Logo
আজঃ রবিবার ২৬ মার্চ ২০২৩
শিরোনাম

গুরু রবিদাসজী’র ৬৪৬ তম জন্মজয়ন্তীর ডাক : জাতপাত নিপাত যাক

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০২ ফেব্রুয়ারী 2০২3 | হালনাগাদ:রবিবার ২৬ মার্চ ২০২৩ | ৮৮জন দেখেছেন

Image

লেখক : শিপন রবিদাস প্রাণকৃষ্ণ: ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ গুরু রবিদাসজী’র ৬৪৬ তম জন্মজয়ন্তী। ভক্তিবাদী আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা, জাতপাতের বিরুদ্ধে আজন্ম সংগ্রামী, সন্ত শিরোমণি রবিদাসজী। স্বতন্ত্র ভাষা, সংস্কৃতি, প্রথা, বিশ্বাস ও বর্ণমালায় সমৃদ্ধ রবিদাস জনগোষ্ঠীর অন্যতম প্রধান ও পরম পূজনীয় উৎসব হলো মাঘী পূর্নিমা বা গুরু রবিদাসজী’র জন্মজয়ন্তী। বাংলাদেশ, ভারত, নেপালসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত রবিদাসীয়দের নিকট এই তিথিটি অত্যন্ত আনন্দের, শ্রদ্ধার আর ভক্তির সাথে পালনের। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় রবিদাসীয়গণ গুরুগাদী পূজা, রাতভর ভজন কীর্তন, আলোচনা সহ বিভিন্ন আয়োজনে পালন করে থাকেন এই উৎসবটি। উত্তর ভারতের বারানসীর অন্তর্গত কাশীর নিকটবর্তী শ্রী গোবর্দ্ধনপুর গ্রামে ১৩৭৭ খ্রিস্টাব্দের (মাঘ সুদী ১৫ বিক্রম সংবত ১৪৩৩) মাঘ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে রবিবার দিন এক চর্মপাদুকা নির্মানকারী পরিবারে জন্মগ্রহন করেন এই পরম সমাজ সংস্কারক। তৎকালে কাশী ছিল রাজা নগর মহলের রাজ্যভুক্ত। সন্ত রবিদাসজী (স্থানভেদে ভক্ত রুহিদাস, রাইদাস ও রাভিদাস নামেও পরিচিত) এর পিতা সন্তোখ দাস ছিলেন চর্মপাদুকা নির্মানকারী গোত্রের দলপিতা। মাতা শ্রীমতি কালসী দেবী, যিনি পরলোকগমন করেন যখন রবিদাসজীর বয়স মাত্র ৫ বছর। গুরুজীর পিতামহ কালুরাম, পিতামহী শ্রীমতি লাখপতি দেবী, স্ত্রী লোনা দেবী ও একমাত্র পুত্রের নাম বিজয় রবিদাস।


