Logo
আজঃ সোমবার ২০ মে ২০24
শিরোনাম

তুরস্কে তুষারঝড়ে ২৩৮ ফ্লাইট বাতিল

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ | হালনাগাদ:সোমবার ২০ মে ২০24 | ২৭৩জন দেখেছেন

Image

অনলাইন ডেস্ক ;তুষারঝড়ে তুরস্কের ২৩৮টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। স্থানীয় সময় আজ শনিবার ইস্তানবুলে বৃষ্টি ও তুষারঝড়ের কথা মাথায় রেখে ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারির দুই শতাধিক ফ্লাইট বাতিলের ঘোষণা দেয় তার্কিস এয়ারলাইন্স।

তুরস্কের গণমাধ্যম ডেইলি সাবাহর প্রতিবেদনে বলা হয়, তার্কিস এয়ারলাইন্সের প্রেস কর্তৃপক্ষ জানায়, জরুরি আবহাওয়া কমিটি ফ্লাইট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়।

তাদের বিবৃতিতে জানায়, জনগণকে এয়ারপোর্টে আসার আগে তাদের ফ্লাইটের তারিখ চেক করতে বলা হয়। ইস্তানবুলে তুষারঝড়ের কারণে আবহাওয়ার জরুরি কমিটির সিদ্ধান্তে ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারির ফ্লাইট বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, ২৩৮টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭২টি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট এবং ১৬৬টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। আরও ফ্লাইট বাতিল হতে পারে বলে জানানো হয়।


আরও খবর



ঢাকা থেকে হাতিয়াগামী লঞ্চের সময়সূচী পরিবর্তনের দাবি তুলেছেন যাত্রী সাধারণ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ | ১৫৮জন দেখেছেন

Image

আজাদ হোসেনঃহাতিয়া থেকে লঞ্চ ছাড়ার সময়সূচী পরিবর্তন করার দাবি জানিয়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। বর্তমান সিডিউল পরিবর্তন করে পাঁচটা থেকে ছয়টার মধ্যে করার প্রস্তাব তুলেছেন তারা। হাতিয়া থেকে ঢাকায় চলাচলকারী যাত্রীবাহী লঞ্চ গুলোকে মানুষের কল্যাণের কথা মাথায় রাখতে হবে বলেও জানান তারা। হাতিয়াবাসীর দাবিঃ হাতিয়া থেকে লঞ্চ বিকাল ৫ টা থেকে ৬ টার মধ্যে ছাড়তে হবে। এই সময়সূচির মধ্যে লঞ্চ পরিচালনা করলে চাকরিজীবীরা তাদের কাজ সেরে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পারবে। বর্তমান সিডিউল অনুযায়ী মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বারোটা থেকে একটার মধ্যে লঞ্চ ছাড়ার কারণে যাত্রীদের অর্ধ দিবস কর্ম বিরতি দিয়ে তাড়াহুড়ো করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হয়। বর্তমান লঞ্চের সিডিউল বাস্তবসম্মত নয়।

সাধারণ মানুষদের একদিনের বেশি সময় লঞ্চে অবস্থান করতে হয় যা যাত্রী সাধারণের সময় এবং কাজ দুটোই নষ্ট হয়। ডেক যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ ডেকে বসে ভোগান্তি পোহাতে হয়। অন্যদিকে রাত তিনটা বা চারটার দিকে লঞ্চ সদরঘাটে এসে পৌঁছায়। সেই সময়টা যাত্রীদের জন্য গন্তব্যে পৌঁছানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। যদি লঞ্চগুলো ছয়টা বা সকাল সাতটার দিকে ঘাটে পৌছাতো তাহলে অফিসের কাজকর্ম অন্যান্য কাজকর্ম সুস্টভাবে সম্পাদন করার পরিবেশ তৈরি হতো। এতে একদিকে যেমন সময়ের সাশ্রয় হতো অন্যদিকে যাত্রী ভোগান্তি লাঘব হতো। ঢাকার সদরঘাট থেকে হাতিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চগুলো সাড়ে পাঁচটা অথবা ছয়টায় রওনা হয়ে ভোরবেলায় হাতিয়া পৌঁছায়, আবার বারোটা একটার দিকে লঞ্চগুলো তাড়াহুড়ো করে ঢাকায় রওয়ানা দিয়ে ফিরে আসে। এটা যাত্রীদের জন্য অনেকটা অবিচার। তাই যাত্রীদের কথা চিন্তা করে হাতিয়া থেকে বিকাল ৫ঃ০০ টা থেকে ছয়টার মধ্যে লঞ্চ ছেড়ে আসলে দুর্ভোগ অনেকটাই কমে যেত বলে তাদের বিশ্বাস। এ কারণে যাত্রী সাধারণ হাতিয়া থেকে ঢাকা গামী লঞ্চ গুলোর সিডিউল পরিবর্তন করার দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন।


