Logo
আজঃ বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
শিরোনাম

সুনামগঞ্জে চোরাই কয়লা নিয়ে সংঘর্ষ অবৈধ মালামালসহ ৬ জন গ্রেফতার

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১১ এপ্রিল ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | ২৩২জন দেখেছেন

Image

মোজাম্মেল আলম সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: ঈদকে সামনে রেখে সুনামগঞ্জে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চোরাকারবারীরা। সীমান্তের চোরাই কয়লার গুহা ও অবৈধ কয়লার ভাগ ভাটোয়ারা নিয়ে সংঘর্ষ হওয়াসহ পুলিশ ও বিজিবি পৃথক অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্য, গরু, ছাগল, মোটর সাইকেল ও নৌকাসহ ৬জনকে গ্রেফতার করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- আজ মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) ভোরে জেলার তাহিরপুর উপজেলার বালিয়াঘাট, টেকেরঘাট ও চারাগাঁও সীমান্ত দিয়ে চোরাকারবারী রফ মিয়া, রিপন মিয়া, শামীম মিয়া, ইয়াবা কালাম, জিয়াউর রহমান জিয়া, রতন মহলদার, কামরুল মিয়া, খোকন মিয়া ও নেকবর মিয়াগং এক যোগে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে কয়লা পাচাঁর শুরু করে। এখবর পেয়ে কলাগাঁও পাথরঘাট এলাকায় বিজিবি অভিযান চালিয়ে রফ মিয়া, রিপন মিয়া, শামীম মিয়া ও নেকবর মিয়ার ২টি ট্রলি বোঝাই ৮মেঃটন অবৈধ চোরাই কয়লা জব্দ করে।

অপরদিকে সকাল ১০টায় টেকেরঘাট সীমান্ত দিয়ে পাচাঁরকৃত চোরাই কয়লা নিয়ে সংঘর্ষে ৫জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় ফারুক মিয়া (৩০) নামের কয়লা শ্রমিককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এঘটনার আগে গত সোমবার (১০ এপ্রিল) রাত ১২টায় টেকেরঘাট চুনাপাথর খনি প্রকল্পের পিছনে অব¯ি’ত ৪টি চোরাই কয়লার গুহা দিয়ে প্রতিদিনের মতো ১৫মেঃটন কয়লা পাচাঁর করে নিলাদ্রীর তীরে অব¯ি’ত ৫টি ডিপুতে নিয়ে মজুত করে চোরাকারবারী আশিক নুর, মোশাহিদ রাজু, ফিরোজ মিয়া, তামিম মিয়া ও লিটন মিয়াগং। পরে পাচাঁরকৃত অবৈধ কয়লা ও চোরাই গুহার মালিকানা নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এছাড়া পৃথক অভিযান চালিয়ে চারাগাঁও সীমান্তে সোর্সদের পাচাঁরকৃত ১টি গরু, ২টি ছাগল, কয়লা ও মদসহ বালিয়াঘাট সীমান্তের পাটলাই নদী থেকে কয়লা বোঝাই ১টি ইঞ্চিনের


নৌকা জব্দ করেছে বিজিবি। কিš‘ চোরাকারবারী ও তাদের গডফাদার হাবিব সারোয়ার (তোতলা আজাদ) কে গ্রেফতার করা হয়না। আর এই সুযোগকে কাজে

লাগিয়ে তারা সীমান্ত পথে কয়লার বস্তার ভিতরে করে মাদকদ্রব্য ও নাসির উদ্দিন বিড়ি পাচাঁর করে উপজেলার বাদাঘাট, কামড়াবন্দ, বড়ছড়া, টেকেরঘাট, চানপুর, কাউকান্দি, বালিয়াঘাট, শ্রীপুর, বালিজুরী, আনোয়ারপুর ও তাহিরপুরসহ বিভিন্ন হাটবাজারে লোক দিয়ে ওপেন বিক্রি করছে। তবে পাশর্^বর্তী বিশ^ম্ভরপুর উপজেলা সীমান্ত দিয়ে পাচাঁরকৃত ১লাখ ২৬হাজার পিস নিষিদ্ধ নাসির বিড়ি বোঝাই ২টি মোটর সাইকেলসহ ওই উপজেলার কুটিপাড়া গ্রামের জসিম উদ্দিন (২০) ও মাহফুজ মিয়া (২১) কে গ্রেফতার করেছে নৌ পুলিশ সদস্যরা। গত রবিবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের টুকেরঘাট এলাকায় তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এঘটনার নৌ পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই ফরিদ আহমদ বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেফতারকৃত ২ চোরাকারবারীর বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায়

