Logo
আজঃ শনিবার ১৮ মে ২০২৪
শিরোনাম

সোনালী শীষেই দুলছে তানোরের কৃষকের স্বপ্ন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩১ অক্টোবর ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ১৮ মে ২০২৪ | ৩১৪জন দেখেছেন

Image

আব্দুস সবুর তানোর প্রতিনিধি:দিগন্ত মাঠ জুড়ে সোনালী শীষ হাওয়ায় দুলছে, সেই শীষে রয়েছে হাজারো কৃষকের স্বপ্ন। রাজশাহীর তানোর উপজেলা জুড়ে রোপা আমন ধানে পাক ধরেছে। এক সপ্তাহের আগেই কৃষকের রক্ত ঘামের রোপা আমন ধান কাটা শুরু হবে। উপজেলার আনাচে কানাচে রোপা আমনের চাষ হয়ে থাকে। ধান কাটা শুরু হবে এজন্য কৃষানীরা বাড়ির খৈলান পরিস্কার করা শুরু করেছেন। কারন রোপা আমনের ফলন সারা বছরের খরচের জোগান দাতা। প্রতিটি মাঠে ধানের পাতা লাল ও শীষে সোনালী কালার ধারন করেছে। সব মাঠেই কমবেশি একসাথে কাটা শুরু হবে বলে মনে করছেন কৃষকরা।তালন্দ এলাকার তরুন কৃষক মিলন মৃধা এবার ৩৫ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ধানের শীষে পাক ধরেছে। ৩৫ বিঘায় সুবন স্বর্না জাতের ধান লাগিয়েছেন। ১২/১৪ দিনের মধ্যে কাটা শুরু হবে। অন্য বারের তুলনায় এবার খরচ হয়েছে দ্বিগুন টাকা।

নারায়নপুর গ্রামের কৃষক মইফুল বলেন এবারে ২০ বিঘা জমিতে রোপা আমনের চাষ করেছি। সব ধানে পাক ধরেছে। ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যে কাটা শুরু হবে।
মালার মোড়ের হোটেল ব্যবসায়ী আইয়ুব জানান, ৫ বিঘা জমিতে ধান রয়েছে। তেমন রোগবালা নাই। তবে রোপনের পরে সময় মত বৃষ্টির পানি হয়নি। রোপন ও তার পরে তীব্র খরতাপ থাকলেও পরে থেকে আবহাওয়া অনুকুলে রয়েছে। কমবেশি সবার ধান এক সাথে কাটা পড়বে। 
সরেজমিনে, উপজেলার চান্দুড়িয়া, রাতৈল, জুড়ানপুর, গাগরন্দ, সরনজাই, কাজিপাড়া, সরকারপাড়া, মন্ডলপাড়া, ভাগনা, সিধাইড়, মানিক কন্যা, শুকদেবপুর, আমশো, জিওল, চাদপুর, বুরুজ, ভদ্রখন্ড, কাশিমবাজার, কালিগঞ্জ, মোহর, আকচা, দেবিপুর, লাললুর,বিনোদপুর, বিলশহর, নারায়নপুর, কালনা, পাক চাদপুর, ইলামদহী, দুবইল, সাহাপুর, যোগিশো, কৃঞ্চপুর, কচুয়া, মোহাম্মাদপুর, পাচন্দর, চুনিয়াপাড়া, চিমনা, যশপুর, মুন্ডুমালা, বাধাইড়, জুমারপাড়া, তানোর পাড়া, আড়াদিঘি, সিন্দুকাই, গোল্লাপাড়া, গুবিপাড়া, ধানতৈড়, চাপড়া, তালন্দ, সুমাসপুর, হরিপুর, কুযিশহর, আজিজপুর, চন্দনকোঠা, দরগাডাংগা, কলমা, বিল্লি, চৌরখৈর, নড়িয়াল, হরিপুর, ছাঐড়, হাতিশাইল, হাতিনান্দা, কামারগাঁ, বাতাসপুর, মাদারিপুর, পারিশো দূর্গাপুর, ধানুরা, মালশিরাসহ উপজেলা প্রতিটি মাঠে ধানের শীষে সোনালী কালার হয়ে আছে।
কৃষকরা জানান,  রোপা আমন রোপনের পর এক দেড় মাস চরম প্রতিকুল আবহাওয়ার মধ্যে পড়ে। প্রচন্ড খরার কারনে ব্যাপক আগাছা হয়েছিল। বিঘায় নিম্মে ৪ হাজার উর্ধ্বে ৬ হাজার টাকা করে খরচ হয়েছে। এটা শুধু খরার কারনে। আবার সার কীটনাশকের দামও বাড়তি। রোপন থেকে উত্তোলন পর্যন্ত প্রকার ভেদে ১৪ হাজার থেকে ১৭/১৮ হাজার টাকা খরচ হবে। বর্তমান বাজার অনুযায়ী ২০ মন ফলন হলে খরচের টাকা উঠবে। তবে খড়টা লাভ।
কৃষি শ্রমিক মোস্তফা জানান, প্রায় এক মাস ধরে কোন কাজ নেই। ৭/৮ দিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু হবে। ধান কাটা শুরুও হবে আবার দ্রুত শেষও হবে। কারন এধান জমি থেকে তুলামাত্রই আলু রোপনের জন্য জমি চাষ শুরু হবে।তানোর পৌরসভার বিএস এমদাদ, তালন্দ ইউপির বিএস শৈয়ব ও মাদারিপুর এলাকার বিএস আকবর আলী জানান, এবারো ধানের বাম্পার ফলন হবে। কারন সার্বক্ষণিক কৃষকদের মাঝে থেকে পরামর্শ মাঠ দিবস করে সচেতন করা হয়েছে ব্যাপক ভাবে। এজন্য রোগবালা নাই।উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন,   চলতি মাসের শুরুতে ভারি বর্ষনের কারনে নিচু এলাকার রোপা আমন ধান কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। এবারে উপজেলায় রোপা আমন চাষ হয়েছে ২১ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে। যেখানেই সমস্যার কথা শোনা হয়েছে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিকার করা হয়েছে। যার কারনে রোগবালা নেই। আশা করছি রেকর্ড পরিমাণ ফলন হবে।


