Logo
আজঃ রবিবার ১৯ মে ২০২৪
শিরোনাম

পরিবর্তন হতে পারে ‘ইন্ডিয়া’ নাম

প্রকাশিত:বুধবার ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ | ২৩৮জন দেখেছেন

Image

খবর প্রতিদিন ২৪ডেস্ক :ইন্ডিয়া নামটি পরিবর্তন করে সে দেশের নাম ইংরেজিতে ভারত রাখতে পারে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। অন্তত এমনটাই আলোচনা ছড়িয়েছে। দিল্লিতে জি-২০ সামিটের পরই, আগামী ১৮ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর দেশটির সংসদে বিশেষ অধিবেশন বসতে যাচ্ছে। সেই অধিবেশনে দেশের নাম পরিবর্তন করার প্রসঙ্গটি উত্থাপন করে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাবনা আনা হতে পারে।

ইতোমধ্যেই দেশের সংবিধান সংশোধন করে ভারত নামকরণের দাবি তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবতের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এই পরিবর্তনের পক্ষে তাদের সমর্থন জানিয়েছেন। অনেক আগেই ভারত শব্দটি ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছিলেন ভাগবত।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও একই অনুভূতি প্রকাশ করেছিলেন। ২০২২ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার দিবসের দিন লালকেল্লার মঞ্চ থেকে ভারতবাসীর কাছে পাঁচটি অঙ্গীকার গ্রহণের আবেদন করেছিলেন মোদি। যার মধ্যে একটি ছিল দাসত্বের প্রতিটি চিহ্ন থেকে মুক্তি। আর সেই লক্ষ্যেই এগোচ্ছে প্রধানমন্ত্রী।

সম্প্রতি শেষ হওয়া সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশনেও সংবিধান থেকে ইন্ডিয়া নামটি বাদ দিয়ে সেখানে ভারত নামটি যুক্ত করার দাবি তুলেছিলেন বিজেপির রাজ্যসভার সংসদ সদস্য নরেশ বনশাল। তার যুক্তি এটি ঔপনিবেশিক দাসত্বের প্রতীক।

ভারতের রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর যাতায়াতের জন্য যে বিশেষ বিমান ব্যবহার করা হয় তাতেও ভারত নামটি খোদাই করা আছে।

সেই জল্পনা আরও বাড়িয়েছে একটি চিঠিতে দ্রৌপদী মুর্মুকে প্রেসিডেন্ট অব ভারত বলে সম্বোধন করায়। আগামী ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জি-২০ জোটভুক্ত দেশগুলির শীর্ষ বৈঠক। ৯ সেপ্টেম্বর বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান এবং সমস্ত মুখ্যমন্ত্রীদের নৈশ ভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে জি-২০ প্রতিনিধিদের সেই আনুষ্ঠানিক নৈশভোজের আমন্ত্রণ প্রকাশিত হয়েছে। সেই আমন্ত্রণপত্রে প্রেসিডেন্ট অব ইন্ডিয়ার পরিবর্তে প্রেসিডেন্ট অব ভারত লেখা রয়েছে। এরপরই জল্পনা আরও বাড়িয়েছে। রাইসিনা হিলের তরফে দেশটির রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলগুলিকে যে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে ইতোমধ্যেই সেই আমন্ত্রণ পত্রের প্রতিলিপি ভাইরাল হয়ে গেছে নেট দুনিয়ায়।

জি-২০ সম্মেলনের মতো এত গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের সরকারি আমন্ত্রণপত্রে ইন্ডিয়ার পরিবর্তে ভারত লেখার সিদ্ধান্ত যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে সংবিধান বিশেষজ্ঞরা।

শুধু আমন্ত্রণপত্রেই নয়, বিদেশি অতিথিদের যে পুস্তিকা পাঠানো হয়েছে তাতেও ইন্ডিয়ার পরিবর্তে ভারত লেখা রয়েছে বলে জানা গেছে, যার শিরোনাম হিসেবে লেখা রয়েছে- ভারত দ্য মাদার অব ডেমোক্রেসি।