আরও খবর



থাইল্যান্ডে তীব্র গরমে ৩০ মৃত্যু, সতর্কতা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ | ১৪৪জন দেখেছেন

Image

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:থাইল্যান্ডে হিট স্ট্রোকে অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে নতুন করে সতর্কতা জারি করা হয়েছে দেশটিতে।বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দেশটির সরকার এ সতর্কতা জারি করে।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাজধানী ব্যাংককে চরম তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পর্যটন নগরীটিতে তাপমাত্রা ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে অশঙ্কা করা হচ্ছে। বুধবার সেখানে ৪০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারও প্রায় একইরকম তাপমাত্রার পূর্বাভাস দেওয়া হয়।

চলমান সময় নিয়ে থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ১ জানুয়ারি থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত দেশটিতে হিট স্ট্রোকে অন্তত ৩০ জন মারা গেছেন। এর আগে ২০২৩ সালে দেশটিতে হিট স্ট্রোকে ৩৭ জনের প্রাণহানি হয়।

দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের উপ-মহাপরিচালক দিরেক খামপায়েন জানান, সরকারি কর্মকর্তারা বয়স্ক লোকজন এবং যারা স্থুল ও দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থতায় ভুগছেন, তাদের বাড়িতে অবস্থান ও পর্যাপ্ত পানি পান করার আহ্বান জানিয়েছেন।

থাইল্যান্ডসহ দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে সাধারণত এপ্রিল মাসে আবহাওয়া সবচেয়ে গরম থাকে। কিন্তু এল নিনো আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে চলতি বছরে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

প্রসঙ্গত, গরম আবহাওয়ার একটি ঢেউ এ সপ্তাহে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু অংশেও ছড়িয়ে পড়েছে। তীব্র গরমের কারণে ফিলিপাইন ও বাংলাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশে উপাসকরা বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করছে।

সূত্র:ফ্রান্স ২৪আরএফআইসাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট


আরও খবর



সিঙ্গাপুরে প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্টের বিনিয়োগ রোডশো

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২০ মে ২০24 | ৩০জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক:বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড সিঙ্গাপুরে বিনিয়োগ রোডশো করেছে। ‌গত ১১ মে, ২০২৪ তারিখে সিঙ্গাপুরের কিচেনার এ হোটেল নভোটেলে এই রোডশো অনুষ্ঠিত হয়। এই রোডশো-এর উপজীব্য ছিল- সিঙ্গাপুর প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের পথ সুগম করার মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি তরান্বিত করা।

প্রাইমইনভেস্ট প্রবাসী আয়োজিত এই বিনিয়োগ রোডশোতে উপস্থিত ছিলেন- সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় হাইকমিশনার মো. তৌহিদুল ইসলাম-এনডিসি; বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক জনাব মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী; সিঙ্গাপুর বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি, সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ বিজনেস চেম্বারের সভাপতি, সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশী মেরিন কমিউনিটির সভাপতি, প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ এম ওমর তৈয়ব, প্রাইম এক্সচেঞ্জ কোং প্রাঃ লিঃ সিঙ্গাপুরের নির্বাহী পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ সামিউল্লাহ প্রমুখ।

‘প্রাইমইনভেস্ট প্রবাসী’ হলো এমন একটি বিনিয়োগ ব্যবস্থা যেখানে প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্টের দক্ষ ও অভিজ্ঞ বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা কমিটি শেয়ারবাজারে প্রবাসীদের অর্থের সুচিন্তিত ও উপযুক্ত বিনিয়োগের মাধ্যমে তাদের জন্য এনে দিবে আকর্ষণীয় মুনাফা।

অনুষ্ঠানে প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জনাব সৈয়দ এম ওমর তৈয়ব গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও অবকাঠামোর উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন তুলে ধরে বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্সের অবদান অনস্বীকার্য। প্রবাসীদের জন্য রয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ। যার মাধ্যমে তাদের এবং দেশের সামগ্ৰিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব। প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থের সুপরিকল্পিত বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে এসেছে প্রাইমইনভেস্ট প্রবাসী যাতে তারা প্রবাসে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে বিনিয়োগ করতে পারবেন।’

সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের মাননীয় হাইকমিশনার মো. তৌহিদুল ইসলাম এনডিসি প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্টের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশে এই প্রথম কোনো ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক প্রবাসীদের জন্য পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ নিয়ে এসেছে। অনেক সময় বিনিয়োগ করে প্রবাসীরা অনেক ধরণের ভোগান্তির স্বীকার হন। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত প্রবাসীদের মনে আস্থা জাগ্রত করা যাতে তারা বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হয়। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরাসরি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে পৌঁছাতে হবে এবং সকল পেশা ও শ্রেণীর প্রবাসীদের দেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক জনাব মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী, প্রবাসীদের জন্য বিশেষায়িত ইনভেস্টমেন্ট স্কিম- প্রাইমইনভেস্ট প্রবাসী চালু করার জন্য পিবিআইএলকে স্বাগত জানান। তিনি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে রেমিটেন্সের অবদান স্বীকার করে প্রবাসীদেরকে বৈধ উপায়ে রেমিটেন্স পাঠানোর বিষয়ে গুরত্বারোপ করার পাশাপাশি দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।