আরও খবর



নাসিরনগরে কৃষকলীগের প্রতিষ্টা বার্ষিকি উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্টিত

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৮ মে ২০২৪ | ২০০জন দেখেছেন

Image

আব্দুল হান্নান, নাসিরনগর,ব্রাহ্মণবাড়িয়াঃ১৯ এপ্রিল ২০২৪ রোজ শুক্রবার বেলা এগারো ঘটিকার সময় বাংলাদেশ কৃষকলীগ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা শাখার উদ্যোগে এন আর ভবনে এক দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়।

উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি হাজী অলি মিয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এস এম নুরে আলম নুরের সঞ্চালনায় দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,কেন্দীয় কৃষকলভগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব নাজির মিয়া।

বিশেষ অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ- সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী রোমা আক্তার,শেখ আব্দুল আহাদ,রেবা খানম,এম এ  কাসেম,এডঃ মিজানুর রহমান,নাজমুর রশীদ সবুজ।

অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন মোঃ আমজাদ হোসেন,আলী রাজ সহ আরো অনেকেই।

আলোচনা সভায় প্রধান ও বিষেশ অথিতি বৃন্দ কৃষকলীগ গঠনের কারন ও কৃষকলীগের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিষদ আলোচনা করেন।

-খবর প্রতিদিন/ সি.ব



আরও খবর



মধুপুরে চুরি করতে গিয়ে গৃহবধূকে হত্যার চেষ্টা- চোর গ্রেফতার

প্রকাশিত:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৮ মে ২০২৪ | ১০২জন দেখেছেন

Image

বাবুল রানা মধুপুর টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃটাঙ্গাইলের মধুপুর পৌর শহরের চাড়ালজানী এলাকায় ২ মে  রাত্রি আনুমানিক সাড়ে সাতটার দিকে  নরেশ প্রসাদ এর বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে তার স্ত্রী অমৃতা রানি সরকারকে হত্যার চেষ্টা করে ১ভরি ৪আনা ওজনের গলার চেইন নিয়ে যায় অভি চক্রবর্তি নামের এক মাদক সেবি। নরেশ প্রসাদ জানান,আমি চাকুরির সুবাদে ঢাকা থাকায় আমার স্ত্রী অমৃতা রানি সরকার বাড়িতে একাই বসবাস করেন।

