতে নিয়েছি। এগুলোর মধ্যে কর্মকর্তাদের বাসস্থান। অর্থাৎ ব্যাংক কলোনি গুলোর মান উন্নয়ন। পাশাপাশি কর্মের পরিবেশ ভালো করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের যতগুলো অফিস রয়েছে সেগুলোর মান উন্নয়নের কাজ শুরু করেছি। আমি বিশ্বাস করি কর্মের পরিবেশ ভালো থাকলে ৪০ শতাংশেরও বেশি প্রোডাক্টিভিটি বেড়ে যায়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মো. ফরাস উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমার অস্তিত্বের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক মিশে আছে। আমি এটা ছাড়া কিছু ভাবতে পারিনা। যারা এখানে কাজ করেন তারা শুধু চাকরিই করেন না, এটা তাদের পরিবার। আমি অবসরে যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত অনেক পরিবর্তন এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। অনেক সময় গভর্নরদের হাত-পা বাঁধা থাকে। তাই চাইলেও সব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারে না। দেশের মূল্যস্ফীতি নিয়ে তিনি বলেন, ৫ থেকে ৮ শতাংশের মধ্যে মূল্যস্ফীতি সীমাবদ্ধ থাকলে তাকে মডারেট মূল্যস্ফীতি বলা হয়। ইদানিং আমাদের দেশে যত ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে তার অন্যতম কারণ বহির্বিশ্বের অস্থিরতা। এই সমস্যা ও খুব ভালোভাবেই মোকাবেলা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ভবিষ্যতেও এরকম ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদী তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর আবুল কাশেম বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে ঋণ খেলাপিদের পরিচালক বানানো হয় না। আমি দায়িত্বরত থাকা অবস্থায় সরকার একবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক নিয়োগ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ছিলেন ঋণ খেলাপি। তাকে নিযুক্ত করতে সরাসরি আপত্তি জানিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। সুতরাং এখনো পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি সর্বোচ্চ সুশাসন ধরে রেখেছে এবং ভবিষ্যতেও এর ধারা যাতে অব্যাহত থাকে সেই প্রত্যাশা করেন তিনি।