Logo
আজঃ শুক্রবার ০৯ জুন ২০২৩
শিরোনাম

পরমাণু ভবনে ধসে গাফিলতি আছে কি না, খতিয়ে দেখা হবে: প্রযুক্তিমন্ত্রী

প্রকাশিত:শনিবার ১১ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৯ জুন ২০২৩ | ৮৮জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক: পরমাণু গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ভবনে ধসের ঘটনায় গাফিলতি হয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। আজ শনিবার দুপুরে সাভারের আশুলিয়ার গনকবাড়িতে অবস্থিত পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ধসে যাওয়া ১২ তলা ভবনটির পরিদর্শন শেষে এ কথা বলেন তিনি।

ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘আমাদের যারা (পরমাণু গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা) এ ভবনের কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের বিষয়েও আমরা দেখব। তাদের কতটুকু গাফিলতি হয়েছে, সেটা খতিয়ে দেখব। এটা মূলত ঠিকাদারের বিষয়, এখানে যদিও আমাদের কিছু নেই। তবুও সব আমরা খতিয়ে দেখব।

দুর্ঘটনার পর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী বলেন, ‘এটি গুরুতর নয়। সাধারণ উচ্চতা যখন বেশি হয়, তখন দুটো উচ্চতায় ট্রপিং করে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা খেয়াল করেনি একটার ওপর আরেকটি ঠিকভাবে আছে কি না। না থাকলে স্লিপ করতে পারে। আসলে ঘটনাটি এটিই হয়েছে। ছাদও ঢালাই হয়নি, কাছাকাছি কিছু ভীম ঢালাই হচ্ছিল, তখনই এ ঘটনাটি ঘটে। পুরোটা দেখে বুঝেছি কিছুটা তো গাফলতি আছে।

‘তিনি বলেন, ‘এখন আমরা যে সিদ্ধান্ত বেঁধে দিয়েছি, সেটা হলো কনট্রাক্টর ধসে যাওয়া অংশ সব পরিষ্কার করে নতুন করে কাজ করবে। আর পরবর্তীতে প্রোপারলি কাজ করা সেটা নিশ্চিত রাখতে বলা হয়েছে। যাতে এ ধরনের অঘটন আর না হয়।

এ দুর্ঘটনা তদন্তে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘এখানে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। আমরা আজ এর জন্যই এখানে এসেছি। সব কিছু দেখলাম। আর আমার লোকজন হাসপাতালে গিয়ে আহতদের দেখছেন।

ভবনটির কার্যক্রম সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ভবন। এখানে ক্যানসারের হাসপাতালসহ গবেষণা ও প্রশিক্ষণের কাজ করা হবে। আগে আমরা ক্যানসার হলে শুধু পরিষ্কার করে দিতাম, কিন্তু এখানে সেই রোগের নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হবে। সব চেয়ে বড় বিষয় যে, টাকা খরচ করে আমরা বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করায় সেটা অনেক অংশে কমিয়ে আনতে পারব এ হাসপাতালের মাধ্যমে। এ সিমিলার জিনিস আমরা আরও আটটি জায়গায় করার চেষ্টা করছি। যেন এ ধরণের চিকিৎসা আমরা দিতে পারি।

পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল ইসলাম এনডিসি, পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক দেবাশীষ পাল, পরমাণু শক্তি কমিশনের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুঞ্জুরুল হাসান প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার বিকেলে পরমাণু গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ভবনটির ১২ তলা নির্মাণাধীন ছাদ ধসে যায়। এতে প্রায় ১৫ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।