অভি চক্রবর্তী চুরি করার উদ্দেশ্যে আমার বসত ঘরের ভিতরে প্রবেশ করলে আমার স্ত্রী অভি চক্রবর্তীকে দেখে ডাক চিৎকার শুরু করলে অভির হাতে থাকা চেলাই রেঞ্জ দিয়ে আমার স্ত্রীর মাথায় বাড়ি মারিয়া মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। সাথে সাথে আমার স্ত্রী বিছানায় লুটিয়ে পরলে চোর  অভি চক্রবর্তী আমার স্ত্রীর মুখে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করলে আমার স্ত্রী নিজে কে বাঁচানোর জন্য আসামি অভির ডান হাতের বৃদ্ধা আঙ্গুলে কামড় দিলে সে  আমার স্ত্রী কে ছেড়ে দিয়ে তার গলায় পরিহিত ১ভরি ৪আনা ওজনের একটি স্বর্নের চেইন নিয়ে পালিয়ে  যায়। 

আমার স্ত্রীর ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন আগাইয়া আসে পরবর্তীতে আমার ভাতিজা শুভ চৌহান সংবাদ পাইয়া ঘটনাস্থলে আসিয়া আমার স্ত্রীকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে  স্হানীয় লোকজনের সহায়তায় চিকিৎসার জন্য দ্রুত মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে যায়।এব্যাপারে মধুপুর থানায় ৩ মে একটি মামলা  হয়েছে। মামলার পরপরই মধুপুর থানা পুলিশ খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিকে সনাক্ত করে তাকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।

-খবর প্রতিদিন/ সি.ব


আরও খবর



মান্দায় সেচের পাওনা টাকা চাওয়ায় ড্রেনম্যানকে পিটিয়ে জখম

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৮ মে ২০২৪ | ৫৮জন দেখেছেন

Image

এম এম হারুন আল রশীদ হীরা নওগাঁ  প্রতিনিধি:নওগাঁর মান্দায় এক গভীর নলকূপের ড্রেনম্যানকে হাতুড়ি ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। বোরো ধানের জমির সেচভাড়ার টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে তাকে পিটিয়ে জখম করেন এক কৃষক ও তার লোকজন।

বর্তমান ওই ড্রেনম্যান রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। রোববার বিকেলে উপজেলার ভেবড়া গ্রামের মাঠে হামলার শিকার হন তিনি।

হামলার শিকার ড্রেনম্যানের নাম রমজান আলী (৭০)। তিনি উপজেলার গনেশপুর ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা। একই মৌজায় স্থাপিত একটি গভীর নলকূপের ড্রেনম্যানের কাজ করতেন তিনি। 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই গভীর নলকূপের অপারেটর জালাল হোসেন চিকিৎসার কাজে ভারতে অবস্থান করছেন। ভারতে যাওয়ার আগে তিনি নলকূপটি পরিচালনা ও সেচভাড়ার টাকা আদায়সহ যাবতীয় দায়িত্ব ড্রেনম্যান রমজান আলী ও আব তাহেরের ওপর দিয়ে যান। 

ছোয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, একই গ্রামের কৃষক খাইরুল ইসলামের কাছে সেচভাড়ার বকেয়া ১০০০ টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে ড্রেনম্যান রমজান আলীর সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এনিয়ে গত বৃহস্পতিবার কলেজ মোড়ে বাগ্বিত-ার একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। 

জের ধরে কৃষক খাইরুল ইসলামের নেতৃত্বে আকাশ হোসেন, সাগর হোসেন, বকুল হোসেনসহ ৬ থেকে ৭জন ব্যক্তি সংঘবদ্ধ হয়ে গ্রামের মাঠে ড্রেনম্যান রমজান আলীর ওপর হামলা করে। হামলাকারীরা এ সময় লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ড্রেনম্যান রমজান আলী একটি হাত ও একটি পা ভেঙে গুড়িয়ে দেয়।

মাথায় একাধিক আঘাতের কারণে ঘটনাস্থলেই তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি রামেক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক কাজী বলেন, বিষয়টি জেনেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো এজাহার পাওয়া যায়নি। পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আরও খবর