তবে দেশের নাম পরিবর্তনের জল্পনার মধ্যেই মোদি সরকারকে তীব্র নিশানা করেছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। টুইট করে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের আমন্ত্রণপত্রের উদাহরণ টেনে তিনি লেখেন খবরটা তাহলে সত্যিই! রাষ্ট্রপতিভবন ৯ সেপ্টেম্বর জি-২০ সম্মেলনের নৈশ ভোজের আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছে।  তাতে প্রেসিডেন্ট অব ইন্ডিয়ার পরিবর্তে প্রেসিডেন্ট অব ভারত লেখা রয়েছে। তার অভিমত দেশের সংবিধানের ১ নম্বর অনুচ্ছেদ আজ হুমকির মুখে পড়েছে। কারণ সংবিধানের ১ নং অনুচ্ছেদে স্পষ্ট বলা হয়েছে ভারত অর্থাৎ ইন্ডিয়া রাজ্যের সমষ্টি হিসেবে বিবেচিত হবে। কিন্তু সেই যুক্তরাষ্ট্র কাঠামের ওপরেই আঘাত হানা হচ্ছে।

বিজেপি সরকারের ওপর ক্ষোভ ঝেড়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, ভারত তো আমরাও বলি। মনে নেই ভারত আমার ভারতবর্ষ, স্বদেশ আমার স্বপ্ন গো... একটা গান আছে। এতো নতুন করে কিছু করার নেই। কিন্তু ইন্ডিয়া নামটা সারা বিশ্ব চেনে। হঠাৎ এমন কি হলো যে আজকে দেশের নামটাও পরিবর্তন হয়ে যাবে। কবে দেখবো রবি ঠাকুরের নামও পরিবর্তন হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব নাম বদলে দিচ্ছে, বড় বড় ঐতিহাসিক সৌধের নাম বদলে দিচ্ছে। দেশের ইতিহাসকে পরিবর্তন করে দিচ্ছে।

সূত্র: আল জাজিরা


আরও খবর



মাটিরাঙ্গায় ভোটগ্রহন কর্মকর্তাদের সাথে প্রশাসনের ব্রিফিং অনুষ্টিত

প্রকাশিত:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৮ মে ২০২৪ | ৭৪জন দেখেছেন

Image

জসীম উদ্দিন জয়নাল,পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি:৮ মে অনুষ্টিতব্য প্রথম ধাপে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে খাগড়াছড়ি,র মাটিরাঙ্গায়  উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, ও নিরপেক্ষ করতে ভোটগ্রহন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ব্রিফিং করেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরের দিকে মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে উপজেলা নির্বাচন অফিসের আয়োজনে মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় মাটিরাঙ্গায় উপজেলায় ভোটগ্রহন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ব্রিফিং  অনুষ্ঠানে মাটিরাঙ্গা  উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডেজী চত্রুবর্তী,র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো.সহিদুজ্জামান।

এসময় খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মুক্তা ধর পিপিেম (বার),জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ কামরুল  আলম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

অন্যান্যের মাঝে মাটিরাঙ্গা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি)মো.মিজানুর রহমান,মাটিরাঙ্গা সার্কেল সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ,মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারি রির্টানিং অফিসার মুহাম্মদ হাসান, মাটিরাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর সহ ভোটগ্রহন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মুক্তা ধর পিপিএম (বার), বিশেষ অতিথি,র বক্তব্যে খাগড়াছড়ি জেলার পুলিশ সুপার  মুক্তা ধর পিপিএম (বার) বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ শান্তিপূর্ণ, ভোট নিশ্চিত করতে  প্রশাসন, ভোটার, প্রার্থী  সকল কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করার জন্য এবং খাগড়াছড়ি জেলার নির্বাচনকালীন আইন-শৃঙ্খলা  পরিস্থিতি স্বভাবিক রাখার লক্ষ্যে খাগড়াছড়ি জেলা  পুলিশ সর্বদা প্রস্তুত আছে।তাই ভোট গ্রহন কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সাথে এবং নির্ভয়ে  নিজেদের দায়িত্ব পালনের জন্য আহ্বান জানান। 