মামলা নং- ১৭ দায়ের করেন। এদিকে গত শনিবার (৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টায় ছাতক উপজেলার দক্ষিণ বাগবাড়ি গ্রামে অভিযান চালিয়ে আন্তঃ জেলা মাদক স¤্রাট ও ১৫ মামলা আসামী মামুন মিয়া (৫০) কে তার নিজবাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে দোয়ারাবাজার ও ছাতক থানা পুলিশ। পরে ওই মাদক স¤্রাটের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা নং-৭ দায়ের করা হয়। গত শুক্রবার (৭ এপ্রিল) রাত ১০টায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের আব্দুস ছামাদ (৩৩) কে ১৮পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে গত বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) মধ্যরাতে মধ্যনগর উপজেলার রাঙ্গামাটি গ্রামের সড়কে ইয়াবা বিক্রি করার সময় গোপাল চন্দ্র তালুকদার (৩৫) কে ৭৫ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া গত সোমবার (৩ এপ্রিল) রাত ৮টায় দোয়ারাবাজার উপজেলার খেয়াঘাটের পাশে অভিযান চালিয়ে ভারতীয় ১৯ বস্তা চিনিসহ চোরাকারবারী বরজান মিয়া (৪৩) কে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এব্যাপারে দোয়ারাবাজার থানার ওসি দেব দুলাল ধর ও মধ্যনগর থানার ওসি জাহিদুল হোসেন সাংবাদিকদের জানান- বিশেষ অভিযান চালিয়ে গ্রেফতারকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে থানায় পৃথক মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে সবাইকে কারাঘারে পাঠানো হয়েছে।


আরও খবর



কালিয়াকৈরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অগ্নিকান্ডে দগ্ধ-৩৬, তদন্ত কমিটি গঠন

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৪ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | ৬১জন দেখেছেন

Image

সাগর আহম্মেদ,কালিয়াকৈর ( গাজীপুর) প্রতিনিধি:গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অগ্নিকান্ডে শিশু ও নারীসহ ৩৬ জন দগ্ধের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ওই তদন্ত কমিটির কথা জানান গাজীপুর জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মো. সফিকুল ইসলাম।

এসময়ে জেলা প্রশাসক বলেন, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের আগুনে শিশু, নারীসহ ৩৬ জন দগ্ধ হয়। তাদের মধ্যে ৩৪ জন আছে ঢাকায় আর দুই জন স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছে। ঘটনাটি তদন্ত করতে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবিরকে তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে। অন্য দুই সদস্য হলেন কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদ ও গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরিফিন। কমিটিকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এখানে খুবই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। এখানে যারা থাকেন, তাদের গ্যাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে অভিজ্ঞতা কম। যার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের দিয়ে অগ্নি মহরা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে। এছাড়াও অগ্নিদগ্ধদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে এবং সার্বক্ষণিত তাদের খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে।

সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন কালে তার সঙ্গে আরো উপস্থিত ছিলেন- গাজীপুরের পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদ, কালিয়াকৈর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজমীর হোসেন, কালিয়াকৈর থানার ওসি এ এফ এম নাসিম, মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাইফুল আলমসহ অনেকে।

গাজীপুরের পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম বলেন, এখানে যে ঘটনা ঘটেছে, সেটি খুবই মর্মাহত। এ ধরনের ঘটনা যাতে পূনারাবৃত্তি না হয়, এজন্য জনসচেতনতা প্রয়োজন। আইনের কাঠামো থেকে যারা এর ব্যক্তয় ঘটাবে তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এখানে যারা গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করে তাদের ডিলাশীপ ঠিক আছে কি না? সেগুলি দেখা হবে। এখানে মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে।উল্লেখ্য, গত বুধবার সন্ধ্যা পৌণে ৬টার দিকে কালিয়াকৈর উপজেলার তেলিরচালা এলাকায় ভয়াবহ গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। ওই আগুনে দগ্ধ হন শিশু, নারীসহ ৩৬ জন। এদের মধ্যে গুরুতর পাঁচজন আইসিওতে ভর্তি আছেন।