সন্ত রবিদাসজী হচ্ছেন ভারতবর্ষের “মধ্যযুগের ভাববিপ্লব” এর একজন অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। তিনি “তথাকথিত নিম্ন বর্ণে” জন্মগ্রহন করেছিলেন কিন্তু জ্ঞানে ও প্রজ্ঞায় ছাপিয়ে গিয়েছিলেন উচ্চবর্ণের লোকদের। তিনি সকল প্রকার বর্ণবাদ, জাতিভেদ প্রথা, ধর্মীয় গোঁড়ামী (ভেদাভেদ) ও উগ্রপন্থার বিরোধী ছিলেন এবং সারাজীবন লড়াই করেছেন এগুলোর বিরুদ্ধে। তিনি সবার মাঝে প্রচার করতেন সাম্য, প্রেম ও সম্প্রীতির বাণী। গুরুজীর আধ্যাত্মিক শক্তির প্রকাশ হয় তাঁর জন্মের ক্ষণ থেকেই। তাঁর বৃদ্ধা ও ক্ষীণদৃষ্টিসম্পন্ন ধাত্রীমাতা নবজাতক রবিদাসজীর দিকে তাকানো মাত্রই দৃষ্টিশক্তি ফিরে পান এবং উনার ভাষ্যমতে এই শিশুটি ছিল অন্যান্য শিশুর চেয়ে আলাদা রকমের। বাল্যকালে রবিদাসজীর পিসিমা তাঁর জন্য একটি চামড়ার খরগোশ নিয়ে এসেছিলেন। গুরুজীর  চরণস্পর্শে এটি প্রান ফিরে পায় এবং বালক রবিদাসজীর সাথে দৌড়াতে আরম্ভ করে। এমন অলৌকিক ঘটনায় আশ্চর্যান্বিত হয়ে সকলে মিলে বালক রবিদাসজীর চরণপদ্মে প্রণিপাত করেন। এছাড়াও তাঁর আধ্যাত্মিকতার প্রমাণ মেলে ষাটোর্ধ বয়সী অন্ধ অথচ চরকায় সুতা কাটা অবস্থায় কর্মবতী (রবিদাসজীর পিতামহী লাখপতির বান্ধবী) এর চোখস্পর্শপূর্বক দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে। পন্ডিত সারদানন্দের বাড়িতে নির্মিত পাঠশালায় হাতেখড়ি নিতে গিয়ে নিজেই যখন প্রত্যেকটি অক্ষর ও বর্ণের ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন তখন শিক্ষাগুরু নিজেই আশ্চার্যান্বিত হয়ে শিষ্যকে শ্রদ্ধা করতে শুরু করলেন। একবার পন্ডিত সারদানন্দের শিশুপুত্র আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু শিশুটির সাথে মৌখিক চুক্তি অনুযায়ী লুকোচুরি খেলায় পালা অনুসারে ঐ শিশুটির বালক রবিদাসজীকে খুঁজে বের করার কথা ছিল। প্রিয়সখার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে তাঁর শবপাশে বসে গুরুজী তাকে ঘুমিয়ে না থেকে চুক্তি অনুযায়ী খেলার আহ্বান জানান। তখন গুরুজীর আধ্যাত্মিক ক্ষমতাবলে তার সখা জীবিত হয়ে খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করে। তথাকথিত নিচুজাতির বালক রবিদাসজীর সাথে ব্রাহ্মণবালক রামলাল খেলাধুলা করার অপরাধে প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে রামলালের পিতামাতাকে সাবধান করে দেয় স্থানীয় ব্রাহ্মণসমাজ। এতে কর্ণপাত না করায় রামলালকে ক্ষুধার্ত সিংহের খাঁচায় নিক্ষেপ করা হয়। কিন্তু দেখা গেল রবিদাসজী খাঁচার ভেতর বসে আছেন আর তার আধ্যাত্মিক ক্ষমতাবলে সিংহ শান্তভাব ধারণপূর্বক রামলালকে প্রণাম করলেন। এছাড়াও গুরুজীর সাথে অসৌজন্যতামূলক আচরণের ফলে জনৈক ধন্যাঢ্য শেঠজীর কুষ্ঠরোগাক্রান্ত হবার ঘটনা, চিতোরের রানী ও রাজস্থানের রাজকন্যা মীরাবাঈয়ের গুরুজীর নিকট দীক্ষাগ্রহন, রবিদাসজীর পিতার মৃতদেহ সৎকারে ব্রাহ্মণদের বাধার মুখে নাগওয়াতে সৎকারের সময় গঙ্গা নদীর আগমন, গুরুজীর অন্নদান অনুষ্ঠানে গঙ্গাদেবীর কুমারীরূপে আবির্ভাব, গুরুজীর সাথে সম্রাট বাবরের দর্শণ ও পরামর্শগ্রহন, কবীরসাহেব, শিখধর্মের প্রবর্তক গুরুনানকজী এবং আলাওয়াদী রাজা, রাজা চন্দ্র প্রতাপ, গোরক্ষনাথ, সদনা পীর, সহিত সংলাপের ঘটনায় গুরুজীর আধ্যাত্মিক ক্ষমতার প্রমাণ মেলে বহুবার।

