
সোহরাওয়ার্দীঃ
শরীয়তপুর জেলাপ্রশাসকের কার্যালয়ে এল.এ শাখার পাশের একটি রুমে জোড় করে ধরে নিয়ে গিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সার্ভেয়ার মোশারফ হোসেনের কাছ থেকে ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পের ব্ল্যাঙ্ক পেজে এবং চেকের পাতায় স্বাক্ষর করে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।গত ৯ মে ২০২২ সোমবার শরীয়তপুরের কিছু দালাল চক্র ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সার্ভেয়ার মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে মামলা ও সাধারন ডায়রী করেছেন। দালল চক্রের সদস্য সন্ত্রাসী শাকিল মুন্সী,মোঃ বাহাদুর,মোঃ আতিক,মোঃ খলিল,খোকন বাঙ্গী,তাইজুল,দাদন ঢালী,মোঃ হারুন সহ ১৫/২০ জনের নাম সাধারন ডায়েরীতে উল্লেখ করা হয়েছে।
জানাগেছে সার্ভেয়ার মোশারফ হোসেন গত ১২ জুলাই ২০২১ সালে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এল.এ শাখায় সার্ভেয়ার হিসেবে যোগদান করেন।
তিনি জানান,"আমার যোগদানের কিছু দিনের মধ্যেই দেখতে পাই দালাল চক্রটি সহকর্মী বাদলের কাছে বিভিন্ন প্রকল্পে সরকারের অধিগ্রহনকৃত জমির অবকাঠামো বিল/ক্ষতিপুরনেরটাকা উত্তোলনের জন্য তদবীর করতে যাওয়া আসা করছে,সার্ভেয়ার বাদল ঐসব দালালদের সাথে হাত মিলিয়ে কমিশন নেয়ার বিনিময়ে চুক্তি করে নিয়ম বহিঃর্ভুতভাবে বিল দেয়া শুরুকরে।
তার এসব অপকর্মের সাথে আমি নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছিলাম না,বাদলের এহেন অপকর্মের কারনে সরকারী টাকা গচ্চা দিয়ে দালালদের মোটা অংকের টাকা পাইয়ে দিতে সাহায্য করে এবং এল.এ শাখার কতিপয় কর্মকর্তা/কর্মচারীরা কমিশন বাবদ কোটি কোটি টাকা নিজেদের পকেটস্থ করে।
আমাকে এই অনিয়মের সাথে সম্পৃক্ত করতে সার্ভেয়ার বাদল,কানুনগো এবং এডিসি মিলে বিলে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে।আমি তাদের অন্যায় প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় তারা আমাকে চাকরীচ্যুত করা সহ নানা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অনিয়ম ও দুর্নীতিগ্রস্ত ফাইলগুলোতে স্বাক্ষর করতেবাধ্য করে।আমিহলফ করেবলতে পারি চাকুরী জীবনেকোনদিন আমি কাউকে ঘুষ দেইনি এবং নিজেও কোন দিন ঘুষ নেইনি।সব সময় অনিয়ম দুর্নীতি এড়িয়ে চলেছি।
তারা আমাকে ষড়যন্ত্রমুলক ভাবে গত ২৮ এপ্রিল ২০২২ তারিখে গাজীপুর জেলায় বদলী করায়।গত ৮ মে শরীয়তপুর জেলার এ.ডি.সি রাজস্ব আসমাউল হুসনা লিজা মোবাইলে ফোন করে আমাকে একটিবিলের বিষয়ে জরুরী কথা আছে বলে তার সাথে দেখা করতে বলেন।আমি সরল বিশ্বাসে পরদিন ৯ মে সোমবার তার সাথে দেখা করতে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাই।
তার সাথে দেখা করেরুম থেকে বেড় হওয়া মাত্র সন্ত্রাসীরা আমাকে ধরে জোড়পুর্বক এল.এ শাখার একটি রুমে আটক করে মারধোর করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ননজুডিশিয়াল স্ট্যম্পের ব্ল্যাঙ্ক পেইজে এবং চেক বইয়ের পাতায় স্বাক্ষর করিয়ে নেয়।এসময় সন্ত্রাসীদের সাথে সার্ভেয়ার বাদল উপস্থিত ছিলেন।
পরবর্তীতে আমি সেখান থেকে বেড়িয়ে এসে আইনজীবিদের সাথে শলা-পরামর্শ করে বিষয়টি আইনেরআশ্রয় নিতে সন্ত্রাসী ওপ্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে থানায় সাধারন ডায়রী করেছি।পরবর্তীতে এ বিষয়ে আমি আদালতে মামলা করার প্রস্ততি গ্রহন করি।"
ভুক্তভোগী সার্ভেয়ার মোশারফ হোসেনকে ৮ মে তারিখে অবমুক্ত করে জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান পত্রে স্বাক্ষর করলেও বর্ণিত আসমাউল হুসনা লিজা উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে উক্ত অবমুক্তির কাগজ গায়েব করে ৯ মে তার নিজস্ব দালালদের দ্বারা সৃষ্ট চেক ও স্ট্যাম্পের বিষয়ে উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসানকে ভুল বুঝিয়ে ১০ মে পত্র লিখে, যে পত্রের বর্ণনার সাথে বাস্তবতা এবং সরকারী চাকুরী বিধি-বিধানের কোন সম্পর্ক নেই। কেবলমাত্র অধিনস্থ একজন কর্মচারীর কে দিয়ে এ.ডি.সি তার অসৎ উদ্দ্যেশ্য চরিতার্থ করতেনা পেরে এমন কাজ করেছেন।ম্যাজিকের মতো ৮ মের অবমুক্তির কাগজ ১০ মে হয়ে যায়।তদন্ত সাপেক্ষে বিষয়টির সুষ্ঠ বিচার প্রার্থনা করেছেন ভুক্তভোগী সার্ভেয়ার মোশারফ হোসেন।
উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত সার্ভেয়ার বাদলের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলে ও সে ফোন রিসিভ করেনি।