আরও খবর



আমরা দেশবাসীর প্রত্যাশা অনেকাংশেই পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত:সোমবার ২৫ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | ৪৫জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক:স্বাধীনতার ৫৩তম বার্ষিকীতে আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, আমরা দেশবাসীর প্রত্যাশা অনেকাংশেই পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি,বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন সরকারপ্রধান। যা বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন টিভি চ্যানেল, রেডিও স্টেশন এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে একযোগে সম্প্রচার করা হয়।

তার ১৭ মিনিটের কিছু বেশি সময়ের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১৫ বছরে তার সরকার কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিল্প, দারিদ্র্য বিমোচন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাসসহ দেশের আর্থ-সামাজিক খাতে অভূতপূর্ব এবং দৃশ্যমান উন্নয়ন করে বাংলাদেশকে ‘উদীয়মান অর্থনীতির দেশে’ রূপান্তরিত করেছে।

‘সুতরাং, এক সময়ের দারিদ্র্য-জ্বরাক্লিষ্ট বাংলাদেশ আজ সক্ষম উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে,’ বলেন তিনি।

‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশ এখন বিশ্ব মঞ্চে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে,’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০২১ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার সকল শর্ত পূরণ করেছে। আশা করা হচ্ছে ২০২৬ সাল নাগাদ বাংলাদেশ স্থায়ীভাবে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে সামিল হবে।

তিনি বলেন, “আজকে ২০২৪ সালে স্বাধীনতার ৫৩তম বার্ষিকীতে আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, আমরা দেশবাসীর প্রত্যাশা অনেকাংশেই পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি। এটা কোনো অসার বাগাড়ম্বর দাবি নয়। বাংলাদেশ আজ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল বিশ্বে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমরা প্রমাণ করেছি রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে সীমিত সম্পদ দিয়েও একটি দেশকে এগিয়ে নেওয়া যায়।

‘১৯৯৬ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ একুশ বছরের ইতিহাস এ দেশের মানুষের নিপীড়ন আর বঞ্চনার ইতিহাস,’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ সময় লুটপাট, দুর্নীতি, ইতিহাস বিকৃতি, মৌলবাদ এবং জঙ্গিবাদ সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল চেতনাকে ধূলিস্যাৎ করে বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর এবং পশ্চাৎপদ দেশের তকমা পরিয়ে দেওয়া হয়। নিদারুণ দারিদ্র্য, ক্ষুধা, অকাল মৃত্যু এবং শিক্ষা, বাসস্থান, চিকিৎসার অভাব ছিল এ দেশের মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী। তথাপি ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে জনবান্ধব নীতি গ্রহণ করা শুরু করে এবং সর্বপ্রথম সাধারণ মানুষ বুঝতে পারেন তাদেরও সরকারি সেবা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।

তিনি জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে বিগত ১৫ বছরের কিছু অধিক সময়ের দেশপরিচালনাকালে প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ, মহামারি, যুদ্ধ, আন্তর্জাতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং সর্বোপরি দেশি-বিদেশি শক্তির নানা ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করতে হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে শুধু আমাদের দেশের নয়, গোটা বিশ্বের অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছিল। সে ধকল কাটতে না কাটতেই ২০২২ সালের গোড়ার দিকে শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এই যুদ্ধকে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিক অবরোধ-পাল্টা অবরোধ আরোপের ফলে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো চরম সংকটের মুখে পড়েছে। নিত্যপণ্যের উৎপাদন ও বিপণন যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি এসব পণ্যের স্বাভাবিক চলাচলও বাধাগ্রস্ত হওয়ায় পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এরসঙ্গে গত বছরের শেষে যুক্ত হয়েছে গাজায় ফিলিস্তিনের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর গণহত্যা।

২০১৩-১৪ সময়ে এবং ২০১৬ সালে বিএনপি-জামায়াতের দেশব্যাপী হরতাল-অবরোধ, অগ্নি-সন্ত্রাস, অগণিত মানুষ হত্যার মতো নৃশংসতাকে মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ আখ্যায়িত করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি এবং তার মিত্ররা এবারও হরতাল-অবরোধ, অগ্নিসংযোগের মতো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সূচনা করেছিল। কিন্তু জনগণের প্রতিরোধের মুখে এবার তারা পিছু হটতে বাধ্য হতে হয়। তবুও তাদের হাতে বেশ কয়েকজন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারান এবং কয়েক শ কোটি টাকার সম্পদ বিনষ্ট হয়।

টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করেও দেশকে আর্থ-সামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের পথে এগিয়ে নেওয়ায় তার সরকারের সাফল্যের খণ্ডচিত্র ও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, দারিদ্র্যের হার ২০০৬ সালের ৪১.৫ শতাংশ হতে হ্রাস পেয়ে এখন দাঁড়িয়েছে ১৮.৭ শতাংশে এবং হতদরিদ্রের হার ২৫.১ হতে ৫.৬ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে। আজ খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ং-সম্পূর্ণ। বর্তমানে দানাদার খাদ্যশস্য উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪ কোটি ৯৩ লাখ মেট্রিক টন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতু, ঢাকায় মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু ট্যানেল, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল, বিভাগীয় শহরগুলোর সঙ্গে চার বা তারও বেশি লেনের মহাসড়ক চালু, ইত্যাদি অবকাঠামো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করেছে। দেশের শতভাগ এলাকা বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে।

চলমান রমজানে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাবে মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সাধারণ জনগণের কল্যাণে তার সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, রমজান মাসের শুরু হতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জন্য রাজধানী ঢাকার অন্তত ২৫টি স্থানে ট্রাকে করে মাছ, মাংস, ডিম এবং দুধ সুলভমূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, টিসিবি প্রথম পর্যায়ে সারাদেশের ১ কোটি কার্ডধারী পরিবারের জন্য সুলভমূল্যে চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, চিনি এবং ছোলা - এই ৫টি পণ্য বিতরণ করেছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ঢাকা ও আশেপাশের এলাকার কার্ডধারী পরিবারের জন্য চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, চিনি, ছোলা ও খেজুর - এই ৬টি পণ্য বিতরণ করছে। ঈদ উপলক্ষে সারাদেশের ১ কোটি ৬২ হাজার ৮০০ পরিবারের জন্য সরকার এক লাখ ৬২৮ মেট্রিক টন চালের বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছে। প্রতি পরিবার বিনামূল্যে ১০ কেজি করে চাল পাবেন।

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি এ সম্পর্কে আরও বলেন, আমরা এ বছর সরকারিভাবে এবং দলগতভাবে ইফতার পার্টির আয়োজন নিরুৎসাহিত করেছি। আওয়ামী লীগ এবং এর সকল সহযোগী সংগঠন নির্দেশমত তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত গরিব-দুঃস্থদের মধ্যে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করছে।

রমজান মাসের শুরুতে খেজুর, আমদানি করা ফল, লেবু, তরমুজ, পেঁয়াজসহ কয়েকটি পণ্যের দাম কিছুটা চড়া ছিল। তবে এসব পণ্যের দাম কয়েকদিনের মধ্যেই স্বাভাবিক ও সহনীয় পর্যায়ে নেমে এসেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

“জিনিসপত্রের দাম বাড়লে সাধারণ মানুষের, বিশেষ করে সীমিত আয়ের মানুষের কষ্ট হয়। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি মানুষের কষ্ট লাঘবের,” যোগ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী পরাজিত শক্তির ষড়যন্ত্র সম্পর্কে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহবান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও পঁচাত্তরের ঘাতক এবং তাদের দোসররা এখনও তৎপর রয়েছে পরাজয়ের বদলা নিতে। সুযোগ পেলেই তারা আঘাত হানবে। তাদের সামনে একমাত্র বাধা আওয়ামী লীগ। হাজারও শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণতন্ত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কখনই ভুলুণ্ঠিত হতে দেবে না। আওয়ামী লীগকে ছলে-বলে-কৌশলে নিচিহ্ন বা দুর্বল করতে পারলেই পরাজিত শক্তির উত্থান অনিবার্য। কাজেই কাণ্ডারি হুঁশিয়ার।

তিনি বলেন, বাঙালি বীরের জাতি। যুদ্ধ করে আমরা এদেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি। সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয় - জাতির পিতা নির্দেশিত এই বৈদেশিক নীতি অনুসরণ করেই আমরা দেশ পরিচালনা করি। আমাদের কোন প্রভু নেই, আছে বন্ধু। তাই কারও রক্তচক্ষু বাঙালি জাতি কোনদিন মেনে নেবে না। প্রয়োজন হলে বুকের রক্ত দিয়ে বাঙালি জাতি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-সম্মান রক্ষা করবে।

দেশবাসীর উদ্দেশ্যে জাতির পিতার কন্যা বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের উপর আবারও আস্থা রাখার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার সব সময়ই সংবিধানকে সমুন্নত রেখে রাষ্ট্র পরিচালনা করে আসছে এবং জাতীয় সংসদকে রাষ্ট্রের সকল কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে।

তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য দেশের যে উন্নয়ন সাধন করেছি তা থেকে থেকে দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে গিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। যে বাংলাদেশ হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্য-মুক্ত অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ।


আরও খবর



নিটারে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৬ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | ৯২জন দেখেছেন

Image

মিঠুন দাস মিঠু, ক্যাম্পাস প্রতিনিধি, নিটার:সাভারের জাতীয় বস্ত্র প্রকৌশল ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-নিটার এ ২৫শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ রোজ সোমবার দুপুর ২ ঘটিকায় নিটারের কনফারেন্স রুমে ৫৪ তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

আয়োজিত এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ড. মোহাম্মদ জুনাইবুর রশীদ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ডিপার্টমেন্ট অফ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ইঞ্জিনিয়ার নুরুন্নবী, ডিপার্টমেন্ট অফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোডাকশন এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এর অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর মোহাম্মদ ফাতেহ আলী খান পান্নী, ডিপার্টমেন্ট অফ কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এর অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ইন্দ্রজিৎ কুমার পাল, ডিপার্টমেন্ট অফ টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং এর লেকচারার তানজিনা রিফাত টুম্পা সহ বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের সম্মানিত বিভাগীয় প্রধান, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ও লেকচারার গন। নিটারের বিভিন্ন ব্যাচের শতাধিক শিক্ষার্থী ও নিটারের কর্মচারীদের উপস্থিতিতে  নিটার কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম সাহেবের কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা সভাটির সূচনা হয়।

প্রতিষ্ঠানটির ডিপার্টমেন্ট অফ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার ডিপার্টমেন্টের লেকচারার তানজিনা রিফাত টুম্পার সঞ্চালনায় আলোচনা সভার সূচনালগ্নে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি ওয়ার্ল্ড এর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করে দেখানো হয় যেখানে কিনা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ২৫শে মার্চে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মমতার নির্মম ইতিহাস ও গনহত্যা পরবর্তী ঢাকার থমথমে চিত্র ফুটে উঠে। পরবর্তীতে ২৫শে মার্চের ভয়াল কালরাত্রিতে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর নির্মমতার শিকার তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট শহীদ জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা এর উপর চালানো পৈশাচিক নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করে দেখানো হয়।

আলোচকদের মধ্যে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর জনাব ইঞ্জিনিয়ার নুরুন্নবী বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে একাওরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে শহীদ হওয়া সকলের আত্নার মাগফিরাত কামনা করে বক্তব্য শুরু করেন, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে একাওরের ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করার আগ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে সংগঠিত বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরেন।  ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষনের তাৎপর্য তুলে ধরার পাশাপাশি ২৫শে মার্চের ভয়াল কালরাত্রির কথা স্মৃতিচারণ করেন। অতঃপর অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর জনাব মোহাম্মদ ফাতেহ আলী খান পান্নি ওনার বক্তব্যে বিভিন্ন জাতীয় দিবসগুলো শুধু উদযাপনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সেগুলোকে নিজেদের মধ্যে লালন করে বাস্তব জীবনে প্রতিফলন ঘটানোর গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথি প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক জনাব ড. মোহাম্মদ জুনাইবুর রশীদ উপস্থিত  সকলকে সালাম ও মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে তার বক্তব্য শুরু করেন, বক্তব্যে তুলে ধরেন মোট জনসংখ্যার মধ্যে  পূর্ব পাকিস্তানের জনসংখ্যা বেশি থাকা সত্বেও পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য অধিকাংশ বাজেট বরাদ্দ দিয়ে বৈষম্য সৃষ্টির কথা, সেনাবাহিনীর উচ্চপদগুলোতে নিয়োগে বৈষম্য,  ১৯৭০ সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় লাভ করা সত্বেও ক্ষমতা হস্তান্তর না করা, ১৯৭১ সালের ২রা মার্চ কলা ভবনে পতাকা উওোলন ও ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষনের তাৎপর্য তুলে ধরেন। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা লগ্ন থেকে বিজয় অর্জন করা পর্যন্ত বাঙালির আত্নত্যাগের সকল ঘটনাবলী ধাপে ধাপে তুলে ধরেন উপস্থিত শ্রোতাদের নিকট।

