নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) গতি অবশ্যই ব্যালটের চেয়ে ধীর হবে। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিসিটিভিতে রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচন মনিটিরিংকালে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
রসিক নির্বাচনে অনেক জায়গায় ইভিএম হ্যাং করছে জানালে সিইসি বলেন, ‘অভিযোগটি অসত্য নয়। ইভিএমের গতি অবশ্যই ব্যালটের চেয়ে ধীর হবে। এমনও হতে পারে এটা ইভিএমের সেকেন্ড বা থার্ড জেনারেশন। আর নৌকার গতি, রকেটের গতি সমান নয়। ইভিএমে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ম্যাচিং করিয়ে, বায়োমেট্রিক দিয়ে নিশ্চিত করা হয়। সেটা ব্যালটে হয়ে থাকে না।
এ সময় ভোট পড়ার হারের বিষয়ে সিইসি বলেন, ‘কোথাও ৪৫ শতাংশ, কোথাও ৩৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। গড়ে আমাদের এখানে ৪৫ শতাংশ ভোট কাস্টিং হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘প্রচুর ভিড় আছে। যেহেতু ভোটটা ধীরে হয়, বাইরে ভিড় আছে এবং আগ্রহী ভোটারের সংখ্যা প্রচুর। আমরা বলে দিয়েছি বিকেল সাড়ে ৪টার মধ্যে যারা সীমানার মধ্যে থাকবে রাত যতটাই হোক তাদের সবার ভোট নিতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি এই ভোট পড়ার হার অনেকটা বাড়বে।
সাংবাদিকরা জাতীয় পার্টির (জাপা) মেয়র প্রার্থীর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘জাপার একজনের ভোট দিতে অসুবিধা হয়েছিল। পরে তিনি ভোট দিয়েছেন। আমরা বলেছি প্রযুক্তিতে সমস্যা হতে পারে। অনেক প্রার্থী তাৎক্ষণিকভাবে হয়তো ভোট দিতে পারেননি। পরে দিয়েছেন।’
এদিন ইভিএমে ভোট দিতে গিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয় জাপা মেয়র প্রার্থী মুস্তাফিজুর রহমান মোস্তফাকে। আজ সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে আলমনগর কলেজপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে যান তিনি। সে সময় ইভিএমে ত্রুটির কারণে ভোট দিতে না পেরে ভোট কক্ষ থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জাপা মেয়র প্রার্থী।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল রসিক নির্বাচনে তেমন কোনো অভিযোগ পাননি বলে জানিয়েছিলেন।
রসিক নির্বাচনে মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরসহ মোট প্রার্থী ২৫১ জন। এদের মধ্যে ৯ জন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ছাড়া ১১টি ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৬৮ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ১৮৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক:আগামী ১৭ আগস্ট থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে। বাংলা প্রথম পত্রের মধ্যদিয়ে এই পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। পরীক্ষা চলবে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মো. আবুল বাশার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এই সূচিতে জানানো হয়েছে, পরীক্ষা শুরুর অন্তত ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের আসন গ্রহণ করতে হবে। প্রথমে বহু নির্বাচনী ও পরে সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। উভয় অংশের পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না।
এতে বলা হয়, পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে। প্রোগ্রামিং ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না। কোনো পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে মোবাইল ফোন আনতে পারবে না। পরীক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না।
বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, ২০১০ সাল থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এসএসসি, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হতো। এ সময়সূচিতে বাধা আসে ২০২০ সালে করোনা ভাইরাসের কারণে। করোনার কারণে আগের পরীক্ষা সূচি এলোমেলো হয়ে যায়। ২০২১ সালে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয় ২ ডিসেম্বর এবং ২০২২ সালের পরীক্ষা শুরু হয় ৬ নভেম্বর। পিছিয়ে যাওয়া এ পরীক্ষা ধীরে ধীরে এগিয়ে আনার পরিকল্পনা হাতে নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সিদ্ধান্ত হয় ২০২৩ সালের পরীক্ষা জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় নেওয়া হবে। কিন্তু কলেজগুলো সিলেবাস শেষ করতে না পারায় এ পরীক্ষা এক মাস পিছিয়ে এখন ১৭ আগস্ট হবে বলে জানান বোর্ড কর্মকর্তারা।
অনলাইন ডেস্ক: চলতি মাসের প্রথম ১২ দিনে বৈধ চ্যানেলে ৭৭ কোটি ৩৯ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৮ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা। আজ রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি মাসে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৬ কোটি ৪৫ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে তা ২ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, চলমান মে মাসের ১২ দিনে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে ১২ কোটি ২২ লাখ ২০ হাজার ডলার এবং বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ২ কোটি ৬১ লাখ ৫০ হাজার ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৬২ কোটি ১৯ লাখ ৮০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৬ লাখ ২০ হাজার ডলার।
চলমান ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে টানা ২ বিলিয়ন ডলার করে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। তবে সেপ্টেম্বর থেকে একটানা ৬ মাস দেড় বিলিয়ন ডলারের ঘরে থাকে রেমিট্যান্স প্রবাহ।
গত জুলাইয়ে ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, আগস্টে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার, সেপ্টেম্বরে ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলার, অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার, ডিসেম্বরে ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ ডলার, জানুয়ারিতে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স আসে। আর মার্চে এসেছে ২০১ কোটি ৭৬ লাখ ডলার। সবশেষ এপ্রিলে এসেছে ১৬৮ কোটি ৩৪ লাখ ৭০ হাজার ডলার।
এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে মোট ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১.০৩ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স আসে। আগের অর্থবছরের চেয়ে যা ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২১ অর্থবছরে এসেছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলার।
নিজস্বপ্রতিবেদক:দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার পরও আওয়ামী লীগ জনগণের আস্থা, বিশ্বাস, জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে বলে দাবি করেছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে গণভবনে আওয়ামী লীগের নেতারা তাকে শুভেচ্ছা জানাতে গেলে তিনি এ কথা বলেন। ৪২ বছর আগে ১৯৮১ সালের ১৭ মে তিনি দেশে ফেরেন।
এ সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দেশের জনগণের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে এবং এই দলটির মাধ্যমেই দেশের প্রতিটি অর্জন এসেছে। আওয়ামী লীগ জনগণের সংগঠন এবং এটি জনগণের জন্য কাজ করবে, এটাই আমাদের একমাত্র অঙ্গীকার।