প্রধান অতিথি,র বক্তব্যে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো.সহিদুজ্জামান বলেন, ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন  সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভোটারদের নির্বিগ্নে ভোটকেন্দ্রে এসে ভোটাধিকার প্রয়োগের ব্যবস্থা করা হবে।ভোট কেন্দ্রে কোন ধরনের অনিয়ম দেখা দিলে সাথে সাথে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করার জন্য আহবান জানান।

মাটিরাঙ্গা উপজেলায় ৩৬টি ভোটকেন্দ্রে ৩৬জন প্রিজাইডিং, ২শত ২৬ জন সহ-প্রিজাইডি এবং ৪শত ৫২পোলিং অফিসার ভোট গ্রহন করবেন। ১টি পৌরসভাসহ ৭ টি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা  ৯০হাজার ৩শত ৮২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৪৬হাজার ১শত২০জন।  মহিলা ভোটারের সংখ্যা  ৪৪হাজার ২শত ৬২জন। 

আরও খবর



জয়পুরহাটে তিন উপজেলায় চেয়ারম্যান হলেন যারা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ | ১২১জন দেখেছেন

Image

এস এম শফিকুল ইসলাম,জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃজয়পুরহাটের  তিন উপজেলায় প্রথম ধাপের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। ভোট গণনা শেষে তিন উপজেলায় তিন জনকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার (৮মে) রাতে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ফজলুল করিম তাদের জয়ী ঘোষণা করেন।

জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা ফজলুল করিম জানান,

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মিনফুজুর রহমান মিলন (মোটরসাইকেল) মার্কায় ৪২ হাজার ৪৫৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক (আনারস) মার্কা তৌফিকুল ইসলাম তালুকদার বেলাল ভোট পেয়েছেন (আনারস) মার্কা ৩০৯৪৩।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে গোলাম মোস্তফা  (উড়োজাহাজ ) মার্কা ৩৪ হাজার ৩৯৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।  নিকটতম প্রতিদ্বন্দী ছানোয়ার হোসেন  ( টিউবয়েল) মার্কা পেয়েছেন ১৪ হাজার ১৯১ ভোট।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মেরিনা খাতুন ( হাঁস) মার্কা ৪৩ হাজার ৪১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।নিকটতম প্রতিদ্বন্দী মরিয়ম নেছা (কলস) ৩১হাজার ৪১৩ ভোট পেয়েছেন।

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলায় ক্ষেতলাল পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব  দুলাল মিয়া সরদার (দোয়াত কলম) মার্কায় ৩০৪০০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি আওয়ামী লীগ নেতা তাইফুল ইসলাম তালুকদার ( আনারস) মার্কায় ২২৯০০ ভোট পেয়েছেন । ভাইস চেয়ারম্যান পদে মতলুব হোসেন (টিওবয়েল) মার্কা ভোট পেয়েছেন ২৪ হাজার ৬১৭ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দী এস এম তুহিন ইসলাম তৌফিক  (তালা) মার্কা পেয়েছেন ২০ হাজার ৯৩৬ ভোট।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নুরুন্নাহার গুন্নাহ ( সেলাই মেশিন)  মার্কা পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৩৭০ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দী নুরবানু খাতুন  (হাঁস) ১৩ হাজার ৪৩৫ ভোট পেয়েছেন।

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোকসেদ আলী মন্ডল (মোটরসাইকেল) মার্কা ১৯৫৩৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সরদার নুরুন্নবী আরিফ (আনারস) মার্কায় ভোট পেয়েছেন ৩১৮৮। ভাইস চেয়ারম্যান পদে টুটুল হোসেন (টিওবয়েল) মার্কা ভোট পেয়েছেন ৯ হাজার ৫৯৮ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দী তাইজুল ইসলাম ( টিয়া পাখি) মার্কা পেয়েছেন ৯ হাজার ৪৪২ ভোট।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আছিয়া খানম সম্পা ( প্রজাপতি)  মার্কা পেয়েছেন ১১ হাজার ২৫০ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দী আয়শা সিদ্দিকা ( হাঁস) ৬ হাজার ১৪৩ ভোট পেয়েছেন।

এর আগে সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। ভোটগ্রহণ শেষে শুরু হয় গণনা।

