বিনোদন প্রতিবেদক ;গত বৃহস্পতিবার উদ্বোধন হয়েছে ‘কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’র ২৮তম আসর। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতের কিংবদন্তি অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন, বলিউড বাদশা শাহরুখ খান, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো বিখ্যাত মানুষজনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীও। সেই মুহূর্তটি ক্যামেরাবন্দি করে রাখেন এই অভিনেতা।
কেমন ছিল সেই ক্ষণটি জানতে চাইলে ‘মনপুরা’র সোনাই’খ্যাত এই অভিনেতা বলেন, ‘আসলে সেই মুহূর্তের কথাটি কিভাবে মুখে বলা যায়, তা আমার জানা নেই। এটুকু বলি, একজন মানুষের কাছে পছন্দের মানুষের দেখা-কথা হয়ে যেমন অনুভূতি কাজ করে, আমার মধ্যেও সেই অনুভূতি ছিল সেসময়।’
একই মঞ্চে বলিউডের ‘বিগ বি’ অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খানের পাশে বাংলাদেশি অভিনেতা হিসেবে থাকতে পেরে কেমন লেগেছে? উত্তরে চঞ্চল বলেন, ‘এটা তো নিঃসন্দেহে একজন অভিনেতার জীবনে বড় পাওয়া। যাদের কাজ দেখে অনুপ্রাণিত হই, তাদের সঙ্গে দেখা! সত্যি কল্পনার মতো। আমার সিনেমা “হাওয়া”র সুবাদে আমি এখানে (ভারতে) একজন অভিনেতা হয়ে এসেছি। সিনেমার কারণে সম্মানিত হয়েছি, পুরো কৃতিত্ব বাংলাদেশের। এই সম্মান-ভালোবাসা আমার একার নয়, পুরো দেশের।’
অমিতাভ বচ্চন ও শাহরুখ খানের সঙ্গে কী কথা হয়েছে? জানতে চাইলে জনপ্রিয় এই অভিনেতা বলেন, ‘আসলে সেভাবে তাদের সঙ্গে কথার বলার সুযোগ হয়নি। কারণ অনেক প্রটোকল ছিল। অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন। তারপরও কিছু কথা হয়েছে। অমিতাভ বচ্চনকে আমি আমার পরিচয় দিয়েছি। তিনি আমার কথা শুনে বেশ খুশি হয়েছেন। আমি তার সঙ্গে বাংলায় কথা বলেছি, তিনিও বাংলায় উত্তর দিয়েছেন। আর শাহরুখ খানের সঙ্গে নিজের পরিচয় দিয়ে কথা বলার পর তিনিও খুশি হয়েছে। এরপর আমরা সেলফি তুলেছি। তাদের সঙ্গে কথা বলে খুব ভালো লেগেছে, যা আমার সারা জীবন মনে থাকবে।’
বলিউডের বিখ্যাত শিল্পীদের সঙ্গে একই মঞ্চে থাকবেন। সেটা কি জানতেন? উত্তরে তিনি বলেন, ‘না, এটা জানতাম না। “হাওয়া”র সুবাদে আমন্ত্রিত হয়ে এসেছি- এটা জানা ছিল। কিন্তু মঞ্চে ওনাদের সঙ্গে আমিও থাকব, কথা হবে তা জানা ছিল না। আমার বাবা অসুস্থ, তা আয়োজক কমিটির জানা। তারা ধরে নিয়েছিল এই আয়োজনে আমি আসব না। কিন্তু যাওয়ার পর তারাও আমাকে দেখে দারুণ খুশি হয়েছে। এরপর আয়োজন শুরুর পর উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান রাজ চক্রবর্তী আমাকে মঞ্চে ডেকে নিয়ে যায়। গুণী মানুষদের সঙ্গে দাঁড় করিয়ে দেন। এরপর আমাকে বাংলাদেশের অভিনেতা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা হয়, বুম্বাদা (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়) আমাকে তার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আপনি চঞ্চল চৌধুরী, আপনাকে আমি চিনি। আপনার অভিনয় খুব নাম করেছে। আর আপনার "হাওয়া"ও এখানের মানুষদের ভালো লেগেছে।” কথাটি শুনে কি যে আনন্দিত হয়েছি বলে বোঝানো যাবে না। একজন শিল্পীর প্রাপ্তি এটাই।’
কলকাতায় ‘হাওয়া’র জয়ধ্বনি কেমন? উত্তরে চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘এক কথায় আশার চেয়েও অনেক বেশি। নন্দনের ৯০০ আসন কানায় কানায় ভরে গিয়েছিল। প্রতিটি শোতেই দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে।’