নিজস্ব প্রতিবেদক:পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ও বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ জামাতার ১৫ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৯ সালের এই দিনে তিনি মারা যান।
উপমহাদেশের খ্যাতনামা বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার জন্ম ১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রংপুরের পীরগঞ্জের লালদীঘি ফতেহপুর গ্রামে। মুক্তিযুদ্ধের আগে ছাত্রলীগ নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল ছাত্র সংসদের ভিপি হিসেবে আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন তিনি। এ কারণে ১৯৬২ সালে গ্রেপ্তার হন। এর পর থেকে আমৃত্যু মূলত রাজনীতির বাইরেই ছিলেন।
তিনি ছিলেন আণবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান। এ ছাড়া আণবিক শক্তি বিজ্ঞানী সংঘ, পদার্থ বিজ্ঞান সমিতি, বিজ্ঞান উন্নয়ন সমিতি, বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞানজীবী সমিতি, রংপুর জেলা সমিতি, বঙ্গবন্ধু আদর্শ মূল্যায়ন ও গবেষণা সংসদ, জাতীয় সমন্বিত উন্নয়ন ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন প্রতিষ্ঠাসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। বিজ্ঞানে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ স্যার জগদীশচন্দ্র বসু সোসাইটি তাঁকে স্বর্ণপদকে ভূষিত করে।
ওয়াজেদ মিয়া ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনার সঙ্গে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যকাণ্ডের সময় জার্মানিতে ছিলেন। এর পর টানা প্রায় সাত বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে দেশে ফেরেন। কম্পিউটার বিজ্ঞানী সজীব ওয়াজেদ জয় এবং সায়মা ওয়াজেদ পুতুল তাঁর সন্তান।
প্রতি বছরের মতো এবারও যথাযোগ্য মর্যাদায় বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচির মাধ্য দিয়ে পালিত হবে দিনটি। দিনটি উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ রংপুর মহানগর, পীরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন, ড. ওয়াজেদ মিয়ার পরিবার, উপজেলা আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন সংগঠন, ড. ওয়াজেদ স্মৃতি সংসদ ও ড. ওয়াজেদ ফাউন্ডেশন ফাতিহা পাঠ, কবর জিয়ারত, মিলাদ মাহফিল ও গরিবদের মাঝে খাবার বিতরণসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী এ বিজ্ঞানী ২০০৯ সালের ৯মে ইন্তেকাল করেন। তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী। ১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার লালদীঘির ফতেহপুর গ্রামে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার জন্ম। বাবা আবদুল কাদের মিয়া ও মা ময়েজুন্নেসার চার ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ।
ওয়াজেদ মিয়া ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন।
১৯৬২ সালে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি ফজলুল হক হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। ছাত্রলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসাবে ১৯৬১-৬২ শিক্ষা বছরের জন্য হল ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন।
ড. ওয়াজেদ মিয়া অনেক জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানবিষয়ক সম্মেলনে অংশ নেন। তার গবেষণামূলক ও বিজ্ঞানবিষয়ক অনেক প্রবন্ধ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পত্র-পত্রিকায় এবং সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
তাদের এক ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং এক মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। মৃত্যুর পর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ফতেহপুর গ্রামে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।