নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় সাজা ভোগের জন্য আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। এরপর বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে আদালত থেকে পিকআপ ভ্যানে করে তাকে নিয়ে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় পুলিশ।
এর আগে রোববার (২২ মে) বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক শহিদুল ইসলামের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন হাজী সেলিম। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বিচারক আদেশে উল্লেখ করেন, সাজাপ্রাপ্ত আসামি হাজী মোহাম্মদ সেলিম হাইকোর্টের নির্দেশে আজ আত্মসমর্পণ করিয়া জামিনের দরখাস্ত দাখিলপূর্বক আপিল দায়েরের শর্তে জামিনের প্রার্থনা করেছেন। পৃথক দরখাস্ত দাখিল করিয়া কারাগারে ১ম শ্রেণির মর্যাদা প্রদানের ও কারাগারের তত্ত্বাবধানে দেশের উন্নতমানের হাসপাতালে বেটার ট্রিটমেন্টের আদেশের প্রার্থনা করেছেন।
যেহেতু আসামি দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত, সেহেতু আসামিকে জামিন প্রদান সঙ্গত মনে করি না। ফলে আসামির জামিনের প্রার্থনা নামঞ্জুর করা হইল। সাজা ভোগের নিমিত্তে সাজা পরোয়ানা মূলে আসামিকে কারাগারে প্রেরণ করা হোক।
আসামিকে কারাগারে ১ম শ্রেণির মর্যাদা প্রদান ও কারাগারের তত্ত্বাবধানে দেশের উন্নতমানের হাসপাতালে বেটার ট্রিটমেন্ট প্রদানের দরখাস্ত বিষয়ের পক্ষে বিজ্ঞ কৌঁসুলি ও বিপক্ষে বিজ্ঞ পাবলিক প্রসিকিউটরের বক্তব্য শ্রবণ করিলাম। দাবি মতে দরখাস্তকারী আসামি একজন সংসদ সদস্য এবং ভালো চরিত্রের অধিকারী। তাহার সামাজিক মর্যাদা, আসামি যে অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত হইয়াছেন তাহার ধরন ইত্যাদি বিবেচনায় তাহাকে জেলকোড অনুযায়ী ডিভিশন প্রদান কিংবা উন্নতমানের চিকিৎসা প্রদানের প্রয়োজনীয়তা থাকিলে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করা হইল।
এদিন বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক শহিদুল ইসলামের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন হাজী সেলিম। এরপর তার সঙ্গে আসা সমর্থকরা আদালতে প্রবেশ করেন। হাজী সেলিম তাদের কোর্ট থেকে বের হতে হাত ও মুখ দিয়ে ইশারা করেন। এরপর তারা কোর্ট থেকে বের হয়ে যায়। বিকেল ৩টা ১৯ মিনিটে বিচারক এজলাসে ওঠেন। এরপর আসামিকে কাঠগড়ায় উঠতে বলেন। ৩টা ২৩ মিনিটে কাঠগড়ায় ওঠেন হাজী সেলিম। এরপর তার আইনজীবী সাইদ আহম্মেদ রাজা জামিন চেয়ে শুনানি করেন।
এছাড়া কারাগারে উন্নত চিকিৎসা ও প্রথম শ্রেণির ডিভিশন চেয়েও শুনানি করেন আইনজীবী। অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল তার জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে কারাবিধি অনুসারে কারাগারে উন্নত চিকিৎসা ও প্রথম শ্রেণির ডিভিশন দিতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। বিকেল ৩টা ৩৬ মিনিটে কাঠগড়া থেকে নেমে এজলাসে বসেন হাজী সেলিম।
এর আগে আদালতে আত্মসমর্পণ করে যে কোনো শর্তে জামিনের আবেদন করেন হাজী মোহাম্মদ সেলিম।