আরও খবর



ডোমারে পুলিশের বিশেষ অভিযানে একই দিনে বিভিন্ন মামলার ১০ জন আসামী গ্রেফতার

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৮ জুন ২০২৩ | ৯৯জন দেখেছেন

Image

আনিছুর রহমান মানিক, ডোমার (নীলফামারী)প্রতিনিধি: নীলফামারীর ডোমারে পুলিশের বিশেষ অভিযানে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ ওয়ারেন্টভুক্ত ১০জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে ডোমার থানা পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) আলী মোহাম্মদ আব্দুল্ল্যার নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক মাহামুদ উন নবী, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদ করিম, এসআই কাওছার আলী ও সঙ্গীয় ফোর্স উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতার কৃতরা হলেন, ডোমার পৌর এলাকার ছোট রাউতা ময়দান পাড়ার অফির উদ্দিনের ছেলে আঃ মান্নান (৫০), বাবুল মিয়া (৫৫), মজনু মিয়া (৫২), বাবুল হেসেনের ছেলে সাজু ইসলাম (৩০), আঃ মান্নানের ছেলে মুন্না (২৫), চিকনমাটি বসতপাড়া এলাকার ফজলু রহমানের ছেলে আল-আমিন রহমান রাজু (২৫), মৌজাপাঙ্গা এলাকার আফছার আলীর ছেলে শাহিনুর ইসলাম (৩০), মৃত অলিয়ার রহমানের ছেলে মানদুল ইসলাম (৪০), জলঢাকা বালাপাড়া গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে ফজল আলী (৪৯) এবং নীলফামারী সদর সিংদই জেলেপাড়া এলাকার শরৎ দাসের ছেলে রতন দাস (৩৫)।

ডোমার থানা অফিসার ইনচার্জ মাহামুদ উন-নবী গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ১০ জন আসামীর মধ্যে ৩০ এপ্রিল ভোর রাতে ডোমারে ছোট রাউতা ব্রাহ্মন পাড়ার পুরহিত বিজয় চক্রবর্তীর বাড়ীতে চাঞ্চল্ল্যকর ডাকাতির ঘটনায় জড়িত রতন দাসকে গ্রেফতার করি। এর আগে গত ১ মে ডাকাতি মামলার ৩জন আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। এ সময় তাদের কাছ থেকে লুন্ঠিত টাকা, কাসার প্লেট গ্লাস, মোবাইল ফোনসহ ডাকাতির কাজে ব্যহৃত এ্যাপাসি ১২৫ সিসি মোটর সাইকেল আলামত হিসাবে জব্দ করা হয়। আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে। শনিবার দুপুরে আসামীদের বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।


আরও খবর



‘আমরা সংঘাত চাই না, সবার উন্নতি চাই।’ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৬ জুন ২০২৩ | ১১৩জন দেখেছেন

Image

অনলাইন ডেস্ক ;শান্তিপূর্ণ পরিবেশ মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির সহায়ক মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা চাই আলোচনার মাধ্যমে, শান্তির মাধ্যমে সকল সমস্যার সমাধান হোক। আমরা সংঘাত চাই না, সবার উন্নতি চাই।’

তিনি বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির মাধ্যমে আমরা পেরেছি, প্রতিবেশি দেশ ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময় করেছি আলোচনার মাধ্যমে, তাহলে আজ কেনো এই অস্ত্র প্রতিযোগীতা?’

আজ রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বিশ্বের কাছে প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘অস্ত্র প্রতিযোগীতায় যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে সেই অর্থ কেনো ব্যয় হয় না ক্ষুধার্ত শিশু ও মানুষের জন্য? এই অস্ত্র প্রতিযোগীতার কারণে বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার মানুষ, শিশু, নারী মানবেতর জীবনযাপন করছে। আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি, তারাও নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। কাজেই আমরা চাই, বিশ্বে শান্তি ফিরে আসুক।’

বিশ্ব শান্তিতে বঙ্গবন্ধুর চিন্তাকে স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তৎকালীন শান্তি পরিষদের মহাসচিব বলেছিলেন, শেখ মুজিব কেবল বঙ্গবন্ধু নন, তিনি বিশ্ববন্ধু। মাত্র ৯ মাসে তিনি সংবিধান উপহার দেন। যাতে শান্তির কথা ও দেশের মানুষের মৌলিক অধিকারের কথা ছিল। তিনি পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছিলেন।’

জাতির পিতার কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘ছাত্রজীবন থেকে তিনি নির্যাতিত মানুষের পাশে ছিলেন, সেই ১৯৪৩ সালে দুর্ভিক্ষে ছাত্র শেখ মুজিব মানুষের পাশে ছিলেন। ৪৫ সালে দাঙ্গার সময় নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শেখ মুজিব দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সব সময় তিনি শান্তির পথে ছিলেন। শান্তির কথাই তিনি বলে গেছেন।’