পৌরাণিক হিন্দু শাস্ত্রানুসারে ঈশ্বরের পূজার্চনার অধিকার ছিলো কেবলমাত্র ব্রাহ্মণদের। ব্রাহ্মণের চরণধৌত জল পান করলে মানবজীবনের সর্বপাপ ধুয়ে মুছে যায়, তাদেরকে দুগ্ধবতী ধেনুদান করলে লোম সংখ্যক বর্ষ গোলকে বাস করা যায়- শাস্ত্রমতে এমনটাই বিশ্বাস প্রচলিত ছিলো সর্বত্র। এমনকি সংসারে ধনরত্ন, স্ত্রী, কন্যা সবকিছুতেই ব্রাহ্মণের অগ্রাধিকার। শুদ্র কেবলমাত্র ব্রাহ্মণের উচ্ছিষ্ঠ ভোগ করবে এবং তাদের পরিত্যক্ত কৌপিন ব্যবহার করবে, সর্বোপরি পশুর ন্যায় জীবনযাপন করে ভবলীলা সাঙ্গ করবে। এমন বিশ্বাসের বিরোধিতা করা মানেই নাস্তিকতার সামিল হিসেবে গণ্য করা হতো। এমন এক প্রতিকূল পরিবেশ-পরিস্থিতিতে রবিদাসজীর মতো একজন তথাকথিত অস্পৃশ্য ও অব্রাহ্মণ ব্যক্তি ঈশ^রের ভজন-সাধন-পূজন করবে এমন বিষয় কতটা ঔদ্ধত্য, অপরাধ ও মহাপাপ হিসেবে পরিগণিত হতো তা সহজেই অনুমেয় বটে। আসলে ভক্তির ঠাকুর কখনো কোন প্রথার জালে আবদ্ধ থাকেন না, বাস করেন না কোন শাস্ত্র পুথিতে। ঈশ্বরগতপ্রাণ রবিদাসজী তৎকালীন জটিল পূজা পদ্ধতি পরিহারপূর্বক সহজসাধ্য ভজনের সূচনা করেন যা ছিলো মূলত ভক্তিকেন্দ্রীক। যার ফলস্বরূপ বর্ণবাদীদের প্রাচীর ভেঙ্গে লাখো মানুষ তার নৈকট্যলাভের আশায় আসতে থাকেন। এতে করে যে শুধুমাত্র ব্রাহ্মণদের বর্ণশ্রেষ্ঠতাকে আঘাত করা হচ্ছিলো তা নয়, বরং তাদের অর্থনৈতিক ক্ষতিসাধনও হয়েছিল সন্দেহাতীতভাবেই। ব্রাহ্মণেরা তাঁকে পূজা অর্চনা করতে নিষেধ করেন। এত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও রবিদাসজী মানবমুক্তির লড়াইয়ে স্বোচ্চার থেকেছেন। জাতপাতের বিরুদ্ধে লড়েছেন। লিখে গেছেন অসংখ্য পদ, দোহা, ভজন। যার অধিকাংশই শিখ ধর্মের প্রধান ধর্মগ্রন্থ “গুরু গ্রন্থ  সাহেব” এ লিপিবদ্ধ রয়েছে।


জগৎগুরু রবিদাস মহারাজজী কে ভক্তির শিরোমণি মেনে নিয়ে সন্ত গুরু কবীর দাস জী বলেছেন -


"সাধন মে রবিদাস সন্ত হে, সুপচ ঋষি সো মানিয়া।

হিন্দু তুরখ দুই দিন বনে হে, কছু নেহি পেহচানিয়া।।"


অর্থাৎ : সন্তদের মধ্যে মহান হলেন সন্তগুরু রবিদাস মহারাজজী, যাকে সারা বিশ্ব এক মহান সন্ত ঋষি বলে মেনে নিয়েছেন। তৎকালীন সময়ে হিন্দু-মুসলমান একই সাথে তাঁর সামনে নতমস্তক হয়ে তাঁকে গুরু রূপে স্বীকার করে নিয়েছিলেন।


"রবিদাস চামারু উসততি করে।

হরি কীরতি নিমখ ইক গায়ি।।

পতিত জাতি উতমু ভাইয়া।

চারু বরণ পএ পগি আয়ি।।"