সর্বশেষে, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর জনাব ইন্দ্রজিৎ কুমার পাল তার সমাপনী বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু কর্ণারে এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধ কোষ (১০ খন্ড) বইটি রাখার জন্য অনুরোধ জানান। এভাবেই, স্বাধীন সর্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় আত্নত্যাগকারী সকল বীর শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনার মধ্য দিয়ে আলোচনা সভাটির সমাপ্তি হয়।


আরও খবর

বজ্রসহ বৃষ্টি দেশের ৭ বিভাগেই হবে

বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪




মেডিকেলের পিস্তল তান্ডবে অধ্যক্ষের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত:বুধবার ০৬ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | ৮৫জন দেখেছেন

Image
সিরাজগঞ্জ থেকে:সিরাজগঞ্জ শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষক ডা. রায়হান শরিফের বিরুদ্ধে শ্রেণিকক্ষে পিস্তল, টেবিলে ছুরি, শিক্ষার্থীদের ফেল করিয়ে দেবার ভয়, ক্যাম্পাস প্রাঙ্গনে শিক্ষকের মাদকসেবন, ছাত্রীদের ফোনে কুপ্রস্তাবসহ এমন ডজন খানেক হয়রানির অভিযোগ এনে কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানালেও পদক্ষেপ না নেয়ার অভিযোগ উঠছে। 
গতকাল মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকালে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন চলাকালে এসব অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। 

শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষক রায়হান শরীফ ক্লাসে গল্প-গুজব করেই তিন ঘণ্টা পার করে দিতেন। কখনো কখনো পিস্তলের ভয় দেখিয়ে জোর করে বিভিন্ন কাজ করে নিতেন। কথা না শুনলে নম্বর কম দেবেন বলে হুমকি দিতেন। অনেক শিক্ষার্থীকে ফেল করানোর ভয়ভীতি দেখাতেন। শ্রেনিকক্ষে টেবিলে পিস্তল-ছুরি রেখে ক্লাস নিতেন। কখনো কখনো গুলি না ঢুকিয়ে তাদের দিকে পিস্তলের ট্রিগার টানতেন।এছাড়া তিনি কু-প্রস্তাব ও মেসেজ দিতেন। মেয়েদের সব সময় হয়রানি করতেন। এসব লজ্জার বিষয় কি সব জায়গায় বলা যায়। তারপরও কলেজ কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে জানানো হলেও চুপ ছিলেন অধ্যক্ষ। তিনি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেননি। এ কারণে তিনি বহাল তবিয়তে চাকরি করে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ আমিরুল হোসেন চৌধুরী  বলেন, কী কারণে এ ঘটনা ঘটল তা বলতে পারব না। শিক্ষার্থীরা লিখিতভাবে আমাকে কিছুই জানায়নি। পিস্তলের লাইসেন্স আছে কি না এ বিষয়ে রায়হান শরীফকে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি জানান, তার পিস্তলের লাইসেন্স আছে। এখন জানতে পেরেছি পিস্তলের লাইসেন্স নেই। তিনি বলেন, শ্রেণিকক্ষে পিস্তল নিয়ে ঢোকার বিষয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে নিষেধ করেছি। কিন্তু তিনি কোনো কথা শোনেননি। পরে তাকে প্রথমবার শোকজ করা হয়েছে। এরপর তাকে দ্বিতীয়বার শোকজ করা হলেও তিনি এ বিষয়ে কোনো কর্ণপাত করেননি। অবশেষে আমরা প্রক্রিয়ার মধ্যে ছিলাম তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার। এর মধ্যেই এ ঘটনা ঘটে গেল। 

ডা. রায়হান শরীফের এসব আচরণ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল কি না জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।এদিকে তদন্ত কমিটির প্রধান ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. বায়জিদ খুরশীদ রিয়াজ বলেন, রায়হান শরীফের আচরণ সর্ম্পকে মেডিকেল কলেজ থেকে লিখিত ও মৌখিকভাবে কোনো অভিযোগ পাইনি বা আমাদেরও দেওয়া হয়নি। শিক্ষার্থীকে গুলি করার বিষয়ে আমরা তদন্ত শুরু করেছি, সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে। আপাতত গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমাল ভালো আছে, তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমরা তদন্ত করছি, তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। তদন্তে ওই ডাক্তার দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও খবর