ইসলামপুরে হিট স্ট্রোকে ব্যবসায়ীর মৃত্যু

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৮ মে ২০২৪ | ৮৬জন দেখেছেন

Image
লিয়াকত হোসাইন লায়ন,ইসলামপুর(জামালপুর) প্রতিনিধি:জামালপুরের ইসলামপুরে তীব্র তাপদাহে হিট স্ট্রোকে গোলাম রাব্বানী (৪৮) নামের এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। সে উপজেলার চিনাডুলি ইউনিয়নের পশ্চিম গিলাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা গুঠাইল বাজারের ব্যবসায়ী।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিকালে ওই ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়। পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, নিজ বাড়িতেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন ব্যবসায়ী গোলাম রাব্বানী। স্থানীয়রা দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এ এ এম আবু তাহের বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই ওই ব্যবসায়ীকে মৃত্যু হয়েছে। ধারনা করছি অতিরিক্ত গরমের কারণেই উনার মৃত্যু হয়েছে।

আরও খবর



মেহেরপুরে তীব্র খরা ও অনাবৃষ্টিতে কৃষি খাতে বিপর্যয়ের অশনি সংকেত

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ | ৮০জন দেখেছেন

Image

মজনুর রহমান আকাশ, মেহেরপুরঃমেহেরপুরে প্রখর রোদে পুড়ছে কৃষকের মাঠ। অনাবৃষ্টি ও খরার হাত থেকে ফসল রক্ষায় কৃষকের সেচ সুবিধা ব্যয় বেড়েছে কয়েকগুণ। তাপদাহে ফসলের লক্ষমাত্রা অর্জন নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কৃষকের কপালে। আগামী কয়েকদিন আবহাওয়া অপরিবর্তীত থাকবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিস। তবে ফলন বিপর্যয় ঠেকাতে কৃষকদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষি অফিস।

মেহেরপুর মূলতঃ কৃষি ভিত্তিক এলাকা। এখানকার মাঠে ধানসহ বিভিন্ন উঠতি ফসল ও সব্জীর আবাদ রয়েছে। কিন্তু তীব্র গরম সহ রোদের তাপে পুড়ছে বিস্তীর্ণ মাঠের নানা ধরণের ফসল। খরার কারণে পানির স্তর নীচে নেমে যাওয়ায় সেচকাজে দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। অতিরিক্ত খরার কারণে সেচ কাজে বেড়েছে ব্যয়। স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক গুণ বেশী সেচ লাগছে জমিতে। কৃষি কাজে শ্রমিকও লাগছে বেশী। গরমের কারণে মাঠে ঠিকভাবে কাজও করতে পারছেন না কৃষকরা। কয়েক দিনের মধ্যে ঘরে উঠবে বোর ধান। এছাড়াও প্রচন্ড দাবদাহে শুকিয়ে ঝরে যাচ্ছে আম ও লিচুর গুটি।

জেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ১৯ হাজার ৯৭ হেক্টর ধান, ৫ হাজার ৪৪১ হেক্টর বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করা হয়েছে। এ ছাড়াও ২ হাজার ৩৩৬ হেক্টর আম, ৭১৫ হেক্টর লিচু, ১৬৫ হেক্টর কাঁঠাল ও ৬ হেক্টর জাম বাগান রয়েছে। অপরদিকে পাটসহ অন্যান্য ফসল বপন করা হচ্ছে। বৈরী আবহাওয়ার কারনে ক্ষেতের ধান শুকিয়ে যাচ্ছে। সেচ দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি অফিস।

গাংনীর মানিকদিয়া মাঠের ধানচাষি রফিকুল ইসলাম জানান, প্রচন্ড গরমে মাঠে কাজ করতে পারছেনা। সকাল ১১ টার পর রোদের তাপ বেড়ে যাচ্ছে। বেশি শ্রমিক লাগছে। ৫ জনের কাজ ১০ জন শ্রমিক দিয়ে করাতে হচ্ছে। মাটির নিচ থেকে পাওয়া যাচ্ছে না পানির লেয়ার। যে ক্ষেতে এক ঘন্টায় সেচ করাজ শেষ হয় ওই জমিতে লাগছে অন্ততঃ তিন ঘন্টা।