জাতির পিতার পররাষ্ট্রনীতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার পররাষ্ট্রনীতি আমরা আজও মেনে চলি। মেনে চলতে চাই। কারণ বঙ্গবন্ধু শান্তিতে বিশ্বাস করতেন। জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেওয়ার সময়ও তিনি শান্তির কথা বলেছিলেন। অথচ যিনি সর্বদা শান্তির কথা বলে গেছেন, তাকেই জীবন দিতে হলো। প্রতিনিয়ত স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রতিকূলতা অতিক্রম করতে হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় শান্তিতে বিশ্বাস করি। দারিদ্র্যের হার ৪১ ভাগ থেকে ১৮ ভাগে নামিয়ে এনেছি। এ দেশে কেউ দরিদ্র, ভূমিহীন থাকবে না। সবার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হবে। যা জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল। জাতির পিতাকে হত্যার পর একের পর এক ক্যু হয়। অনেককে হত্যা করা হয়। এমন একটা অশান্ত পরিবেশে দেশের মানুষকে ২১ বছর কাটাতে হয়েছে।’


আরও খবর



মাগুরার শ্রীপুরে বজ্রপাতে তিন কৃষকের মৃত্যু

প্রকাশিত:বুধবার ১০ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৮ জুন ২০২৩ | ৬৬জন দেখেছেন

Image
স্টাফ রিপোর্টার মাগুরা থেকে: মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার দারিয়াপুর ইউনিয়নের চর চৌগাছী গ্রামে বজ্রপাতে ২ জন ও ঘসিয়াল গ্রামের ১ জন কৃষকের মৃত্যর ঘটনা,ঘটেছে। বুধবার দুপুরে বৃষ্টির সাথে বজ্রপাত ঘটলে তারা নিহত হন। তারা মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাত হলে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হচ্ছেন শাহাদত নিজাম ও মহম্মদ আলী। তাদের ২ জনের বাড়ি চর চৌগাছি ও ১ জনেন বাড়ি ঘষিয়াল গ্রামে।

আরও খবর



মাধবপুরে সাংবাদিকের উপর হামলা নগদ টাকা ও মোটরসাইকেল ছিনতাই

প্রকাশিত:শনিবার ২০ মে ২০23 | হালনাগাদ:বুধবার ০৭ জুন ২০২৩ | ৯৫জন দেখেছেন

Image

মোঃ আব্দুল হান্নান:-

হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুরে এক সাংবাদিকের উপর হামলা চালিয়ে মোটরসাইকেল সহ নগদ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার খবর পাওয়া গেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে ১৯ মে ২০২৩ রোজ শুক্রবার সকাল ১০ ঘটিকার সময় আদাঐর ইউনিয়নের মাধবপুর-নাসিরনগর সড়কের আদাঐর কালী মন্দিরের সামনে।জানা গেছে জাতীয় দৈনিক এই বাংলা'র মাধবপুর প্রতিনিধি নারায়ণ সরকার নয়নের উপর হামলা চালিয়ে দূর্বৃত্তরা একটি Afacee 4v 160 cc মোটরসাইকেল ও নগদ ২ লক্ষ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়।


এ ব্যাপারে নারায়ণ সরকার নয়ন জানান,সে একজন ইমপোর্ট এক্সপোর্ট লাইসেন্স ধারী ব্যবসায়ী। ইলেক্ট্রনিক্স মালামাল আনার জন্য ১৯ মে শুক্রবার দুপুরে ভারতের আগরতলা যাওয়ার কথা তার। এর আগে সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে আদাঐর গ্রামে একটি মোবাইলের জন্য তমাল চক্রবর্তীর বাড়িতে যায়। সেখান থেকে আসার পথে ঐ গ্রামের কালী মন্দির এলাকায় পৌছা মাত্র কয়েকজন দূর্বৃত্ত তার উপর হামলা করে নগদ টাকা ও মোটরসাইকেল ছিনতাই করে নিয়ে যায়।এ বিষয়ে নয়ন সরকার মাধবপুর থানার একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

 অভিযোগের ভিত্তিতে এস আই সাইদুল ইসলাম ঘটনা স্থলে গিয়ে হিরেন্দ্র সরকার হিরোর ঘর থেকে মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করেন।

জানতে চাইলে মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জের  মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে, ওসি তদন্ত বলেন স্যার ছুটিতে আছেন।আমরা অভিযোগ পেয়েছি তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

-খবর প্রতিদিন/ সি.ব


আরও খবর



প্রস্তাবিত বাজেট গণবিরোধী, বাস্তবায়ন অযোগ্য: ফখরুল

প্রকাশিত:বুধবার ০৭ জুন ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৮ জুন ২০২৩ | ৬৮জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক:২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এটি নজিরবিহীন লুটপাট ও অলীক কল্পনার অবাস্তবায়নযোগ্য গণবিরোধী বাজেট।