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে জয়পুরহাটের কালাই, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর এই তিনটি উপজেলায় নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনে তিন উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। আর পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।

তিনটি উপজেলায় মোট ভোটার রয়েছে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৭৬৯ জন। এরমধ্যে কালাই উপজেলায় এক লাখ ২২ হাজার ৭৩৬ জন, ক্ষেতলালে ৯৫ হাজার ১৯১জন ও আক্কেলপুর উপজেলায় এক লাখ ২২ হাজার ৮৮২ জন ভোটার রয়েছে। কালাইয়ে ৩৭টি, ক্ষেতলালে ৩০টি, আক্কেলপুরে ৪২টি সহ মোট ১০৯ টি কেন্দ্রে ভোটাররা ভোট প্রদান করেছেন।


আরও খবর

পোরশায় ৫ মাদক সেবী আটক

রবিবার ১৯ মে ২০২৪




মহান মে দিবস আজ

প্রকাশিত:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ | ৯৯জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক:বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন আজ মহান মে দিবস। ১৮৮৬ সালের এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ওই দিন তাদের আত্মদানের মধ্য দিয়ে শ্রমিক শ্রেণির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য 'শ্রমিক মালিক গড়বো দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ।

আজকের আধুনিক সভ্যতার ভিত্তি হলো শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের নিরলস পরিশ্রম। হাজার বছর ধরে শ্রমজীবী মানুষের রক্ত-ঘামে যে মানব সভ্যতার উৎকর্ষ সাধিত হয়েছে, তা থেকে সেই শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীই থেকেছে উপেক্ষিত। আজকের উন্নত-সমৃদ্ধ পৃথিবীর কারিগর এসব অবহেলিত, নির্যাতিত, নিপীড়িত, অধিকার বঞ্চিত শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে অব্যাহত রয়েছে নিরন্তর সংগ্রাম।

সময়ের পরিক্রমায় 'অধিকার' শব্দটির সুদৃঢ় শক্তি সামাজিক ও রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা, ধ্যান-ধারণা ও দর্শনকে প্রভাবিত করেছে এবং পরিবর্তন সাধিত করেছে। শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনের প্রবণতা পৃথিবীর দেশে দেশে অধিকার বঞ্চিত মেহনতি মানুষের মধ্যে এক নবতর জাগরণের প্রস্ফুটন ঘটায়।

শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রামের পথ পরিক্রমায় গতিশীল হয়েছে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় গণতান্ত্রিক আদর্শের অগ্রযাত্রা। স্বাধীনতা, সাম্য, ভ্রাতৃত্ববোধে সঞ্চারিত হয়েছে বিশ্বের বিবেকবান নাগরিকদের মানবিক সত্ত্বায়। মানবাধিকার, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও মানবিক বিশ্বের আদর্শ প্রতিষ্ঠায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে শ্রমজীবী মানুষের আত্মনিবেদন।

মহান মে দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শ্রমিক সমাবেশ, শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

মহান মে দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় পত্রিকাগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো দিনটি উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান ও টকশো সম্প্রচার করবে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী মঙ্গলবার সচিবালয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার হচ্ছে শ্রমবান্ধব সরকার। তাই শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার বিভিন্ন যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

নজরুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে ঐতিহাসিক 'মহান মে দিবস' রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে প্রতি বছরের মতো এবারও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

এদিন সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সর্ম্পকিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এইচ এম ইব্রাহিম। অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন ও কেন্দ্রীয় তহবিল হতে দুস্থ শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তার চেক দেওয়া হবে। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার মাঠ পর্যায়ের কার্যালয়গুলো জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে এ দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করবে।

বুধবার বিকেল ৩টায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে জাতীয় শ্রমিক লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হবে শ্রমিক জনসভা।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।