এমন তাপদাহ অব্যাহত থাকলে সব ধরনের ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ধানচাষি সহড়াবাড়িয়ার শামসুল ইসলাম জানান, তিনি খামারের মাঠে ৬ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে আবাদ করছেন। বর্তমানে মাঠে রয়েছে বোরো ধান। প্রতিটি জমিতেই ধানে ফুল রয়েছে। কিছু ধান দুগ্ধ আর কিছু ক্ষীর অবস্থায় আছে। এ অবস্থায় ক্ষেতে হিটস্ট্রোক দেখা দিতে পারে। বোরো ধান পর্যাপ্ত পানি না পেলে চিটা হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তিনি আরো জানান, তার চার বিঘা জমিতে আম ও লিচু বাগান রয়েছে। আম ও লিচুসহ অন্য ফলে গুটি রয়েছে। তা ঝরে পড়ছে। ফলনেও বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। সবজি চাষি সাহারবাটির আকরামুল জানান, বর্তমানে মাঠে বিভিন্ন ধরনের সবজি রয়েছে। গ্রীষ্মকালীন এ সবজিতে এমনিতেই সেচের পানি দিতে হয়। খরচও বেশি।

কিন্তু চলমান তাপদাহে জমিতে সেচ দেয়ার পরও কোন পানি থাকছে না। রাতে সেচ দিলে সকালে পানি শুকিয়ে যায়। আবারো সেচ না দিলে ক্ষেত শুকিয়ে যায়। ক্ষেত থেকে সবজি তুলে আড়ত পর্যন্ত নিতে সবজি শুকিয়ে কমে যায়। শ্রমিকও লাগছে বেশি।আম বাগান মালিক কাষ্টদহ গ্রামের শরিফুল জানান, গেল বছর গরমে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এবছর সেই ক্ষতি পুশিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করা হয়েছিল। কিন্তু দেরিতে মুকুল আসে। এখন আমের গুটি রয়েছে। অনাবৃষ্টি আর গরমে গুটি শুকিয়ে ঝরে পড়ছে। তার হিসেবে বাগানের ৩০/৩৫ ভাগ গাছের গুটি ঝরে পড়েছে। গুটি ঝরা ঠেকাতে সেচ দিয়েও কোন লাভ হচ্ছে না। এবার অনেক বেশি লোকসান গুনতে হবে।

আম ব্যবসায়ি নজরুল ইসলাম জানান, গেল বছর প্রাকৃতিক দূর্যোগে আম নষ্ট হয়েছিল। ঝরে পড়ে ছাড়াও পোকার আক্রমণ ছিল। গেল বছরের ক্ষতি পুশিয়ে নিতে এবার কেনা বাগান বেশি পরিচর্যা করা হয়। কিন্তু দেরীতে মুকুল আসে। সেগুলো ঠিক রাখতে সেচসহ বিভিন্ন পরিচর্যা করা হয়। কিন্তু চলমান তাপদাহ ও অনাবৃষ্টির কারনে গাছের সিংহভাগ গুটি ঝরে পড়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে বৃষ্টি না হলে গাছে আর আম থাকবে না। মোটা অংকের লোকসান গুনতে হবে।

চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস সুত্রে জানা গেছে, গেল ৫ দিন ধরে চলছে বৈরী আবহাওয়া। আজ ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়াও ২২ এপ্রিল ৪০.২ ডিগ্রি, ২১ এপ্রিল দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়াও ২০ এপ্রিল ৪২.৪ ডিগ্রি, ১৯ এপ্রিল ৪১.৫ ডিগ্রি, ১৮ এপ্রিল ৪০.৪ ডিগ্রি, ১৭ এপ্রিল ৪০.৮ ডিগ্রি ও ১৬ এপ্রিল ৪০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। প্রচ- গরমের সাথে চলছে গরম বাতাস। যা গেল বছরের তুলনায় বেশি। ইতোমধ্যে আবহাওয়া অধিদপ্তর এলাকায় হিট অ্যালার্ট জারী করে সাবধানে চলাচলের পরামর্শ দিয়েছেন।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন জানান, তাপপ্রবাহের ক্ষতি থেকে ফসল রক্ষায় জমিতে পর্যাপ্ত পানি ধরে রাখতে হবে। ধানের শিষে দানা শক্ত না হওয়া পর্যন্ত জমিতে অবশ্যই দুই থেকে তিন ইঞ্চি দাঁড়ানো পানি রাখতে হবে। আমগাছের গোড়ায় পর্যাপ্ত সেচ দিতে হবে। প্রয়োজনে গাছের শাখা-প্রশাখায় পানি স্প্রে করা যেতে পারে। সবজির জমিতে আগামী এক সপ্তাহে মাটির ধরন বুঝে প্রয়োজন অনুযায়ী দুই থেকে তিনটি সেচের ব্যবস্থা করা জরুরি।


আরও খবর