মজনুর রহমান আকাশ, গাংনী, মেহেরপুর:মেহেরপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ অলোক কুমার দাসকে হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। মেহেরপুর-১ (মুজিবনগর, সদর উপজেলা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক দুই বারের এমপি প্রফেসর আব্দুল মান্নান এ হুমকি প্রদান করেন। যা এক মিনিট দুই সেকেন্ডের একটি অডিও ক্লীপ সামাজিক যোগাযোগ মধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যা নিয়ে সমালোচনা করছেন সাধারণ মানুষ।
অডিও বার্তায় প্রফেসর আব্দুল মান্নান ডাঃ অলোক কুমার দাসকে বলতে শোনা যাচ্ছে, আমি প্রফেসর মান্নান বলছি। তুমিতো ডাঃ অলোক কুমার দাস। বাইরে থেকে মেহেরপুরে এসে ভালোই আছো। খুব আরাম আয়েশে জীবন যাবন করছো। বাড়ি ঘর সবই তৈরি করেছো। টাকা পয়সা অনেক কামায় করেছো। আমি কিন্তু যেমন ভালো লোক তেমন খারাপও। তোমাকে প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন প্রমোশন দেয়নি। সরকার তোমার প্রমোশন দিয়েছে। মন্ত্রীকে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে যদি আর একটা কথা শুনি, আমি এমপি হয় আর না হয়, তোমার মেহেরপুরে বাসা আমি উঠিয়ে দেবো। আর যদি তুমি সাবধান হয়ে যাও তাহলে আমার স্নেহভাজন তোমার উপর থাকবে। এটুকু আমি তোমাকে বললাম্ তুমি পারলে তোমার মন্ত্রীকে বলো। আমি শেখ হাসিনার প্রার্থী, আমি ভারতের প্রার্থী এটি তোমাকে মনে রাখতে হবে। আমি এখানে হারার জন্য আসেনি। সাবধান হয়ে যাও তুমি। আমি তোমার কোন কথা শুনবোনা। আমি যে রিপোর্ট পেয়েছি, আমি খুব অসন্তুষ্ট তোমার প্রতি, তুমি সাবধান হয়ে যাও।
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অলোক কুমার দাশ বলেন, গেল ১৭ ডিসেম্বর প্রফেসর আব্দুল মান্নানের কাছ থেকে আমার ফোনে একটি ফোন আসে। সে ফোনে আমাকে হুমকি দেয়া হয়। তবে এটি সাধারণ বিষয় বলে আমি মনে করি। বিষয়টি আমার ফোনে অটোকল রেকর্ড হয়ে যায়। আমি শন্তিপ্রিয় মানুষ শান্তিতে থাকতে চাই।
এখন এটি সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। এসব নিয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীম হাসান অডিওটি মেহেরপুরের দায়রা জজ আদালতের যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির এই শাখার সভাপতি মোঃ কবির হোসেনকে দিয়েছেন।
প্রফেসর আব্দুল মান্নান বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে কেউ নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিতে পারেননা। অথচ ডাঃ অলোক কুমার দাস সব সময় আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের বাসায় থাকছেন। এ কারণে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি মুঠোফোনে। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য কেউ এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। আমি ভারতের প্রার্থী না এ কথা বললেও না অংশটুকো কেটে দেয়া হয়েছে। আমাকে ভারতের প্রার্থী হিসেবে প্রমাণ করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফরহাদ হোসেন বলেন, প্রফেসর আব্দুল মান্নান যে যেটি করেছেন তা নির্বাচনের আচারণ বিধি লঙ্ঘন। উনি সুশীল সমাজের প্রতিনিধি হয়ে এটি বলতে পারেননা। আর উনি যে প্রধানমন্ত্রী ও ভারতের প্রার্থী হিসেবে দাবি করেছেন তা মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই নয়। আমি বিষয়টি নিয়ে রির্টার্নিং কর্মকর্তা বরাববর একটি লিখিত অভিযোগ প্রদান করবো।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শামীম হাসান বলেন, বিষয়টি জানার পর আমরা নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটিকে জানিয়েছি। পরবর্তীতে তারা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।