সৎগুরু রামদাসজী বলেছেন যে- গুরু রবিদাসজী, এক ঔঁকার পরমাত্মার এমন ভক্তি, আরাধনা এবং উপমা করেছেন যে তিনি নিজেই পরমাত্মার রূপ হয়ে গিয়েছেন। তৎকালীন সমাজের তথাকথিত নীচু জাতিতে জন্ম নেওয়া সত্ত্বেও তাঁর ভক্তি ও আধ্যাত্মিকতার জন্য সমাজের চার বর্ণ যথা - ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শুদ্র সকলেই তাঁর চরণে নতমস্তক হয়েছিলো।


সৎগুরু অর্জুন দেব মহারাজ তাঁর উপমা করেছেন -


''ঊঁচ তে ঊঁচ নামদেও সমদরশী।

রবিদাস ঠাকুর বাণী আঈ।।"


অর্থাৎ : উচ্চ থেকে উচ্চ সমদৃষ্টি সম্পন্ন সৎগুরু নামদেব জী হয়েছেন এবং  সৎগুরু রবিদাস জী এই সংসারে প্রভু রূপে এসেছেন।


জগৎগুরু রবিদাসজীর মানবতার প্রতি উপকার কে নিজের বাণী দ্বারা, সন্ত পীপাজী এভাবে বর্ণনা করেছেন -


"যে কলি রৈদাস কবীর না হোতে, 

লোগ বেদ অরু কলিযুগ মিলি কর

ভগতি কো রসাতল দেতে।"


অর্থাৎ : যদি সৎগুরু রবিদাস জী ও সৎগুরু কবীরদাস জী যথাসময়ে অবতারিত না হতেন, তাহলে তৎকালীন উচ্চবর্গ, বেদ আর কলিযুগীয় বিচারধারাতে ভক্তিকে পাতালে নিয়ে গিয়ে স্থান দিতেন।


জগৎগুরু রবিদাস জী তাঁর বাণীতে বলেছেন -


"মেরী জাতি কুট বালা ঢোর ঢোবন্তা

নিতহি বানারসী আস পাসা।

অব বিপ্র পরধানু তিহি করহি ডঁডউতি

তেরে নাম সরণায়ি রবিদাসু দাসা।।"


অর্থাৎ : আমার জন্ম সেই মানুষদের মধ্যে হয়েছে, যারা বানারসের কাছাকাছি প্রতিদিন মৃত পশুদের নাড়াচাড়া করে। কিন্তু আমি, প্রভূর নামের শরণ নিলাম আর আজ বিপ্রদের প্রধান লোকেরা আমাকে দন্ডবৎ হয়ে নমস্কার করে।  


গুরু রবিদাসজী’র বিখ্যাত বাণী, 

“মন চাঙ্গা, তো কঠৌতি মে গঙ্গা।”

“উংচে কুল কারণৈ ব্রাহ্মণ কোনো না হোই। জও জানোহি ব্রহ্ম-আত্মা রবিদাস কহে ব্রাহ্মণ সোই।।”

“তু হাজরা হুজুর যোগ ইক, অউর নাহি হৈং দুজা। জিসকে এক আসরা নাহি, কেয়া নামাজ, কেয়া পূজা।।”


কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও রবিদাসজীকে নিয়ে লিখেছেন “প্রেমের সোনা” কবিতা। লালন সাঁইজীর কন্ঠেও গুরু রবিদাসজী’র পংতি করবার প্রমাণ মেলে। তাতে গুরু রবিদাসজী’র মহত্ত্বেও বিশালত্ব বিষয়ে অনেকটাই ধারণা পাওয়া যায় অনায়াসেই।