বাকি দলগুলোকে লুটেরা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা কখনোই জনগণের কল্যাণে কাজ করে না। তাই সন্ত্রাসী, খুনি বা যুদ্ধাপরাধীদের দল যাতে জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে- সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
তিনি বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, ভোট চোর ও ডাকাতরা এখন দেশের গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলছে। এখন আমাদেরকে তাদের (ভোট চোরদের) কাছ থেকে গণতন্ত্রের পাঠ শুনতে হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন দলটির নেতারা। ছবি: বাসস
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে আমরা সব সময়ে তাদের পাশে থাকব। আমরা তাদের জন্য আমাদের কাজ অব্যহত রাখব। আমরা জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সর্বদা তাদের পাশে থাকব। আমরা যেভাবে তাদের আস্থা অর্জন করে ক্ষমতায় এসেছি, ঠিক তেমনি আমরা তাদের জন্য আমাদের কাজ করে যাব।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তার দল জনগণের আস্থা, বিশ্বাস ও জনপ্রিয়তা সফলভাবে ধরে রেখেছে। যদিও ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত এত দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থেকে জনগণের আস্থা ধরে রাখা প্রায় অসম্ভব একটি ব্যাপার।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস আমাদের ধরে রাখতে হবে। দেশের মানুষের এই বিশ্বাস ও আস্থাই আমাদের একমাত্র শক্তি। এটা ছাড়া আমাদের আর কোন শক্তি নেই।
দেশে ফিরে শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালের ১৭ মে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিগত ৪২ বছরে দেশ, তথা দল গঠনের প্রচেষ্টায় তাকে সহায়তা করার জন্য দলটির সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।
অনলাইন ডেস্ক: বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত জাহাজ দুর্ঘটনায় টাইটানিক নামের যে বিলাসবহুল জাহাজটি সমুদ্রে ডুবে গিয়েছিল এই প্রথম তার একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র পাওয়া গেছে। এসব ছবি আটলান্টিকের তিন হাজার ৮০০ মিটার (১২ হাজার ৫০০ ফুট) নিচে ডুবে থাকা জাহাজটির ধ্বংসাবশেষের প্রথম ডিজিটাল স্ক্যান যা ‘গভীর সমুদ্র ম্যাপিং’ পদ্ধতি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।
এর ফলে পুরো টাইটানিকের ত্রিমাত্রিক বা থ্রিডি অর্থাৎ দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা! এই তিন মাত্রার দৃশ্য পাওয়া যাচ্ছে, যা আগে কখনো দেখা যায়নি। ছবিগুলো দেখলে মনে হয় আটলান্টিক থেকে সব পানি সরিয়ে যেন সমুদ্রের তলদেশে পরিত্যক্ত বিশাল আকারের এই জাহাজটির দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে।
ছবিতে টাইটানিকের খুঁটিনাটি জিনিসও দেখা যাচ্ছে
আশা করা হচ্ছে, ১৯১২ সালে ডুবে যাওয়া এই জাহাজটিতে কী ঘটেছিল এসব দৃশ্য থেকে সে সম্পর্কে নতুন কিছু জানা যাবে। জাহাজটি তার উদ্বোধনী যাত্রায় সমুদ্রে ভাসমান বিশালাকৃতির বরফ বা আইসবার্গের সঙ্গে ধাক্কা খাওয়ার পর ডুবে গিয়েছিল। এ দুর্ঘটনায় দেড় হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। টাইটানিক যুক্তরাজ্যের সাউদাম্পটন থেকে যাত্রা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যাচ্ছিল।