আজ বুধবার দলটির পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এ মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ।

ফখরুল বলেন, ‘সরকার গত ০১ জুন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লক্ষ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার যে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে তা বর্তমান ফ্যাসিস্ট লুটেরা সরকারের অর্থনৈতিক দুর্নীতির ধারাবাহিকতা রক্ষার এক বার্ষিক ঘোষণাপত্র মাত্র। এই বাজেট কল্পনাবিলাসী বাস্তবায়ন অযোগ্য এক উচ্চাভিলাষী বাজেট। এটা স্রেফ দুর্নীতিবাজ বর্তমান সরকারের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার লুটের লক্ষ্যে প্রণীত ‘অর্থ লুটেরাদের বাজেট’।

লিখিত বক্তব্যে বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, ‘বাজেটে চলমান অর্থনৈতিক সংকট, ক্রমবর্ধমান আয়-বৈষম্য, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে যাওয়া, বেপরোয়া অর্থপাচার, জনগণের কাঁধে রাষ্ট্রীয় ঋণের বোঝা একেবারের জন্যেও স্বীকার করা হয়নি। পরিত্রাণের উপায়ও বলা হয়নি। তেমনিভাবে সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে সুশাসন ও ন্যায়বিচার এর ধারণাকে।

ফখরুল বলেন, ‘এই বাজেট পরিচালনা ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৩.৪% এবং উন্ন্য়ন ব্যয় ৩৬.৪%। বাজেটের এই অর্থের সংস্থান হবে ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা আয় থেকে, আর ঘাটতি ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা ঋনের মাধ্যমে। রাজস্ব আয়ের ৩২.৮% পরোক্ষ কর (ভ্যাট) এবং ৩০.৭% প্রত্যক্ষ কর। এরই সাথে সরকার জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭.৫% এবং মুদ্রাস্ফীতির হার ৬% প্রত্যাশা করছে! এ বাজেট বাস্তবতা বিবর্জিত, প্রতারণামূলক, লোক দেখানো বাজেট, জনকল্যাণের নয়।

‌বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি ও বিনিয়োগসহ সামষ্টিক অর্থনীতির যেসব প্রক্ষেপণ করা হয়েছে তা অর্জনযোগ্য নয়। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭.৫% লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করলেও তা কিভাবে অর্জন করা হবে তার কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা বাজেটে নেই। চলতি অর্থবছরেও ঢাকঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করা হয়েছে প্রবৃদ্ধি হবে ৭.৫%। সংশোধনী বাজেটে তা পরে ৬.৩% পুনঃনির্ধারণ করা হয়। অর্থনীতিবিদরা বলেছেন- এবারও ৭.৫% টার্গেট অর্জন সম্ভব হবে না। কেননা অর্থনীতি এমনিতেই চাপের মধ্যে রয়েছে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ে ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে অর্থনীতি ও সাধারণ মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ। এ চাপ মোকাবেলায় বাজেটে তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই। বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পরিবহন এবং খাদ্যসহ তেল, চাল, আদা, চিনি, ডিম, মুরগিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য অনেক আগেই মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।

দেশের অর্থনীতি মহাবিপর্যয়ে রয়েছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘ডলারের সংকট প্রকট। পণ্য আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খুলতে গেলে প্রায় সকল ব্যাংক ফিরিয়ে দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে। সরকারি হিসাব মতে গত ৭ বছরে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ২৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে গেছে। আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী প্রকৃত রিজার্ভ দাঁড়ায় ২১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। বিশ্বস্ত সূত্র মতে, ইতিমধ্যে নতুন নোট ছাপিয়ে বাজারে ছাড়া হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকার উপর। একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

‌তিনি বলেন, ‘অর্থপাচার অব্যাহতভাবে বাড়ছে। জিএফআই বলছে, ২০০৯ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে বাংলাদেশ থেকে ৪,৯৬৫ কোটি ডলার পাচার হয়। সিআইডি বলছে, শুধু হুন্ডি প্রক্রিয়ায় দেশ থেকে গড়ে বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। অন্যান্য মিলে প্রতিবছর কমপক্ষে দেড় লাখ কোটি টাকার সমপরিমাণের বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে পাচার হচ্ছে। বর্তমান বাংলাদেশে চারিদিকে শুধু হাহাকার। তবে এই হাহাকার সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট ও সুবিধাভোগী নব্য ধনীদের জন্য নয়।

