আদালত প্রতিবেদক:পিছিয়ে গেলো মানিলন্ডারিং আইনে আলোচিত ঠিকাদার এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমসহ আটজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণার দিন। এ জন্য নতুন তারিখ আগামী ১৭ জুলাই ধার্য করেছেন আদালত।
আজ রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম রায় ঘোষণার নতুন এ দিন ধার্য করেন। এদিন আসামিপক্ষের আইনজীবী অধিকতর যুক্তি উপস্থাপন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান এ তথ্য জানান।
রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ১৫ জুন বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম রায় ঘোষণার জন্য ২৫ জুন দিন রেখেছিলেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. মোরাদ হোসেন, মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. শহীদুল ইসলাম, মো. কামাল হোসেন, মো. সামসাদ হোসেন ও মো. আনিছুল ইসলাম। শুনানিকালে আসামিদের কারাগারে থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরলে জি কে শামীমের উত্থান হয়। তিনি নিজেকে যুবলীগ নেতা দাবি করলেও আওয়ামী লীগের এই সহযোগী সংগঠনটি তা অস্বীকার করে।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলার সময় ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর দুপুরে নিকেতনের বাসা থেকে শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ভবন থেকে নগদ এক কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা, ৯ হাজার ইউএস ডলার, ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬০ হাজার টাকার ১০টি এফডিআর, ৩২টি ব্যাংক হিসাবের চেক বই, আটটি আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ পাওয়ার কথা জানানো হয় অভিযান শেষে।
গ্রেপ্তারের সময় র্যাব সদরদপ্তর, সচিবালয়ে ও কয়েকটি হাসপাতালের নতুন ভবনসহ অন্তত ২২টি নির্মাণ প্রকল্পের ঠিকাদারি কাজ শামীমের প্রতিষ্ঠান জিকে বিল্ডার্সের হাতে ছিল। এসব প্রকল্পের ব্যয় বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৬ হাজার কোটি টাকা। পরে সেগুলোর কার্যাদেশ বাতিল হয়। জব্দ করা হয় তার ১৯৪টি ব্যাংক হিসাব।
২১ সেপ্টেম্বর গুলশান থানায় অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনে জি কে শামীমের বিরুদ্ধে মামলা করেন র্যাব-১ এর নায়েব সুবেদার মিজানুর রহমান।
মামলায় বলা হয়, শামীম তার দেহরক্ষীদের সহযোগিতায় দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের টেন্ডারবাজি, মাদক ও জুয়ার ব্যবসাসহ স্থানীয় টার্মিনাল, গরুর হাট-বাজারে চাঁদাবাজি করে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থের মালিক হয়েছেন। বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশেও পাচার করেন তিনি।
তদন্ত শেষে পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবু সাঈদ ২০২০ সালের ৪ অগাস্ট আদালতে জিকে শামীম ও তার সাত দেহ রক্ষীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। সেটি গ্রহণ করে ১০ নভেম্বর বিচার শুরুর আদেশ আসে।
শামীমের বিরুদ্ধে মোট মামলার সংখ্যা তিনটি। এর মধ্যে গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর অস্ত্র আইনে সাত দেহরক্ষী ও তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। মাদক মামলার নিষ্পত্তি এখনও হয়নি।