
মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি ;সড়কপথের পর এবার পদ্মা সেতুতে শেষ হলো রেললাইনের কাজ। গতকাল মঙ্গলবার সেতুতে সবশেষ স্লিপার বসানো হয়। বাকি থাকা সাত মিটার অংশের ঢালাই কাজ আজ বুধবার বিকেলে সাড়ে ৫টার দিকে শেষ করেন প্রকৌশলীরা।
ঢালাইয়ের মধ্য দিয়ে দুই পাশের ভায়াডাক্ট ৬.৬৮ কিলোমিটার রেললাইনের কাজ সম্পন্ন হয়। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক-১ ব্রিগেডিয়ার সাঈদ আহমেদ। আগামী ৪ এপ্রিল থেকে পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
রাজধানী থেকে যশোর পর্যন্ত রেলসংযোগ প্রকল্পের মধ্যে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের বড় চ্যালেঞ্জ ছিল সেতুতে যানবাহন চালু রেখেই নিচতলায় পাথরবিহীন রেললাইন নির্মাণ। আজ কাজ শেষ হওয়ায় লাল রঙের ব্যানার নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরা।
বিগ্রেডিয়ার সাইদ আহমেদ বলেন, সাত মিটারের কংক্রিটিং শক্ত হতে ৪৮ ঘণ্টা থেকে ৭২ ঘণ্টা সময় লাগে। এরপরই ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচলের উপযোগী হবে। দ্রুত গতিতে ট্রেন চলার সময় এখন শতভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
পদ্মা সেতুরেল রেলসংযোগ প্রকল্পের পরিচালক আবজাল হোসেন বলেন, ‘উদ্বোধনের পর কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়। সব নকশা চূড়ান্ত করে গত বছরের নভেম্বরে মূল সেতুতে রেললাইনের কাজ শুরু হয়। ৪ মাসের মধ্যে কাজ শেষ হলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা থেকে মাওয়া অংশের অগ্রগতির ৭৪ ভাগ, মাওয়া থেকে ভাঙা অংশের অগ্রগতি ৯২ ভাগ এবং ভাঙা থেকে যশোর পর্যন্ত অগ্রগতি ৬৮ ভাগ। সার্বিক অগ্রগতি ৭৫ ভাগ। আমরা আশাবাদী, প্রাকৃতিক যদি কোনো দুর্যোগ না হয়, তবে প্রকল্পের যে মেয়াদ আছে, ২০২৪ সালের জুন মাসে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।’
প্রকৌশলীরা জানান, ৬.১৫ কিলোমিটার মূল সেতু, ও দুই পাশের ভায়াডাক্ট সেতু মিলিয়ে পদ্মা রেল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.৬৮ কিলোমিটার। মূল সেতুতে ১১ হাজার ১৪০টি স্লিপার স্থাপিত হয়েছে। মুভমেন্ট জয়েন্টের ইস্পাতের ৮টি স্লিপার ছাড়া বাকি সবগুলো কংক্রিটের তৈরি।
সিএসসি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালটেন্টের (সিএসসি) তত্ত্বাবধানে চলছে পদ্মা সেতুর এই রেলসংযোগ প্রকল্পের কাজ। পদ্মা সেতু ছাড়াও প্রকল্পের মোট ১৭২ কিলোমিটার লেভেল ক্রসিংবিহীন রেলপথে ৩২টি রেল কালভার্ট, ৩৭টি আন্ডারপাস এবং ১৩টি রেলসেতুর কাজ শেষ হয়েছে। সেতুর দুই পাসের স্টেশন নির্মাণ চূড়ান্ত পর্যায়ে।