মিঠুন দাস মিঠু, ক্যাম্পাস প্রতিনিধি, নিটার:সাভারের জাতীয় বস্ত্র প্রকৌশল ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-নিটার এ ২৫শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ রোজ সোমবার দুপুর ২ ঘটিকায় নিটারের কনফারেন্স রুমে ৫৪ তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আয়োজিত এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ড. মোহাম্মদ জুনাইবুর রশীদ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ডিপার্টমেন্ট অফ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ইঞ্জিনিয়ার নুরুন্নবী, ডিপার্টমেন্ট অফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোডাকশন এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এর অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর মোহাম্মদ ফাতেহ আলী খান পান্নী, ডিপার্টমেন্ট অফ কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এর অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ইন্দ্রজিৎ কুমার পাল, ডিপার্টমেন্ট অফ টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং এর লেকচারার তানজিনা রিফাত টুম্পা সহ বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের সম্মানিত বিভাগীয় প্রধান, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ও লেকচারার গন। নিটারের বিভিন্ন ব্যাচের শতাধিক শিক্ষার্থী ও নিটারের কর্মচারীদের উপস্থিতিতে নিটার কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম সাহেবের কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা সভাটির সূচনা হয়।
প্রতিষ্ঠানটির ডিপার্টমেন্ট অফ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার ডিপার্টমেন্টের লেকচারার তানজিনা রিফাত টুম্পার সঞ্চালনায় আলোচনা সভার সূচনালগ্নে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি ওয়ার্ল্ড এর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করে দেখানো হয় যেখানে কিনা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ২৫শে মার্চে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মমতার নির্মম ইতিহাস ও গনহত্যা পরবর্তী ঢাকার থমথমে চিত্র ফুটে উঠে। পরবর্তীতে ২৫শে মার্চের ভয়াল কালরাত্রিতে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর নির্মমতার শিকার তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট শহীদ জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা এর উপর চালানো পৈশাচিক নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করে দেখানো হয়।
আলোচকদের মধ্যে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর জনাব ইঞ্জিনিয়ার নুরুন্নবী বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে একাওরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে শহীদ হওয়া সকলের আত্নার মাগফিরাত কামনা করে বক্তব্য শুরু করেন, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে একাওরের ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করার আগ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে সংগঠিত বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরেন। ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষনের তাৎপর্য তুলে ধরার পাশাপাশি ২৫শে মার্চের ভয়াল কালরাত্রির কথা স্মৃতিচারণ করেন। অতঃপর অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর জনাব মোহাম্মদ ফাতেহ আলী খান পান্নি ওনার বক্তব্যে বিভিন্ন জাতীয় দিবসগুলো শুধু উদযাপনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সেগুলোকে নিজেদের মধ্যে লালন করে বাস্তব জীবনে প্রতিফলন ঘটানোর গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক জনাব ড. মোহাম্মদ জুনাইবুর রশীদ উপস্থিত সকলকে সালাম ও মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে তার বক্তব্য শুরু করেন, বক্তব্যে তুলে ধরেন মোট জনসংখ্যার মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানের জনসংখ্যা বেশি থাকা সত্বেও পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য অধিকাংশ বাজেট বরাদ্দ দিয়ে বৈষম্য সৃষ্টির কথা, সেনাবাহিনীর উচ্চপদগুলোতে নিয়োগে বৈষম্য, ১৯৭০ সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় লাভ করা সত্বেও ক্ষমতা হস্তান্তর না করা, ১৯৭১ সালের ২রা মার্চ কলা ভবনে পতাকা উওোলন ও ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষনের তাৎপর্য তুলে ধরেন। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা লগ্ন থেকে বিজয় অর্জন করা পর্যন্ত বাঙালির আত্নত্যাগের সকল ঘটনাবলী ধাপে ধাপে তুলে ধরেন উপস্থিত শ্রোতাদের নিকট।
সর্বশেষে, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর জনাব ইন্দ্রজিৎ কুমার পাল তার সমাপনী বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু কর্ণারে এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধ কোষ (১০ খন্ড) বইটি রাখার জন্য অনুরোধ জানান। এভাবেই, স্বাধীন সর্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় আত্নত্যাগকারী সকল বীর শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনার মধ্য দিয়ে আলোচনা সভাটির সমাপ্তি হয়।