আরও খবর



সাফল্য অর্জনকারী ৫ জয়িতার গল্প

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২০ মে ২০24 | ১৫৬জন দেখেছেন

Image
পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি:জয়িতা হচ্ছে সমাজের সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল নারীর একটি প্রতিকী নাম। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দিক নির্দেশনায় ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উদ্যোগে প্রতিবছর দেশব্যাপী “জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ” শীর্ষক অভিনব প্রচারাভিযানের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তৃণমূলের সফল নারী, তথা জয়িতাদের অনুপ্রাণিত করা। এরি ধারাবাহিকতায় নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলায় ২০২৪ সালে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিশেষ সাফল্য অর্জনকারী শ্রেষ্ঠ জয়িতা হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন ৫ জন আত্মপ্রত্যয়ী এবং সংগ্রামী নারী। তারা হলেনঃ

(১) অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী তাপসী রাবেয়াঃ নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর হরিরামপুর (দক্ষিণ) গ্রামের অধিবাসী এসএম রফিকুল ইসলামের মেয়ে তাপসী রাবেয়া একজন শিক্ষিত যুব নারী যার স্বপ্ন ছিলো ডাক্তার হবার। সেটাতে সফল হতে পারেনি। অনার্স মাস্টার্স কমপ্লিট করে বিসিএস পরীক্ষার ব্যর্থ হয়। তবে সে দমে যাবার মেয়ে নয়। ব্যথতায় হচ্ছে সফলতার স্তম্ভ বা খুঁটি এই মন্ত্রে  নতুন উদ্যমে নিজেকে সাজায় সে।

সমাজ, সংসারের আর্থিক ও সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চাওয়া রাবেয়া তার সংসার জীবনে জমানো টাকা-গয়না আর আত্মীয়দের কাছ থেকে ধার করা টাকা দিয়ে একটি জমি ক্রয় করে। তারপর সেই জমিতে বাগান করে, পরিচর্যা করে। দুই বছর পর আম বিক্রি করে মোটামুটি ভালো অঙ্কের টাকা পায়। এইভাবে কয়েক বছর কঠোর পরিশ্রম করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বি হওয়া শুরু করে।

রাবেয়া জানান মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার "একটি বাড়ি একটি খামার" এই প্রকল্পটি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আমি আমার স্বামীর জমিতে একটি খামার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেই। অক্লান্ত পরিশ্রম করে রোদে পুড়ে শ্রমিকদের সাথে হাতে হাত লাগিয়ে গড়ে তুলি "শাহ আলম এগ্রো" নামের একটি প্রতিষ্ঠান। যা একটি গবাদি পশু পালন, বায়োগ্যাস ও প্রাকৃতিক জৈব সার উৎপাদন কারী প্রতিষ্ঠান। 

যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে আমি গবাদির পশুর যত্ন, খাদ্য ব্যবস্থাপনা, পরিচর্যা, প্রাথমিক চিকিৎসা ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ করে। মৎস্য চাষ ও হাঁস-মুরগি পালন বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে কিভাবে লাভজনক ভাবে করা যায় তা আয়ত্ত করে স্বল্প সময়ের মধ্যে অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে দেশি মুরগি ও হাঁস পালন শুরু করি। এ লক্ষ্যে নিজস্ব হ্যাচারি স্থাপন করি খামারের মধ্যে। বাচ্চার বয়স আড়াই থেকে সাড়ে তিন মাস হলেই প্রতি চালানে (পাঁচশত) বিক্রি করে প্রায় দুই লক্ষ টাকা লাভ করি। এছাড়াও বিভিন্ন রকম মৌসুমি ফল ও শাক-সবজি চাষ করে খামারের এক ইঞ্চি জায়গাও নষ্ট করিনি। 

খামারের এক প্রান্তে একটি ছোট পুকুর আছে। সেটার ধারেই হাঁসের সেড স্থাপন করি। সেই পুকুরে সমন্বিত মাছ চাষের পাশাপাশি শামুকও চাষ করি। ফলে হাঁসের খাদ্যের খরচ অর্ধেক লাগে। আবার হাঁসের বিষ্ঠাগুলো পুকুরের মাছের খাদ্য হিসেবে কাজ করে। হাঁসের ডিম ও মাছ বিক্রি করে মোটামুটি ভালো অংকের অর্থ উপার্জন করি পাশাপাশি আমার পরিবারের আমিষের চাহিদাও পূরণ হয়।