আরও খবর



একসঙ্গে এসএসসি পাস করলেন নাসিরনগরের মা ও মেয়ে৷

প্রকাশিত:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ | ১৬৩জন দেখেছেন

Image

মোহাম্মদ হেদায়েতুল্লাহ  নবীনগর(ব্রাহ্মণবাড়িয়া)প্রতিনিধি:ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়ন পরিষদের ১,২,৩ ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদস্য (মেম্বার) ৪৪ বছর বয়সে পরীক্ষা দিয়ে এসএসসি পাশ করেছেন। এমন খবর জেনে খোঁজ নিতে গিয়ে ফোন করতেই বেশ খুশি নিয়ে বললেন আমার মেয়েও পাশ করেছেন। মা ও মেয়ের একসঙ্গে পাশ করার ঘটনা এলাকায় বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। সবাই ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার নুরুন্নাহার বেগমের প্রশংসা করছেন। নুরুন্নাহারের পরিবারেও বইছে আনন্দের বন্যা। স্বজনরা ছুটে আসছেন তাঁর বাড়িতে।

নুরুন্নাহার বেগম জানান, তিনি আরো পড়তে চান। অনেক বিপত্তি পেরিয়ে তার এই এগিয়ে চলা। নিজের দুইসন্তান কেও পড়ালেখা শিখিয়ে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। পড়া শুনার কোনো বয়স নেই বলে তিনি মনে করেন। মানুরুন্নাহার বেগমও মেয়ে নাসরিন আক্তার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড়া ওয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন।

মা কারিগরি বিভাগ থেকে ও মেয়ে স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। নুরুন্নাহার বেগম জিপিএ ৪.৫৪ ও মেয়ে নাসরিন জিপিএ ২.৬৭ পেয়েছেন। নুরুন্নাহার বেগমের বয়স ৪৪ বছর ও নাসরিনের বয়স ১৮ বছর। কথা হলে নুরুন্নাহার বলেন, ‘অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় বিয়ে হয়ে যায়। শশুর বাড়ির লোক জন ছিলেন রক্ষণশীল। এ অবস্থায় পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারিনি। এক পর্যায়ে মেম্বার নির্বাচিতহই। এ নিয়ে দুইবার মেম্বার। সবার অনুমতি নিয়ে আবার পড়াশুনা করি। কেননা, লেখাপড়ার কোনো বিকল্প নেই বলে মনেকরি।

নুরুন্নাহারের ছোট ভাই স্বপন আহমেদ এ বিষয়ে অনুভুতি ব্যক্ত করতে গিয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েন। বোনের পাস করার খবরে কি যে খুশি হয়েছিতা বলে বুঝানো যাবেনা। একই সঙ্গে ভাগ্নি পাস করলেও তার খবরটি নাদিয়ে ফেসবুকে বোনের রেজাল্টের স্ট্যাটাস দিয়েছি।

  -খবর প্রতিদিন/ সি.ব


আরও খবর



গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৮ মে ২০২৪ | ৯০জন দেখেছেন

Image

লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল ॥৩ মে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের অধিকার ও নিরাপত্তার দাবিতে প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হয়। বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হয়। এই দিবসটি সামনে রেখে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক শতাধিক সংগঠন। ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ২৬তম সাধারণ অধিবেশনের সুপারিশ অনুযায়ী, ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ৩ মে দিবসটিকে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস হিসেবে পালনের স্বীকৃতি দেয়া হয়। এরপর থেকে বিশ্বব্যাপি গণমাধ্যমকর্মীরা ও তাদের বিভিন্ন সংগঠন এই দিবসটি পালন করে আসছে। সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার মৌলিক নীতিমালা অনুসরণ, বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মূল্যায়ন, স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ প্রতিহত করার শপথ গ্রহণ এবং পেশাগত দায়িত্ব পালন কালে ক্ষতিগ্রস্ত ও জীবনদানকারী সাংবাদিকদের স্মরণ ও তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো প্রভৃতি কর্মসূচি এই দিবসে পালন করা হয়।

