
তানোর প্রতিনিধি; কনকনে শীত সাথে হিমেল হাওয়ার কারনে খুব সকালে বিলের জমিতে নামা কষ্টকর হয়ে পড়েছিল। কিন্ত গত বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার এবং রোববারে ঠান্ডা অনেকটাই কম ছিল। সেই ফাকেই কোমর বেধে বিলের জমিতে আগাম বোরো রোপন শুরু করেছেন রাজশাহীর তানোরের কৃষকরা। কাক ডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে রোপন ও জমি তৈরির কাজ। আর রাতে সেচ পাম্প থেকে রোপনকৃত জমিতে সেচ পানি ও তৈরির জন্য পানি নিচ্ছেন কৃষকরা। এককথায় দিন রাত সমান তালে চলছে কৃষি কাজ। তবে টানা কনকনে শীত ও হিমেল বাতাসের কারনে বীজ তলা কিছুটা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বলেও জানান কৃষকরা। এছাড়াও আলু সরিষা পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার হচ্ছে। দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। তারপরও থেমে থাকার অবকাশ নেই। তবে বিদ্যুতের বাড়তি দামে বাড়তি সেচ হারে মরার উপর খাড়ার ঘায়ের মত অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার নিচু এলাকা বলতে বিল কুমারি বা শীবনদী। এই বিলের জমিতে আগাম আলু সরিষা ও আগাম বোর চাষ হয়ে থেকে। যদিও পোষ মাসেই বিলের জমি রোপন হয়ে যায়। কিন্তু এবারে প্রচন্ড শীত অনেকটাই বাগড়া দিয়েছে। টানা ঘন কুয়াসা আর উত্তরের হিমেল হাওয়া কাবু করে দেয় সবাইকে। গত বৃহস্পতিবার, শুক্রবার, শনিবার ও রোববারে তেমন ঠান্ডা না থাকায় কোমর বেধে বোরো রোপন চলছে। কারো রোপন শেয হয়েছে তো কেউ রোপন করছেন।
উপজেলার চান্দুড়িয়া ইউপি, তানোর পৌরসভার কালিগঞ্জ, বুরুজ, জিওল, আমশো, গোল্লাপাড়া, কুঠিপাড়া, হিন্দুপাড়া, তানোর পাড়া, সিন্দুকাই, গুবিরপাড়া, ধানতৈড়, চাপড়া, গোকুল, তালন্দ, সুমাসপুর, হরিপুর ও কামারগা ইউপির, কামারগা, শ্রীখন্ডা, দমদমা, মাঝিপাড়া, বাতাসপুর, পারিশো, দূর্গাপুর, মাদারিপুর,জমসেদপুর, বিহারইল, মাড়িয়া, মালশিরা, কলমা ইউপির কুজি শহর,চন্দনকোঠা এলাকা জুড়ে বিল কুমারি বিলের জমিতে চলছে বোরো রোপনের কাজ।
পৌর সদর গুবিরপাড়া গ্রামের কৃষক সাহেব আলী জানান, গত ১৩ দিন আগে বিলের সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে বোরো রোপন শেষ হয়েছে। রোপনের পরে প্রচুর কোয়াসা, ঠান্ডা সাথে হিমেল বাতাসে ধান গাছের চেহারা লাকচে হয়ে গিয়েছিল, কয়েকদিন ধরে ঠান্ডা না থাকার কারনে চেহারা ভালো লাগছে। তিনি আরো জানান, শাওনের ৬ বিঘা ও মফিজের ২ বিঘা ১০ কাঠা রোপন শেষ হয়েছে। ভূমিহীন কৃষক ফারুক জানান, বিলের নিচে ২৫ কাঠা জমি রোপন করব, বিলের পানি নেমেছে, দুএক দিনের মধ্যে রোপন করা হবে, মজিবর, দেড় বিঘা, সুনিল, ৭ বিঘা, জুল, দেড় বিঘাা রোপন করবেন। শীতলীপাড়া বঙ্গবন্ধু সমবায় সমিতির গভীর নলকুপের সেচ পানির দায়িত্বে থাকা ডলার, শাকির, মমিন জানান, বেশির ভাগ জমি রোপন হয়েছে। সামান্য বাকি আছে। প্রচন্ড শীত না হলে রোপন হয়ে যেত।
কামারগাঁ ইউপির কৃষক আব্দুর রহিম জানান, এই ইউপিতে আগাম বোরো রোপন হয়। প্রায় জমি রোপন হয়েছে। যাদের জমিতে সরিষা কিংবা আলু আছে তাদের রোপন হয়নি। তবে আগাম রোপন হয়,কারন বন্যা হলে ইউপির জমিগুলো ঢুবে যায়। মুলত এজন্যই পোষ মাসেই রোপন শেষ হয়ে যায়।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহ আহম্মেদ জানান, এবারে বোরো চাষের লক্ষমাত্রা ১২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি। এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে রোপন হয়েছে। বিলের জমি রোপন প্রায় শেষের দিকে, উপরের মাঠে জমি তৈরি চলছে বলে জানান তিনি।
আব্দুস সবুর