আজ আমি কারো বোঝা নই। অর্থের জন্য এখন আমাকে আর কারো কাছে হাত পাতাতে হয় না। বরং আমি আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের আর্থিক ভাবে সাহায্য করি। আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী ও গরিব অসহায় দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি। আমি মনে করি অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন নারীদের সামাজিক মুক্তির একটি বড় মাধ্যম।

(২) শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী নিয়তি রানী উরাওঃ পত্নীতলা উপজেলার অন্তর্গত পত্নীতলা ইউনিয়নের বুজরুক মামুদপুর গ্রামে বসবাস ৩৮ বছর বয়সী নিয়তি রানী উড়াও এর। তিনি প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন এবং স্বামী সন্তানদের ও প্রতিষ্ঠিত করেছেন। যার অন্য একটি পরিচিতি তিনি হলো মহীয়সী নারী।

বাবা শ্রীমন্ত উরাও ও মা যামিনী উরাও এর পাঁচ সন্তানের মধ্যে তিনি পঞ্চম সন্তান। তিনি ছিলেন একটু ভিন্ন প্রকৃতি কর্মচঞ্চল হাসিমাখা মুখের অধিকারী। তার বাল্যকাল কেটেছে চরম আর্থিক দৈনতায়। তিন বেলা তাদের খাবার যোগাড় ছিল না। 

পড়ালেখা করা খুবই কঠিন হয়ে ওঠে। নিয়তি রানী উড়াও তাই নিজের প্রচেষ্টায় লোকের বাড়িতে দিনমজুরি কাজ করে টাকা জোগাড় করে পড়ালেখার খরচ চালাতো। এভাবে সে জয়পুরহাট খঞ্জনপুর উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএসসি পাস করেন। একইভাবে সে জয়পুরহাট সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। আর্থিক অনটনের কারণে বাধ্য হয়ে বিবাহ জীবনে আবদ্ধ হন।

নতুন সংসার জীবন শুরু হয়। বছর না যেতেই তার কোলে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান ঘর আলো করে আসে। পরিবারের আর্থিক অনটনের জন্য এনজিও সংস্থা ব্র্যাকের এ.এন.পি স্কুলে ৪ বছর চালানোর পর দুই বছর পিপিএস বিদ্যালয় শিক্ষকতায় আবদ্ধ হন।

এরপর এনজিও সংস্থা আশ্রয় ৪ প্লাস শিশুর শিক্ষকতা করেন। এরই মধ্যে সার্বিক কল্যাণে সমাজের ক্ষেত্রে নারী নেত্রী হিসেবে দি হাঙ্গার প্রজেক্ট এর বাংলাদেশ নারীনেত্রী প্রশিক্ষণে চারদিন ব্যাপী জয়পুরহাটে টিএমএসএস তে ১৫০তম ব্যাচে অংশগ্রহণ করেন। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তিনি তার জীবনের মিল খুঁজে পান। এই প্রশিক্ষণের সুবাদে বিভিন্ন জায়গায় নানা শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে মিশার সুযোগ হয় মানুষকে চেনা এবং তাদের সাথে কেমন আচরণ করতে হবে তা খুব ভালোভাবে আয়ত্ব করেন নিয়তি রানী। সামাজিক সমস্যার সমাধানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এলাকায় নারীদের সংঘটিত করে অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধ এবং নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় আপোষের নেত্রী হিসেবে তিনি এলাকায় সুপরিচিত। এখন তিনি দ্যা হাঙ্গার প্রজেক্ট এর পুষ্টি উজ্জীবক হিসেবে সমাজ সেবায় স্বেচ্ছাসেবিকার কাজ করে চলেছেন। মানুষদের স্বাস্থ্য সম্মত জীবন যাপন এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করে থাকেন। তিনি বিভিন্ন দিবসে নিজের গ্রামে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন এলাকার তরুণ এবং বেকার যুবক যুবতীদের আয়বর্ধক কাজে যুক্ত করে সকলের কাছে নিয়তি দিদি জনপ্রিয় মানুষের পরিণত হয়েছেন।

নিয়তি রাণী মনে করেন মানুষ বাঁচে তার কর্মের মাধ্যমে, বয়স এখানে মুখ্য বিষয় নয়। অন্যের জীবনের ভরসার পাত্র কয়জনায় বা হতে পারে? যারা সমাজে মানুষের বিপদে- আপদে পাশে দাঁড়ায়, কাজ করে তারাই প্রকৃত মানুষ।