গণমাধ্যম গণতন্ত্রের সদা জাগ্রত প্রহরী। কোথাও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলে, গণতন্ত্রের মর্যাদা লুন্ঠিত হলে, কিংবা গণতন্ত্রের পবিত্রতা কোন কারণে কলুষিত হলে, গণমাধ্যমের নির্ভিক কন্ঠ সেখানে সোচ্চার হয়ে উঠে। গণমাধ্যম তাই জনগনের পবিত্র গণতান্ত্রিক অধিকার সংরক্ষণে সর্বদা দায়িত্বশীল অভিভাবক। গণমাধ্যম জনগণকে সচেতন করতে সদা সচেষ্ট এবং জনগণ ও সরকারের মধ্যে গণমাধ্যম সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে। জনসাধারণের মতামত/চিঠিপত্র প্রভৃতি প্রকাশের মাধ্যমে জাগ্রত জনমতকে প্রতিফলিত করে সংবাদপত্র পালন করে তার পবিত্র নৈতিক দায়িত্ব। তাই বলা হয় “ওঃ রং ঃযব চবড়ঢ়ষবং চধৎষরধসবহঃ ধষধিুং ংবংংরড়হং” মন্তব্যটি সর্বোতভাবে স্বার্থক। সংবাদপত্র আক্ষরিক অর্থেই সদা জাগ্রত জাতীয় সংসদ।

গণমাধ্যম একটি সমাজ বা জাতির সামগ্রিক জীবনের প্রাত্যহিক দলিল। তাই গণমাধ্যমকে অবশ্যই স্বাধীন ও নিরপেক্ষ হতে হবে। গণমাধ্যম হতে হবে জনসাধারণের স্বার্থ রক্ষার অতন্দ্র প্রহরী। জনগণের স্বার্থে গণমাধ্যম যেমন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে, তেমনি ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্যে করবে সংগ্রাম। গণমাধ্যমকে নির্ভীক ও অকপট হতে হবে। আমাদের দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আশানুরুপ নয়। ক্ষমতাসীন প্রতিটি সরকারই স্বীয় দলের স্বার্থে গণমাধ্যমের উপর আধিপত্য বিস্তারের অপচেষ্টায় লিপ্ত থেকে বারবার গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে ক্ষুন্ন করেছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার দীর্ঘ ৫৩ বছরেও গণতন্ত্র ও গণমাধ্যম কোনটাই শক্তিশালী হতে পারেনি। কারণ দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র ৪৪ মাসের মাথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার পর বারবার সামরিক অভ্যুত্থান, হত্যা, রক্তপাতের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী দেশী ও বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীদের তৎপরতা, অর্থনৈতিক বৈষম্য, যুব সমাজের মধ্যে সৃষ্ট হতাশা, বেকারত্ব, জনস্ফীতি, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি, ঘুষ-দুর্নীতি, দলীয়করণ ইত্যাদি অবক্ষয় স্বাধীনতার মুল লক্ষ্য গণতন্ত্র, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মানবাধিকারকে বিপন্ন করে চলেছে। দেশের সবক্ষেত্রেই ব্যবসায়িক মানসিকতা বিদ্যমান। তোষামোদ, সুবিধাবাদিতা আর মিথ্যাচার সুবিধাভোগী সমাজকে স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতার শিখরে নিয়ে যাচ্ছে। বেশীর ভাগ গণমাধ্যম গণমানুষের মুখপত্র না হয়ে সুবিধাবাদী তল্পিবাহক, দুর্বৃত্ত রাজনৈতিক গোষ্ঠির ক্ষমতারোহন কিংবা ক্ষমতাকে পাকাপোক্তকরণের হাতিয়ারে পরিণত হচ্ছে।
দেশের গণতন্ত্র দুর্বল থাকলে চেষ্টা করলেও গণমাধ্যম শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারে না। কোন সংবাদপত্র বা গণমাধ্যম অথবা গণমাধ্যমকর্মী সমাজে ন্যায় বিচার, আইনের শাসন ও মানবাধিকার রক্ষার আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলেই নানা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তবে শত ঝুঁকির পরেও গণমাধ্যম তাদের দায়িত্ব, সততা, নিষ্ঠা ও নিরপেক্ষতার সাথে পালন করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আর দেশের গণমাধ্যম ও তার কর্মীরা যত দলনিরপেক্ষ, নির্ভীক, শিক্ষিত ও সৎ হবেন, ততই দেশের জন্য মঙ্গলজনক।