ফখরুল আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক ব্যবস্থায় নজিরবিহীন নৈরাজ্য চলছে। ব্যাংকের অতিরিক্ত ক্যাশ লিকিউডিটি কমেছে ৫৭ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা (ঘবি অমব: ২৪-১-২৩)। ২০০৯ সালে যেখানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার কোটি টাকা, এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। তবে পুনঃ তফসিলকৃত ঋণ যোগ করলে প্রকৃত খেলাপি ঋণ ৪ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। গত বছরের প্রথম নয় মাসেই খেলাপি বেড়েছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। গত ৩ মাসেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১১০০০ কোটি টাকা। বাংলাদেশে খেলাপি ঋণ বাড়ার প্রধান কারণ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা।

গত ৬ বছরে বিদেশী ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে উল্লেক করে ফখরুল বলেন, ‘চীন ও রাশিয়া থেকে নেয়া কঠিন শর্তের ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ২০২৪ সন থেকেই বর্তমানের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাবে। সে সময় পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে। ২০২১-২২ অর্থবছরে মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণের বোঝা ছিল ৩২৪ মার্কিন ডলার, টাকার অংকে যা প্রায় ৩২ হাজার ৭৪০ টাকা (প্রতি ডলার ১০১ টাকা দরে)। বর্তমানে আরও বেড়েছে। আইএমএফ চাচ্ছে সরকারি ব্যাংকগুলোতে ১০ শতাংশ এর নিচে ও বেসরকারি ব্যাংক গুলোতে ৫ শতাংশ এর নিচে থাকুক খেলাপি ঋণের পরিমাণ। কিন্তু বর্তমানে কৌশলে এক ব্যাংকের আদায়যোগ্য খেলাপি ঋণ আরেক ব্যাংকে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

ফখরুল বলেন, ‘বাজেটে আয় বৃদ্ধির জন্য কর্মসংস্থানের বিশেষ কোনো পদক্ষেপের উল্লেখ করা হয়নি। আর কর্মসংস্থান না হলে মানুষের আয় বাড়বে না। মূল্যস্ফীতির ধাক্কা তারা সামলাবে কিভাবে?’

তিনি বলেন, ‘সরকার ইতোপূর্বে করযোগ্য আয় নেই এমন ব্যক্তিদেরও ৪৪ ধরনের সেবা গ্রহণে কর দেওয়া বাধ্যতামূলক করেছে যা মধ্যবিত্তের উপর জুলুম। প্রশ্ন হলো যার আয় কম তিনি কি ঐ সকল রাষ্ট্রীয় সেবা পাবেন না! একদিকে ন্যূনতম আয়কর সীমা বাড়িয়ে ৩,৫০,০০০ টাকা প্রস্তাব করেছে, অপরদিকে আয় না থাকলেও মিনিমাম ২০০০ টাকা আয়কর ধার্য করার প্রস্তাব করা হয়েছে যা সাংঘর্ষিক, ন্যায়নীতি বর্জিত এবং ‘আয়ের উপর কর’ নীতিরও পরিপন্থী।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের এই চরম অর্থনৈতিক সংকটের সময়ে প্রয়োজন ছিল দল, মত ও ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে গিয়ে একটি সাহসি ও বাস্তবসম্মত বাজেট। কিন্তু মোটাদাগে এ বাজেট আইএমএফ এর শর্ত বাস্তবায়ন এবং বিগত অর্থবছরের বাজেটের ১৪-১৫% বর্ধিত অবস্থা ছাড়া কিছুই না। অথচ আইএমএফ এর সঙ্গে ঋণচুক্তির কথা উল্লেখই করেননি অর্থমন্ত্রী। এদিকে আইএমএফ এর শর্তপূরণে বাড়তি আদায় করতে হবে ৪৮ হাজার কোটি টাকা। কর ছাড় কমানোর বড় উদ্যোগ বাজেটে নেই।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশে চলমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট দেশের প্রধান জাতীয় সংকটে পরিণত হয়েছে। গণতান্ত্রিক সরকার না থাকলে সরকারের জাবাবদিহিতা থাকেনা। দেশের অর্থনীতির জন্য কল্যাণকর বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এই জাতীয় সংকট থেকে মুক্তি পেতে জবাবদিহি ও দায়বদ্ধমূলক নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটার একমাত্র পথ নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান।


আরও খবর