টাইটানিক বিশেষজ্ঞ পার্কস স্টিফেনসন বলেন, ‘জাহাজটির বিষয়ে এখনো অনেক প্রশ্ন আছে, মৌলিক কিছু প্রশ্ন। যেসবের উত্তর জানা প্রয়োজন। টাইটানিকের বিষয়ে জল্পনা-কল্পনার ওপর ভিত্তি করে কোনো গবেষণা নয়, বরং তথ্যপ্রমাণ ভিত্তিক গবেষণাকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এই মডেল বড় ধরনের প্রথম কোনো পদক্ষেপ।’
শতাধিক বছর ধরে পানির নিচে পড়ে থাকার পরেও টাইটানিকের সামনের অংশ দেখলেই চেনা যায়
সমুদ্রের তলদেশে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের প্রথম সন্ধান পাওয়া যায় ১৯৮৫ সালে। এরপর থেকে জাহাজটি নিয়ে ব্যাপক গবেষণা হয়েছে। কিন্তু এটি এতো বিশাল ও সমুদ্রের গভীরে এতো অন্ধকার যে ক্যামেরা দিয়ে এতদিন এর যেসব ছবি তোলা হয়েছে সেগুলোর সবই ছিল এই ক্ষয়িষ্ণু জাহাজের কিছু অংশের ছবি বা স্ন্যাপশট। তবে কখনোই ডুবে যাওয়া পুরো জাহাজের ছবি পাওয়া যায়নি। এখন এই নতুন অনুসন্ধানে সমগ্র টাইটানিকের ছবি পাওয়া গেল।
সমুদ্রের তলায় যেভাবে পড়ে আছে
দেখা যাচ্ছে, সমুদ্রের তলায় জাহাজটি দুটো অংশে ভাগ হয়ে পড়ে আছে। জাহাজের অগ্রভাগ যেখান থেকে বাঁকা হতে শুরু করে ওই অংশ এবং জাহাজের পশ্চাদভাগ। এই দুটো অংশের মধ্যে দূরত্ব ৮০০ মিটার (দুই হাজার ৬০০ ফুট)। ভেঙে যাওয়া জাহাজটির আশপাশে প্রচুর ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে।
২০২২ সালের গ্রীষ্মকালে ম্যাগেলান লিমিটেড নামে একটি ডিপ-সি ম্যাপিং কোম্পানি এবং আটলান্টিক প্রোডাকশন্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান যারা এ বিষয়ে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করছে তারা যৌথভাবে এসব ছবি তুলেছে।
নিমজ্জনযোগ্য একটি বিশেষ জাহাজে করে একদল কর্মী এই জরিপ পরিচালনা করেছে যা রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ মিলিয়ে পুরো টাইটানিকে ছবি তুলতে তারা ২০০ ঘণ্টারও বেশি সময় ব্যয় করেছে।
নিমজ্জিত জাহাজের প্রত্যেকটি কোণ থেকে তারা সাত লাখেরও বেশি ছবি তুলেছে যেগুলোর সাহায্যে পুরো টাইটানিকের একটি ত্রিমাত্রিক বা থ্রিডি ছবি তৈরি করা হয়েছে।
জাহাজের পেছনের অংশ
এই অভিযানের পরিকল্পনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন ম্যাগেলান লিমিটেডের গেরহার্ড সেফার্ট। তিনি বলেন, এখনো পর্যন্ত পানির নিচে ছবি তোলার যতো প্রকল্প তিনি পরিচালনা করেছেন তার মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড়।
তিনি আরও বলেন, ‘গভীরতা প্রায় চার হাজার মিটার। আমাদের সামনে ছিল এক বিশাল চ্যালেঞ্জ। একইসঙ্গে সেখানে পানির স্রোতও আছে। আমাদের কোনো কিছু স্পর্শ করার অনুমতি ছিল না, যাতে জাহাজের ধ্বংসাবশেষের আরও ক্ষতি না হয়। আরেকটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আপনাকে প্রত্যেক বর্গসেন্টিমিটারের ম্যাপিং করতে হবে। এমনকি জাহাজের যেসব অংশ আগ্রহ-উদ্দীপক নয় সেগুলোরও। যেমন যেখানে ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে সেখানকার মাটির ছবি। কারণ জাহাজের বিভিন্ন অংশকে জোড়া দেওয়ার জন্য এগুলোও ছবি প্রয়োজন।
টাইটানিকের যা কিছু দেখা যাচ্ছে
ছবিতে টাইটানিকের বিশালত্বের পাশাপাশি এই জাহাজের একটি প্রপেলারের সিরিয়াল নম্বরের মতো ছোটখাটো বিষয়ও ধরা পড়েছে। জাহাজটির সম্মুখভাগে মরিচা ধরে ঢাকা পড়ে গেছে। তার পরেও শতাধিক বছর আগে ডুবে যাওয়া এই জাহাজটিকে চেনা যায়। এর ওপরেই রয়েছে জাহাজের ডেক যেখানে একটি গর্ত রয়েছে। সেখান থেকে একটা শূন্যতা দেখতে পাওয়া যায় যেখানে একসময় ছিল জাহাজের বিশাল সিঁড়ি।
আর জাহাজের পশ্চাদভাগে বিভিন্ন ধাতব পদার্থের জঞ্জাল। জাহাজের এই অংশটি সমুদ্রের তলদেশে পড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ধসে পড়ে। টাইটানিকের আশপাশে বিভিন্ন জিনিস ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। এসবের মধ্যে রয়েছে জাহাজ থেকে খসে পড়া অলঙ্কৃত ধাতব বস্তু, মূর্তি এবং মুখ খোলা হয়নি এরকম শ্যাম্পেনের বোতল। সেখানে ব্যক্তিগত জিনিসপত্রও রয়েছে। ছবিতে দেখা যায়, সমুদ্রের তলানির ওপর অসংখ্য জুতা পড়ে আছে।
