নিজস্ব প্রতিবেদক:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেছেন আজকের শিশুরা আগামী উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলার মূল নেতৃত্ব দেবে বলে। রোববার (১৭ মার্চ) দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত জাতীয় শিশু দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের শিশুরা ডিজিটাল যুগের। কাজেই ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। এখন আমাদেরকে ভবিষ্যৎ দেখতে হবে স্মার্ট বাংলাদেশ করার। এ শিশুরাই তো একদিন এই প্রযুক্তির ব্যবহার শিখবে।
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, লেখাপড়া খুবই দরকার কিন্তু লেখাপড়ার নামে তাদের ওপর কোনোরকম চাপ সৃষ্টি করবেন না। আমরাই এখন চাচ্ছি খেলাধুলার মধ্য দিয়েই শিশুরা তাদের লেখাপড়া শিখবে, যাতে তার ভেতরের সুপ্ত মেধাবিকাশের সুযোগ পায়। সেভাবে আমরা কারিকুলাম তৈরি করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। কারণ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ। এখন তো শিশুরা বিশ্বটাকে সামনে দেখতে পায়। ক্লাসে শুধু বই পড়া না চোখে দেখে শিখতে পারে। আর এর পরে তারাই হবে এক স্মার্ট বাংলাদেশের এক স্মার্ট নাগরিক। সেটাই আমরা চাই।
প্রধানমন্ত্রী শিশু শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এই বাংলাদেশটাকে একটা উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়তে চেয়েছিলেন। আজকের শিশুদের কাছে আমার অনুরোধ- গুরুজনদের মানতে হবে, শিক্ষককে মানতে হবে, বাবা-মার কথা শুনে চলতে হবে। বাবা-মার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকতে হবে। তাহলে কেউ বিপথে যেতে পারবে না। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক, দুর্নীতি থেকে দূরে রাখার জন্য ছোটবেলা থেকেই সততার শিক্ষা দিতে হবে। সেই সঙ্গে সঙ্গে গান-বাজনা লেখাপড়া, ধর্মীয় শিক্ষা, ছবি আঁকা থেকে শুরু করে সব ধরনের কারিকুলাম এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে হবে।
তিনি বলেন, আজকে বিশ্বব্যাপী আমরা দেখি অনেকেই শিশু অধিকারের কথা বলে, শিশু শিক্ষার কথা বলে, মানবাধিকারের কথা বলে। কিন্তু আমরা এটিও দেখি যে পাশাপাশি একটি দ্বিমুখী কার্যক্রম। সেই গাজায় শিশুদের ওপর যখন বোমা ফেলা হয়, হত্যা করা হয়, হাসপাতালে বোমা ফেলা হয়, ফিলিস্তিনের ওপর যখন আক্রমণ করা হয়, তখন আমি জানি না এই মানবাধিকার সংস্থাগুলো কোথায় থাকে কোথায়? তাদের সেই মানবিকতাবোধ কোথায় থাকে? সেটাই আমার প্রশ্ন?
সরকারপ্রধান আরও বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না, আমরা শান্তি চাই। কারণ যুদ্ধের সেই ভয়াবহতা আমরা নিজেরাও দেখেছি ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী যেভাবে আমাদের ওপর অত্যাচার করেছে। আমরা সব সময় নির্যাতিত মানুষের পাশে আছি। তাইতো আমার প্রতিবেশী দেশ মায়ানমারে যখন মানুষের ওপর অত্যাচার হলো, শিশুরা আহত অবস্থায় ছিল। তারা যখন আশ্রয় চাইল আমরা মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু আজকে গাজায় শিশুদের যে অবস্থাটা দেখি, নারীদের যে অবস্থাটা দেখি আমি জানি না বিশ্বের বিবেক কেন নাড়া দেয় না। সেটাই আমার প্রশ্ন।