(৩) সফল জননী ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ জয়িতা প্রতিমা রানীঃ পত্নীতলা উপজেলার পত্নীতলা ইউনিয়নের বোরাম গ্রামের শ্রী সন্তোষ চন্দ্র দাসের স্ত্রী প্রতিমা রানী। বাবা হরেন্দ্র নাথ মন্ডল ও মাতা কাদম্বীনি মন্ডলের ৪ সন্তানের মধ্যে প্রতিমা রানী তৃতীয় সন্তান। বাল্যকাল কেটেছে চরম আর্থিক দৈন্যতায়। তিনবেলা তাদের খাবার জুটতোনা। লেখাপড়া তো দূরের কথা। স্কুলের গন্ডি পেরুনো ভাগ্যে জোটেনি। দৈন্যতার কারণে একেবারেই অল্প বয়সে বিয়ে হয় তার। শ্বশুর-শ্বাশুড়ির অস্বাভাবিক নির্যাতন আর সংসারে অভাব অনটনের মধ্যে সদ্য বিয়ের ১ বছরেই মাথায় জন্ম নেয় তাদের প্রথম সন্তান। এভাবে সুখে দুঃখে খরকুটু দিয়ে সংসার গড়তে গড়তেই ঠিক ৩ বছর পর তাদের আরও একটি পুত্র সন্তানের জন্য হয়। দুই ছেলে ও শ্বশুর-শ্বাশুড়ি নিয়ে কোন রকমে দিন কাটতো তারই মধ্যে তাদের সংসার আলো করে আসে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান। হাটি হাটি পা পা করে সংসার এগুতেই শুরু হয় সন্তানদের লেখাপড়ার খরচের চাপ।

অভাবের সংসার চালাতে অর্থের প্রয়োজন পড়লে তিনি পড়ে যান অর্থনৈতিক দৈনদশার মধ্যে। পাশের গ্রাম কাঁটাবাড়ীর এক বাবুর নিকট থেকে কিছু জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ শুরু করেন। পাশাপাশি কিছু গরু-ছাগল, হাঁস, মুরগি ইত্যাদি নানা ধরনের উৎস থেকে ইনকাম দিয়ে কোন রকমে সংসার ও ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া চালাতে থাকেন। আস্তেই সন্তানরা উঁচু ক্লাসে উঠে আর লেখাপড়ার খরচও বেশি হতে থাকে। এদিকে সন্তানেরা ক্লাস ফাইভে ও এইটে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পায়। তাদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। এস.এস.সিতে লেটার মার্ক নিয়ে ফাস্ট ডিভিশনে ফাস্ট হয়। এইদিকে অভাবের সংসার প্রতিবেশি লোকজনদের তিরস্কার, সামাজিক কুসংস্কার, লাঞ্ছনা-গঞ্জনা সবকিছু উপেক্ষা করে নিজের শেষটুকু দিয়ে প্রচেষ্টায় সন্তানদের মেধা ও হার না মানা পরিশ্রমের ফলে আজ তিনি সত্যিকারের একজন স্বশিক্ষিত মা হিসেবে সমাজে পরিচিত এবং প্রতিষ্ঠিত।

প্রতিমা রানী'র বড় ছেলে স্বপন কুমার দাস এখন সিনিয়র অফিসার জনতা ব্যাংক লিমিটেড, ছোট ছেলে অনুপ কুমার দাস সিভিল ইঞ্জিনিয়ার সিনিয়র ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার, নাভানা রিয়েল স্টেট লিমিটেড, আর মেয়ে কৃষ্ণাশ্রী দাস সহকারী শিক্ষিকা কাঁটাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

সন্তানদের জীবনে ভরসার পাত্র কয়জন মা'ই বা হতে পারে। যারা সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করে সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পারে। কিন্তু প্রতিমা রানী একজন মহীয়সী মা হিসেবে সন্তানদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করে তুলেছেন।

(৪) নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন জীবন শুরু ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ জয়িতা মান্টি রানী দাসঃ পত্নীতলা উপজেলায় নজিপুর পৌরসভা মামুদপুর গ্রামের অসিম কুমার দাস এর মেয়ে মান্টি রানী দাস। বাবা মার প্রথম সন্তান হওয়ায় মান্টি রানী কৈশর কেটেছিল হেঁসে খেলেই। কিন্তু এই আনন্দ বেশি দিন স্থায়ী হয়না। বাবা অসুস্থ হওয়ায় সংসারে অভাবের কারণে ২০০৮ সালে তাকে বাধ্য হতে বিয়ের পিড়িতে বসতে হয়। বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে গিয়ে বেশি দিন ভালো থাকা হয়নি তার। নিজের জীবন এবং সংসার সম্পর্কে তেমন ধারণা ছিল না তার। একে তো বাল্যকালে বিয়ে আবার অকালে সন্তান ধারণ। শ্বশুড়-শ্বাশুড়ীর এবং স্বামীর কটু কথা এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে হয়। বাচ্চা হওয়ার দীর্ঘ ৯ মাস পরে মান্টির স্বামী মান্টিকে নিতে আসে এবং মান্টিকে নিয়ে যায় শ্বশুড় বাড়ীতে। আবারো তার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে এবং যৌতুকের জন্য চাপ দেয়। এক পর্যায়ে মান্টির শশুর বাড়ির লোকেরা মান্টি ও তার না-বালক সন্তানকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। মান্টির বাবা- মা বাধ্য হয়ে মান্টিকে নিজ বাড়ীতে নিয়ে আসে। এক পর্যায়ে তার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করলে ২০২১ সালে তার সংসার জীবনের ইতি ঘটে।

এরপর মান্টি সেলাই মেশিন পরিচালনার কাজ শেখে। বাবার অভাবী সংসার থেকেই কষ্ট করে একটি সেলাই মেশিন ক্রয় করে পোশাক তৈরির কাজ শুরু করে। সেলাই মেশিনের ক্ষুদ্র আয় থেকে একটি গরু ক্রয় করে। গরু বড় হলে তা বিক্রয় করে একটি ছোট সিট-কাপরের দোকান দেয়। পাশাপাশি মান্টি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে এসএসসি পাশ করে। কারিগরি কলেজ হতে এইচএসসি পাশ করে। স্নাতক ডিগ্রী সম্পন্ন করে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এরপর মান্টি তার যোগত্যা দিয়ে প্রথমত একটি সোলার কোম্পানীতে চাকুরী, দ্বিতীয়ত- বেডো এনজিওতে মাঠকর্মী পদে, তৃতীয়ত-ব্রাক প্রতিষ্ঠানে হেলথ্ স্বাস্থ্য কর্মী পদে চাকুরি করে, চতুর্থ পর্যায়ে- পত্নীতলা উপজেলায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আওতায় ভিজিডি প্রকল্পতে ট্রেনার পদে কাজ করে, পঞ্চম ধাপে 'কিশোর- কিশোরী' প্রকল্পে আবৃতি শিক্ষক পদে চাকুরী করে ও চলমান। ষষ্ঠ ধাপে আদমশুমারি ও গৃহগণনা কাজে নিয়োজিত ও একইসঙ্গে মান্টি বাড়িতেই পার্লারের কাজ করে।

সামাজের কিছু কুসংস্কার মানুষ তাকে বিভিন্নভাবে অপবাদ দেয়। তাকে হেও করা চেষ্টা করে। তবুও সমাজের অন্য মেয়েদের অনুপ্রেরনা হয়ে আছে মান্টি। যা অন্যান্য মেয়েদের সামনে চলার উৎসাহ প্রদান করে। মান্টি বলেন স্বপ্ন দেখব জেগে থেকে। অন্যকেও দেখাতে উৎসাহিত করব এমন স্বপ্নই বাস্তবায়ন করতে চাই।

(৫) সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছে যে নারী ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ জয়িতা সামিমা নাছরিনঃ পত্নীতলা উপজেলার আকবরপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ লক্ষনপুর গ্রামের সামিমা নাছরিন মতিউর রহমান ও নুরজাহান বেগমের দ্বিতীয় সন্তান। যার বাল্যকাল কেটেছে চরম আর্থিক দৈন্যতায়। আর্থিক অবস্থা ভাল না হলেও মায়ের প্রচেষ্টায় নিজেকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করে তুলেন। 

শামীমা শংকরপুর দাখিল মাদ্রাসায় পড়াশোনা শুরু করেন এবং ১৯৯৫ সালে দাখিল পাস করেন। কিন্তু অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও সামাজিক চাপে বাধ্য হয়ে শামীমার মা তার বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরিবারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক একই গ্রামের মামুনুর রশিদের সাথে ২০০৫ সালে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। সংসার জীবনে প্রায় শশুর শাশুড়ির নানা কথা ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়। যৌতুক হিসেবে টাকা-পয়সা দিতে না পারাই স্বাশুড়ির নির্যাতন এবং অনাহার সহ্য করতে হতো যা দেখে প্রতিবেশীরা খাবার এনে দিয়েছেন। 

অভাবের সংসার সাজাতে অর্থের প্রয়োজনে তিনি ব্রাক প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। স্কুলের শিক্ষকতার সময় ননদের নির্যাতনে বাবার বাড়িতে এসে দক্ষিণ লক্ষনপুর গ্রামের গ্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকতা শুরু করেন। এরই মধ্যে সার্বিক সাক্ষরতার আন্দোলন আনসার ভিডিপি গ্রাম উন্নয়ন দলের সভানেত্রী হিসেবে কাজ করতে থাকেন। এর মধ্যে প্রথম সন্তান জন্মগ্রহণ করে। দৈন্যতা দূরীভূত হতে থাকলে স্বামীও শামীমকে গুরুত্ব দিতে থাকেন। এরপর পত্নীতলা উপজেলা আশা ব্যাংক প্রজেক্ট মাঠকর্মী হিসেবে আকবরপুর ইউনিয়নের কার্যক্রম শুরু করেন সামাজিক সমস্যার সমাধানে সহায়তার মধ্য দিয়ে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ মানুষ হিসেবে পরিচিতি হয়ে ওঠেন শামিমা। এছাড়াও বসতবাড়িতে সবজি চাষ, কম্পোস্ট তৈরি জৈব সার প্রস্তুত, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সহায়তা বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্যে জড়িয়ে পড়েন শামীমা।