পার্কস স্টিফেনসন, যিনি বহুবছর ধরে টাইটানিকের ওপর গবেষণা করছেন। তিনি বলছেন, ‘এসব ছবি প্রথমবার দেখে তিনি ‘বিস্মিত’ হয়েছিলেন। আপনি জাহাজের এমন ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাচ্ছেন যা কখনও দেখা সম্ভব হয়নি। এবং আপনি ডুবন্ত পুরো জাহাজটিকে দেখতে পাচ্ছেন। আশপাশের পরিবেশসহ বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে আপনি এটাকে দেখতে পাচ্ছেন। আপনি যা দেখতে পাচ্ছেন এটাই এখন এই জাহাজের সত্যিকারের অবস্থা।
তিনি বলেন, ‘এসব ছবি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখলে ১৯১২ সালের ওই ভয়াবহ রাত্রিতে টাইটানিকের ক্ষেত্রে মূলতই কী ঘটেছিল ওই বিষয়ে নতুন কিছু ধারণা পাওয়া যেতে পারে। আইসবার্গের সঙ্গে কেমন করে সংঘর্ষ হয়েছিল ওই বিষয়ে মূলত আমাদের ধারণা নেই। আমরা এও জানি না, সিনেমাতে যেমন দেখানো হয়েছে সেরকম করে জাহাজের সামনের একপাশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছিল কী না। জাহাজের পেছনের অংশ গবেষণা করলে টাইটানিক কিভাবে সমুদ্রের তলদেশে আঘাত হেনেছিল সে বিষয়েও ধারণা পাওয়া যেতে পারে।’
সমুদ্রের তলায় পড়ে থাকা টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ, পেছনের অংশ
সমুদ্রের পানিতে ডুবে যাওয়া জাহাজের ক্ষয় অব্যাহত রয়েছে। পানিতে থাকা অণুজীব বা জীবাণু ক্রমশই এটিকে খেয়ে ফেলছে। এ ছাড়া এর বিভিন্ন অংশ ক্রমশই আলাদা হয়ে খসে পড়ছে।
সমুদ্রে এ রকম একটি দুর্ঘটনার কারণ বুঝতে সময় যে ক্রমশ ফুরিয়ে আসছে ইতিহাসবিদরা এ বিষয়েও সচেতন। কিন্তু এখন যেসব ছবি পাওয়া গেল, সেখান থেকে জাহাজের খুঁটিনাটি বিষয়ও বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা করে দেখতে পারবেন। আশা করা হচ্ছে যে এখন হয়তো টাইটানিকের আরও অনেক গোপন বিষয় বের হয়ে আসবে। সূত্র: বিবিসি বাংলা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রিয়াসুস সতর্ক করে বলেছেন, বিশ্বকে পরবর্তী মহামারির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এমনকি এটি কোভিড-১৯ মহামারীর চেয়েও মারাত্মক হতে পারে বলে জানান তিনি।
আজ বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৭৬তম সভায় এক প্রতিবেদন পেশ করার সময় এসব কথা বলেন তেদরোস।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী করোনা সম্পর্কিত স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে তা বিশ্বব্যাপী এই ভাইরাসের স্বাস্থ্য হুমকির সমাপ্তি নয়।
তিনি বলেছেন, ‘বিশ্বে করোনাভাইরাসের আরেকটি ভ্যারিয়েন্ট উদ্ভূত হওয়ার হুমকি এখনও রয়ে গেছে। যা নতুন করে এই রোগ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়াতে পারে। এর ফলে মারাত্মক শঙ্কাসহ নতুন করে আরও রোগজীবাণু উদ্ভূত হওয়ার হুমকিও রয়ে গেছে।
ডব্লিউএইচও’র প্রধান বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) অধীনে স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত লক্ষ্যগুলো অর্জনের বিরুদ্ধে কোভিড-১৯ উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে, যার সময়সীমা ২০৩০ সাল পর্যন্ত। এছাড়া করোনা মহামারি ২০১৭ বিশ্ব স্বাস্থ্য সমাবেশে ঘোষিত ট্রিপল বিলিয়ন লক্ষ্যমাত্রার অগ্রগতিকেও ক্ষতির মুখে ফেলেছে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহুান শহরে করোনা ভাইরাসের প্রথম উৎপত্তির খোঁজ পাওয়া যায়। এর কিছুদিনের মধ্যেই পুরো দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস।