
বাবুল রানা বিশেষ প্রতিনিধি মধুপুর টাঙ্গাইল:টাঙ্গাইলের মধুপুরে গোলাবাড়ি ব্রিজের পাশে রাস্তার নিচে চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস অটোচালককে খুন করে অটোরিকশা ছিনতাই এর ঘটনার রহস্য উন্মোচনসহ অটোরিকশা উদ্ধার পূর্বক ০৫ জন আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪, ময়মনসিংহ।
গত (২২ এপ্রিল)২০২৩ ঈদের পরের দিন সকালে টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর পৌরসভার কাইতকাই এলাকার টাঙ্গাইল-জামালপুর মহাসড়কের গোলাবাড়ি ব্রীজের পাশে বেগুন ক্ষেতে জনৈক কিশোরের মৃত দেহ পরে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভিকটিমের বড় ভাই রবিন ভিকটিমের ছবি দেখে মধুপুর থানায় গিয়ে মরদেহ সনাক্ত করে।
পরবর্তীতে, ভিকটিমের পিতা মোঃ রফিকুল ইসলাম (৪১), সাং- রুদ্র বয়রা , পোঃ পোগলদিয়া, থানাঃ সরিষাবাড়ী, জেলা- জামালপুর বাদী হয়ে মধুপুর থানার মামলা নং-২৪, তারিখঃ ২৩/০৪/২০২৩ ইং, ধারা- ৩০২/৩৯৪/২০১/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০ দায়ের করেন।
উক্ত ঘটনার সংবাদ প্রাপ্তির পর থেকে র্যাব-১৪, ময়মনসিংহ উক্ত ঘটনাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে হত্যা কান্ডের সাথে জড়িত আসামীদের সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে অধিনায়ক মহোদয়ের নির্দেশক্রমে সিনিয়র সহকারী পরিচালক মোঃ আনোয়ার হোসেন এর উপস্থিতিতে র্যাবের একটি অভিযানিক দল ১৬/০৫/২০২৩ ইং তারিখ ভোর অনুমান পনে ৬টার দিকে জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী থানাধীন বয়রা এলাকা থেকে উক্ত মামলার আসামী ১। মোঃ রকিবুল ইসলাম (১৯), ২। মোঃ আঃ রহিম (২২), ৩। মোঃ ফারুক হোসেন (৩৭), ৪। শফিকুল ইসলাম (৩২), ৫। ফরমান আলী (৪০)’দেরকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, ঘটনার দিন গত ২২ এপ্রিল ২০২৩ খ্রি. তারিখ ঈদের দিন বিকাল ৩ টার দিকে আসামী মোঃ রকিবুল ইসলাম সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিয়া থেকে ভিকটিম মনি‘কে জামালপুর সদর উপজেলার দিকপাইত এলাকায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে ভাড়া করে। পথিমধ্যে, আসামী রকিবুল শফিকুল‘কে অটেরিক্সায় উঠায় এবং তারা দুইজন ঘোরাঘুরির জন্য টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর দিকে রওনা করে। পথিমধ্যে চা পান করার বাহানায় উক্ত আসামীদ্বয় আসামী রহিম ও ফারুকের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে। ইতোমধ্যে উক্ত আসামী রকিবুল ও শফিকুল সময় ক্ষেপন করার জন্য ভিকটিমকে মধুপুরের উদ্দেশ্য যেতে বলে। ইতোমধ্যে আসামী রহিম ও ফারুক মোটরসাইকেল যোগে অটেরিক্সার কাছাকাছি চলে আসে।
পরবর্তীতে, আসামী রকিবুল ভিকটিম ও আসামী শফিকুলকে নামিয়ে দিয়ে অন্য একজন লোককে ওঠানোর জন্য অটোরিক্সা নিয়ে একাই চলে যায়। রকিবুল আসতে দেরি হলে ভিকটিম মনি আসামী শফিকুলকে চাপ দিতে থাকে। ইতোমধ্যে আসামী রহিম ও ফারুক বাইক নিয়ে চলে আসে এবং ভিকটিম মনি আসামী রহিমকে চিনতে পারে এবং ভয় পেয়ে আসামী শফিকুল, রহিম ও ফারুক প্রথমে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং মুখে আঘাত করে টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর পৌরসভার কাইতকাই এলাকার টাঙ্গাইল-জামালপুর মহাসড়কের গোলাবাড়ি ব্রীজের পাশে বেগুন ক্ষেতে ফেলে রেখে যায়। পরবর্তীতে, আসামী রকিবুল ভিকটিমের অটোরিক্সাটি নিয়ে ফরমান সর্দারের নিকট ৪৫,০০০/- হাজার টাকায় বিক্রি করে নিজে ১৮,০০০/- হাজার টাকা রেখে বাকি তিন আসামীকে জনপ্রতি ৭০০০/- টাকা করে দেয় এবং বাকি টাকা আনুষাঙ্গিক খরচ দেখায়।উপরোক্ত ঘটনার মতো যাতে আর কোন ঘটনার না ঘটে সে প্রেক্ষিতে র্যাবের টহল তৎপরতা ও গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত থাকবে।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীণ রয়েছে বলে জানা যায়।
-খবর প্রতিদিন/ সি.ব