সামাজিক কাজের অংশগ্রহণ এর সুবাদে বিভিন্ন জায়গা ঘুরে নানা শ্রেণী পেশা মানুষের সাথে মিশা সুযোগ হয়। যখনই তিনি বাড়িতে আসেন গ্রামের মানুষ অভাব অভিযোগ তাকে ব্যতীত করে তোলে। 

২০১৪ সালে গণ গবেষণা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ৩০ জন নারীকে নিয়ে সামিমা গড়ে তোলেন মুষ্টির চাল সমিতি। তিনি এখন এই সমতির সভাপতি এলাকার কেউ অসুস্থ হয়েছে শুনলে নিজে গিয়ে তাকে ডাক্তার দেখান। কিংবা হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। জমি সংক্রান্ত মামলা মোকদ্দমা মীমাংসা, অসহায় পরিবারকে আইন সহায়তা, গ্রামের স্যানিটেশন ব্যবস্থা শততাগ উন্নতি করন, সকল শিশু বিদ্যালয় ভর্তি নিশ্চিত করন, গর্ভবতী ও পুষ্টি মায়ের পরিচর্যা করা, বিচার সালিশে মেয়েদের মতামতের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করার মতো কাজ গুলো তিনি করে থাকেন।২০১৮ সালে ইউনিয়ন পরিষদের গণ গবেষণা ফোরাম নির্বাচিত হলে তিনি সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের নারী নেত্রী হিসেবে ইউনিয়ন কমিটির কেশিয়ার ও জেলা কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। উপজেলা প্রতিবন্ধী কমিটির সদস্যও তিনি। এতাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।

পরিবারের অন্যদের আস্থা অর্জন করে আজ সবার মনের মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন শামীমা। পরিবারের যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে তিনি এখন প্রধান ভূমিকা পালন করেন। মানুষের আত্মশক্তিকে জাগিয়ে দিতে পারে সেই অজয়কে সহজে জয় করতে পারে শামীমা। আর কোন বাধাই তার চলার পথকে রুখতে পারেম না। পরিবর্তনশীন সমাজ সম্পর্কে শামীমার ভাবনা পরিষ্কার। তিনি সবার আগে নিজের মানসিকতা পাল্টিয়েছেন। আর সমাজ পরিবর্তনে ধনী-দরিদ্র কিংবা নারী পুরুষ আলাদা না রেখে সবাইকে মানুষ হিসেবে মূল্য দেওয়া এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠান গুলোকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে পাশাপাশি সমাজের শিক্ষিত ও জন প্রতিনিধিদের দায়িত্ব নিতে হবে বলে তিনি মনে করেন। তাহলেই কেবল সমাজ পরিবর্তন করা সম্ভব।

আরও খবর



সরগরম তানোরের নির্বাচনী মাঠ, এগিয়ে ময়না

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ | ১০০জন দেখেছেন

Image
আব্দুস সবুর তানোর থেকে:তীব্র তাপদহে প্রার্থীদের দিনরাত প্রচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে রাজশাহীর তানোর উপজেলার নির্বাচনী মাঠ। আগামী ৮ মে বুধবার প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত হবে তানোর উপজেলা পরিষদের ভোট গ্রহণ। তবে সকাল ১১ টা থেকে বিকেল তিন টা পর্যন্ত প্রচন্ড তাপদহের কারনে প্রার্থীরা প্রচারণা তেমন ভাবে করছেন না। কিন্তু শেষ বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিরামহীন প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে এলেও ভোটারদের মাঝে নির্বাচন নিয়ে তেমন একটা আগ্রহ নেই বললেই চলে। কারন ভোটে ক্ষমতা সীন দলের একাধিক  নেতারাই প্রার্থী হয়েছেন। বিএনপি ও জামায়াত ভোটে অংশগ্রহণ না করার কারনেই তেমন একটা আমেজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। আবার তীব্র গরম ও বোরো ধান কাটা মাড়ায় চলছে ভরদমে।
জানা গেছে, গত নির্বাচন দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোট করে প্রথমবারের মত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না। তবে এবারের নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহন না করার কারনে ক্ষমতা সীন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক বাদ দিয়ে উন্মুক্ত করে দেন ভোটের মাঠ ।। এরই প্রেক্ষিতে এবারে দলীয় প্রতীক ছাড়াই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন।  আগামী ৮ মে বুধবার অনুষ্ঠিত হবে প্রথম ধাপে তানোর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। এনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ। চেয়ারম্যান পদে দুজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তার মধ্যে বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি  লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না। তিনি কাপ পিরিচ প্রতীকে নিয়ে ভোট করছেন। ময়না বিগত ২০১১ সালে উপজেলার কলমা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপির)  চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে উপজেলা বাসীকে তাক লাগিয়ে দেন। তার সাংগঠনিক দক্ষতা ও জনগণের মাঝে নির্বিঘ্নে সেবা প্রদান করার কারনে ২০১৬ সালে পুনরায় কলমা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপির) নৌকা প্রতীক নিয়ে দ্বিতীয় বারের মত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তবে ২০১৯ সালে তার রাজনৈতিক ও সামাজিক দক্ষতার কারনে দলীয় প্রতীক নৌকা প্রতীক পেয়ে প্রথম বারের মত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। 