গণতন্ত্র বলতে জনসাধারণের শাসন ব্যবস্থাকে বুঝায়। যে শাসন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতা জনগণের হাতে ন্যস্ত থাকে তাকে গণতন্ত্র বলে। গণতন্ত্র অর্থ জনসাধারণের শাসন। জনগণ যখন সকল ক্ষমতার অধিকারী হয় এবং রাষ্ট্র পরিচালনার ভার জনগণের ওপর ন্যস্ত থাকে তখন তাকে গণতন্ত্র বলা হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা গণতন্ত্রকে রাষ্ট্রের সকলে অংশ গ্রহণ করতে পারে এমন এক ব্যবস্থা বলেছেন। কাজেই বলা যায়, যে সরকার বা শাসন ব্যবস্থায় জনমতের প্রধান্য স্বীকৃত হয় এবং জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে শাসনকার্য পরিচালিত হয় তাই গণতন্ত্র। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন গণতন্ত্রের একটি জনপ্রিয় সংজ্ঞা দিয়েছেন “উবসড়পৎধপু রং ধ এড়াবৎহসবহঃ ড়ভ ঃযব ঢ়বড়ঢ়ষব, নু ঃযব ঢ়বড়ঢ়ষব ধহফ ভড়ৎ ঃযব ঢ়বড়ঢ়ষব) তাঁর মতে “জনসাধারণের জন্য, জনসাধারণের দ্বারা পরিচালিত এবং জনসাধারণেই সরকারই হল গণতন্ত্র।

গণতন্ত্র নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করে, ফলে গণতন্ত্রে নাগরিকদের ব্যক্তিত্ব বিকাশের যথেষ্ট সুযোগ ও স্বাধীনতা থাকে। গণতন্ত্র আর গণমাধ্যম একটি আরেকটি পরিপূরক। যেখানে গণমাধ্যম যতবেশী শক্তিশালী যেসখানে গণতন্ত্র বেশী শক্তিশালী। পরমত সহিষ্ণুতাই গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় কথা। আলোচনা, মতপ্রকাশ, ঐক্য, সংহতি হলো গণতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ সিঁড়ি। অন্যের মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। মৌলিক অধিকার হলো মত প্রকাশের স্বাধীনতা। বাংলাদেশের সংবিধানের ধারার ৩৯(১) চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা নিশ্চয়তা দান করা হয়েছে এবং ৩৯ (২) সংবাদপত্র তথা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে।

গণমাধ্যম সমাজের দর্পণ, জাতির বিবেক, জনতার কন্ঠস্বর, রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ ইত্যাদি নানা নামে গণমাধ্যমকে অভিহিত করা হয়। কিন্তু সেই জাতির বিবেকের উপর চলে নানা জুলুম, অন্যায়-অত্যাচার, গণমাধ্যমকর্মীদের উপর করা হয় নির্যাতন, এমনকি তাদের হত্যা করা হচ্ছে। কিন্তু খুনি ও নির্যাতনকারীরা আইনের আওতায় আসছে না, তাদের শাস্তি হচ্ছে না। এই বিষয়ে সাংবাদিক ইউনিয়ন বা সংগঠনগুলোর ঐক্য প্রয়োজন। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও পেশাগত মর্যাদার জন্যে রাজনৈতিক বিশ্বাসের উর্ধ্বে উঠে সকল সাংবাদিক সংগঠনগুলোর ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরি। আইনের শাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সাংবাদিকদের পেশাগত ঐক্যের কোন বিকল্প নেই।
পরিশেষে বলা যায় যে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা অপরিহার্য। তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সম্প্রতি জানানো হয় যে, তথ্য মন্ত্রণালয় সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা ও বর্তমান সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরণ, গণমাধ্যমের সহায়তায় জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, গণমাধ্যম শিল্পের মানোন্নয়ন, সম্প্রচার ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, জাতীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির লালন, বিকাশ ও সংরক্ষণ এবং গণমাধ্যমকর্মীর পেশাগত দক্ষতা ও সেবার মানোন্নয়নের কৌশলগত উদ্দেশ্য অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। সম্মেলনে আরো জানানো হয় যে, বর্তমান সরকার গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতায় বিশ্বাসী এবং গণমাধ্যমকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার সচেষ্ট রয়েছেন। কিন্তু সাংবাদিকগণ পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রায় হামলা ও নানা রকম হুমকীতে শিকার হতে হয়। গত ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি নিজ বাসায় নৃশংসভাবে খুন হন এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনি ও মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার। নিহতদ্বয় স্বামী-স্ত্রী। ছয় বছর বয়সী একমাত্র শিশু পুত্র মাহির সরোয়ার মেঘের সম্মুখে এই সাংবাদিক দম্পত্তি খুন হয়েছেন। কিন্তু আজো খুনীদেরকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধরতে পারেনি, কিংবা চিহ্নিত করতে পারেনি। ২০১১ সালের ২৮ জানুয়ারি পল্টনের নিজ বাসায় খুন হন দৈনিক জনতার সহ-সম্পাদক ফরহাদ খাঁ ও তাঁর স্ত্রী রহিমা খাতুন। বিগত খালেদা-নিজামীর আমলে খুন হন সাংবাদিক মানিক সাহা, হুমায়ুন কবির বালুসহ আরো অনেকে। বর্তমান সরকার গণমাধ্যম কর্মী সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও ‘সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাষ্ট’ গঠনসহ সাংবাদিকদের কল্যাণে কতিপয় প্রসংশনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গণমাধ্যম কর্মী আইনটি সংসদে উপস্থাপিত হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয়  স্থায়ী কমিটিতে আইনটি যাচাই-বাচাইয়ের জন্যে প্রেরণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি জারি করেন নিউজপেপার এমপ্লয়ীজ (কন্ডিশন অব সার্ভিস) অডিন্যান্স জারি করেন। এই আইনের অধীনে সাংবাদিক ও সংবাদপত্র বোর্ড কর্মচারীদের  ওয়েজ বোর্ড  হয়ে আসছিল। কিন্তু ৬ষ্ঠ ওয়েজ বোর্ড গঠনের সময় ধরা পড়লো বিএনপি সরকার কোনো অংশীজনের সাথে আলোচনা না করে এই আইনটি বাতিল করে দিয়েছে। উল্লেখ্য যে, ১৯৭৪ সনের আইনটি সাংবাদিকতা পেশাকে কয়েকটি বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে। এই আইনে সাংবাদিক বা সংবাদমাধ্যমের কর্মচারীদের অধিকার ও বিরোধ নিস্পত্তির বিষয়গুলো শ্রম আইনের মধ্যে রেখেও কিছু বিশেষ মর্যাদা নিশ্চিত করেছিল। এই গুলো হচ্ছেঃ সাংবাদিক বা সংবাদমাধ্যমে কর্মচারীদের জন্য পৃথক ওয়েজ বোর্ড গঠন, পেশার সংজ্ঞায়ন,  বিশেষায়িত বলে কতপিয় বিশেষ সুবিধা  নিশ্চিতকরণ। প্রক্রিয়াধীন  নতুন আইন ১৯৭৪ সালের আইনের মূল চেতনা ধারণ করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি। নতুন আইনে বিশেষ অধিকারগুলো সুনির্দিষ্ট করবে, প্রচলিত শ্রম ও সংশ্লিষ্ট আইনের সাথে বিশেষায়িত বিষয়গুলো সমন্বয় করবে, যেগুলো বিধিতে আনা সম্ভব সেগুলো বিধির জন্য পাঠাবে, যেগুলো ওয়েজ  বোর্ড নির্ধারিত হবে সেগুলো পৃথক করবে, ‘যা বাহুল্য তা’ বাতিল করবে। এভাবেই নতুন আইনটি সংবাদপত্র, টেলিভিশন, অনলাইন,  বেসরকারি বেতার মাধ্যমে সাংবাদিক, আলোকচিত্র সাংবাদিকসহ গণমাধ্যমের সকল কর্মচারীদের অধিকার, নিরাপত্তা, মর্যাদা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি। এই নতুন আইনটি দ্রুত প্রণয়ন ও গেজেট আকারে প্রকাশ এবং গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট বর্তমানে বিদ্যমান আইনসমূহের কার্যকর প্রয়োগ অপরিহার্য। দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

আরও খবর