বজ্রসহ বৃষ্টি দেশের ৭ বিভাগেই হবে

বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪




বাকেরগঞ্জে চাঁদার দাবিতে ৪ তরমুজ চাষীকে কুপিয়ে জখম, আটক-৩

প্রকাশিত:সোমবার ০৪ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | ১১২জন দেখেছেন

Image
বাকেরগঞ্জ (বরিশাল) প্রতিনিধি:বরিশালের বাকেরগঞ্জে চাঁদার দাবিতে ৪ তরমুজ চাষীকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। আহতরা হলেন বাহাদুর হাওলাদার (৩৬), বাবু হাওলাদার (৩০), কবির হাওলদার (৩৫) ও পনির হাওলাদার (৩০)। আহতদের মধ্যে বাহাদুর হাওলাদার ও বাবুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ভরপাশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী মিজানুর রহমান লিটনসহ  ৩জনকে আটক করেছে।

সোমবার (৪মার্চ) সকাল ১০ টায় উপজেলার ভরপাশা ইউনিয়নের কামারখালী বাজারে এ ঘটনা ঘটেছে। আহতের ভাই মিলন হাওলাদার বাদি হয়ে ১৪-১৫ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অপরদিকে ঘটনার পরপর বেলা ১ টায় তরমুজ চাষিরা অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মহির হাওলাদার। থানায় জমা দেয়া অভিযোগ পত্র ও সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানা যায়, উপজেলার ভারপাশা ইউনিয়নের দুধলমৌ গ্রামের মৃত সোহরাব হাওলাদারের পুত্র মোঃ মিলন হাওলাদারের দুই ভাই বাহাদুর হাওলাদার ও রিয়াজ হাওলাদার বরিশাল শেখ হাসিনা ক্যান্টনমেন্টের আওতাধীন চরের ৬০-৬৫ একর জমি লিজ নিয়ে গলাচিপা উপজেলার ২৫-৩০ জন কৃষকের সহযোগিতায় তরমুজ চাষ করেছেন। তরমুজ চাষ করা শুরু থেকেই একই গ্রামের শাজাহান গাজীর পুত্র রুদ্র গাজী ও মৃত গাজী আলাউদ্দিনের পুত্র মিজানুর রহমান লিটন গাজী বিভিন্ন সময় তাদের নিকট নগদ ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাষকৃত জমিতে ঠিকঠাক তরমুজ চাষ করার উদ্দেশ্যে কৃষকরা বিবাদীদেরকে বিভিন্ন সময় নগদ ১ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। তা সত্বেও তারা ১ লক্ষ টাকা চাঁদার দাবিতে তরমুজ খেতে গিয়া আধা পাকা তরমুজ নষ্ট করে কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন করেন। সোমবার সকাল ১০ টায় তরমুজ চাষী মোঃ মিলন হাওলাদারের ভাই বাহাদুর হাওলাদার নিজ বাড়ি দুধলমৌ কাউন্টারে যাওয়ার পথে কামারখালী বাজারের মুদি ও স্টেশনারী দোকানের সামনে পৌঁছালে রুদ্র গাজী, মিজানুর রহমান লিটন গাজী, গাজী তোফায়েল হোসেন জামাল, গাজী সাদ, রঞ্জু গাজী, মঞ্জু গাজী, মোঃ নেওয়াজ শরীফ, শাহজাহান গাজী, শুভ ও মোঃ জাকিরসহ অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জন পরিকল্পিতভাবে দা, ছেনা, লোহার রড ও লাঠিসোটা নিয়ে তার পথরোধ করে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কোপ দিলে পেটে ও মাথায় গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। এ সময় তাকে বাঁচাতে গেলে বাবু হাওলাদার ও পনির হাওলাদারকেও কুপিয়ে আহত করে। হামলাকারীরা এসময় নগদ ৯০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। 

সংবাদ সম্মেলনে চাষী মহির হাওলাার ও কামাল জানান, প্রতি বছর তারা তরমুজ চাষ করতে এসে এলাকায় চাঁদাবাজি ও হয়রানীর শিকার হন। চাঁদাবাজরা তাদের হুমকি দিয়েছে অতিশীঘ্র চাঁদা দাবির ১ লক্ষ টাকা না দিলে চাঁদাবাজরা তাদেরসহ তরমুজ চাষী বাহাদুর হাওলাদারকে খুন করিবে, তরমুজ নিয়া যাইবে ও মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে ঢুকাইবে বলে হুমকি দেয়। এ ঘটনায় তারা ঊর্ধ্বতন পুলিশ প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

আরও খবর