দলীয় নেতাকর্মী জানান, লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না আওয়ামী লীগের পরিক্ষিত সৈনিক। বিগত স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে কখনো নৌকার বিরুদ্ধে বা দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন নি। যার কারনে উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ থেকে শুরু করে সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা তার কাপ পিরিচ প্রতীকের পক্ষে ভোটের মাঠে গণজোয়ার সৃষ্টি করেছেন। 

বর্ষিয়ান আওয়ামী লীগ নেতা তালন্দ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, আমি তালন্দ ইউনিয়নের দায়িত্বে আছি। ইউপির প্রায় প্রতিটি পাড়া মহল্লায় গণসংযোগ করেছি। দলমত নির্বিশেষে সবাই কাপ পিরিচ প্রতীকে ভোট দিতে মরিয়া হয়ে আছেন। সবার মাঝে ময়নার আলাদা গ্রহণ যোগ্যতা রয়েছে। আসা করছি ময়নার কাপ পিরিচ প্রতীক বিপুল ভোটে বিজয় লাভ করবে।
সিনিয়র একাধিক নেতারা জানান, তানোরে আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্বের মুলেই আব্দুল্লাহ আল মামুন। সে সাধারণ সম্পাদক থাকা অবস্থায় বিগত ২০০৯ সালে প্রথম উপজেলা ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দল থেকে ওই সময়ের উপজেলা সভাপতি গোলাম রাব্বানী কে চেয়ারম্যান পদে  মনোনায়ন দেয়া হয়। কিন্তু তাকে পরাজিত করতে আব্দুল্লাহ আল মামুন বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে রাব্বানীর পরাজয় নিশ্চিত করেন। এভাবেই মামুন দলে ভাঙ্গন সৃষ্টি করেছেন। এখন পদ পদবি হারিয়ে এবার উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। অথচ মামুন কে তানোরের মাটিতে দেখায় যায় না। যারা গত জাতীয় নির্বাচনে নৌকার বিরোধিতা করেছিলেন তারাও ভুল বুঝতে পেরে ময়নার কাপ পিরিচ কে সমর্থন জানিয়ে ভোটের মাঠে গণজোয়ার সৃষ্টি করেছেন। তাহলে বুঝতে হবে মামুনের গ্রহণ যোগ্য তা কতটুকু। 

কাপ পিরিচ প্রতীকের প্রার্থী লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না বলেন, আমি বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। কারন আওয়ামী লীগ থেকে শুরু করে সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আমার পক্ষে ভোটের মাঠে জোরালো ভূমিকা পালন করছেন। মুলত একারনেই আশা করা যায় বিজয়ের ব্যাপারে। তবে কাউকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে উপজেলার আপামর জনতা কাপ পিরিচ প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে বিজয় করবেন।আব্দুল্লাহ আল মামুন মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তিনিও বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। 

এছাড়াও পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তার মধ্যে একজন সোহেল রানা। তার বাড়ি তানোর পৌরসভার হরিদেবপুর গ্রামে। সে পৌর মেয়র ইমরুল হকের ছোট ভাই। রানা বিগত ২০১৯ সালে চশমা প্রতীক নিয়ে ভোট করে পরাজিত হয়েছিলেন। তিনি এবারের নির্বাচনে তালা প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠে রয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী কলমা ইউপির সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি তানভীর রেজা। তার বাড়ি কলমা ইউপির আজিজপুর গ্রামে। তিনি প্রথম বারের মত চমশা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। 

এদিকে মহিলা  ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তাদের মধ্যে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী মহিলা লীগের সভাপতি সোনিয়া সরদার। সে গত ২০১৯ সালে কলস প্রতীক নিয়ে প্রথমবারের মত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এবারো তিনি কলস প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠে রয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী যুব মহিলা লীগ সভাপতি সাগরী ভৌমিক। তিনি ফ্যান প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠে রয়েছেন। নাসিমা নামের আরেক জন সেলাই মেশিন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। 

আরও খবর