মোটাদাগে বলতে গেলে বলা যায়, সারা পৃথিবীর চিরদুখী, চিরবঞ্চিত ও অবহেলিত মেহনতি মানুষের মুখপাত্র ছিলেন গুরু রবিদাসজী। তিনি আজীবন সমাজের পশ্চাদপদ অংশের সুখ-দুখের কথা বলার প্রতিনিধিত্বের দ্বায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়েছিলেন নিজ দ্বায়িত্ববোধের জায়গা থেকেই। তৎকালীন সময়ে ভারতবর্ষের তথাকথিত অস্পৃশ্য অংশকে দীর্ঘদিনের মানবসৃষ্ট বৈষম্যজাল ভেদ করে সত্য ও সুন্দরের পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য প্রণোদনা প্রদান করেন। গুরুজীর অসংখ্য অমৃত সমান বাণী পথভ্রষ্ট জাতিকে আলোর পথ দেখাতে পারে। অসাম্প্রদায়িক, শোষণমুক্ত ও জাতপাতহীন সমাজ গঠনের ক্ষেত্রে রবিদাসজী’র জীবনাদর্শ অবশ্য অনুসরনীয়। গুরু রবিদাসজী’র মানবতাবাদী চেতনা ছড়িয়ে পড়ুক সবখানে। তবেই সমাজের কূপমন্ডুকতা ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প হতে মুক্তি মিলবে। রবির আলোয় দূরীভূত হোক সকল আঁধার। রবিদাসীয় চেতনার জয় হোক।



আরও খবর



ঝিনাইদহে ৬৮ তরুণ-তরুণী ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২১ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ২৬ মার্চ ২০২৩ | ৪০জন দেখেছেন

Image

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ;ঝিনাইদহে মাত্র ১২০ টাকায় আবেদন করে পুলিশে চাকরি পেয়েছেন ৬৮ তরুণ-তরুণী। গত রোববার রাত ১০টার দিকে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে চূড়ান্ত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশিকুর রহমান।

এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন যমজ দুই ভাই হাসান ও হুসাইন। বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ধলহরাচন্দ্র গ্রামে। বর্গাচাষির সন্তান তারা। এখনো তারা বিশ্বাস করতে পারছে না যে, মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশের চাকরি পেয়েছেন।

বাবা হারা শাহরিয়ার জোবায়েরের বাড়ি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাকড়ি গ্রামে। পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি হওয়ায় আবেগে আপ্লুত তরুণ বলেন, ‘আমি আমার শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে কাজ করব।’

মেধা ও যোগ্যতায় উত্তীর্ণ কৃষকের মেয়ে আঁখতারা খাতুন জানান, পুলিশে চাকরি পেতে টাকা লাগে না। এখন যোগ্যতাই মূল চাবিকাঠি।

আঁখতারা খাতুনের বাবা আখের আলী বলেন, ‘আমাদের বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুরে। এখান থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরে। টাকা দিয়ে চাকরি কোনোভাবেই আমাদের পক্ষে সম্ভব না। বিনা পয়সায় আমার মেয়ের চাকরি হয়েছে। আমি খুব খুশি।’

জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশিকুর রহমান জানান, মোট ৬৮ জনের চাকরি হয়েছে। তার মধ্যে ১০ জন মেয়ে আর ৫৮ জন ছেলে রয়েছে। কনস্টেবল নিয়োগে গত ২, ৩ ও ৪ মার্চ ২৩৪৮ চাকরি প্রার্থী প্রাথমিক পরীক্ষায় অংশ নেন। এর মধ্যে শারীরিক সক্ষমতা অর্জন করেন ৪১৮ চাকরি প্রার্থী। গেল ৯ মার্চ তাদের মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ১৬৪ জন। আর ১৯ মার্চ রোববার মৌখিক পরীক্ষা শেষে চূড়ান্ত ভাবে উত্তীর্ণ হন ৬৮ জন।

তিনি বলেন, ‘আইজিপি স্যারের নির্দেশে সর্বোচ্চ সততার সঙ্গে এ পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হয়। যারা চাকরি পেয়েছেন তারা সবাই নিজ মেধা আর যোগ্যতার ভিত্তিতে পেয়েছেন। চাকরিপ্রাপ্তরা দেশের সেবায় সব সময় সচেষ্ট থাকবেন বলে প্রত্যাশা করি।’


আরও খবর



বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে ট্রানজিট চুক্তি সই

প্রকাশিত:বুধবার ২২ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ২৫ মার্চ ২০২৩ | ৬৬জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক ;বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে ট্রানজিট সুবিধায় যানবাহন চলাচলের বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তির ফলে উভয় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সহজ হবে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

আজ বুধবার ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির শিরোনাম হচ্ছে ‘প্রটোকল অব দ্য এগ্রিমেন্ট অন দ্য মুভমেন্ট অব ট্রাফিক ইন ট্রানজিট বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড ভুটান’।

বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও ভুটানের বাণিজ্যমন্ত্রী কর্মা দরজি এই চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

এ চুক্তিকে যুগান্তকারী আখ্যা দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘ভুটানের সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তির বিষয়টি কেবিনেট বৈঠকে চূড়ান্ত হয়। ভুটানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুবই ভালো।’

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ‘এ চুক্তির ফলে ভুটান আমদানি-রপ্তানির প্রয়োজনে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে পারবে। ভুটানেও আমাদের রপ্তানি বাড়বে।’


আরও খবর



নির্বাচনের বছরে আমাদের তথ্যই কথা বলবে: দুদক

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২১ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ২৫ মার্চ ২০২৩ | ৬৩জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক ;নির্বাচনের বছরে দুদক চোখ-কান খোলা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ। আজ মঙ্গলবার ২০২২ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুদক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান ও মো. জহুরুল হক এবং দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, নির্বাচনের বছরে সব প্রার্থীর হলফনামায় যে সম্পদ বিবরণী থাকে তা খতিয়ে দেখবে দুদক। এ বছর চোখ-কান খোলা রাখবে সংস্থাটি, প্রভাবমুক্ত থেকে কাজ করবে। আগামী বছরে দুদকের কাজে আরও গতিশীলতা আনার জন্য কাজ করা হচ্ছে।

রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে দুদক ঠিকমতো কাজ করছে না, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘মামলা, তদন্ত, অনুসন্ধান সব কিছুই বেড়েছে। আমাদের তথ্য কথা বলবে। তারা তাদের বক্তব্য দিয়েছে। আমরা তথ্য দিলাম, এগুলো সংরক্ষিত আছে। আপনারাই বিবেচনা করবেন।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, তফসিলভুক্ত না হওয়া এবং দুর্বল তথ্য-প্রমাণের কারণে ২০২২ সালে আসা ৯৫ শতাংশেরও বেশি অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগই অনুসন্ধানের জন্য আমলে নেয়নি সংস্থাটি। গত বছর দুদকে জমা পড়ে ১৯ হাজার ৩৩৮টি অভিযোগ। এসব যাচাই-বাছাই শেষে অনুসন্ধানের জন্য সংস্থাটি হাতে নিয়েছে ৯০১টি। যা মোট অভিযোগের ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ। অর্থাৎ ৯৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ অভিযোগই অনুসন্ধানের জন্য আমলে নিতে পারেনি দুদক।

এ ছাড়া ১৯ হাজার ৩৩৮ টি অভিযোগের মধ্যে ৩ হাজার ১৫২টি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠানো হয়েছে। ২০২২ সালে চার্জশিট অনুমোদন হয়েছে ২২৪টি, মামলা হয়েছে ৪০৬টি, ফাঁদ মামলা হয়েছে ৪টি।


আরও খবর



নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন কৃষকলীগের সম্মেলনে গোলাম হোসেন সভাপতি ইলিয়াস সম্পাদক

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৬ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৪ মার্চ ২০২৩ | ৭৭জন দেখেছেন

Image

আব্দুল হান্নান,নাসিরনগরঃব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের কৃষকলীগের ত্রি বার্ষিক সম্মেলন ১৬ মার্চ ২০২৩ রোজ বুধবার সকাল ১০ ঘটিকার সময় খেলার মাঠের কোনায় অনুষ্টিত হয়।প্রথমেই জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনের কাজ শুরু হয়।সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সভাপতি মোঃ মধু মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্টিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের অর্থবিষয় সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ নাজির মিয়া।


বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন  নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি রোমা আক্তার।পারভেজ মোশারফ ও উপজেলা কৃষকরীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম নুরে আলম নুরের সঞ্চলানায় অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন  কৃষকলীগ নেতা এম এ কাসেম,গোলাম আলী,মধু মিয়া শেখ নিজাম উদ্দিন,উপজেলা কৃষকলীগ সভাপতি হাজী মোঃ অলি মিয়া, সাবেক উপজেলা কৃষকলীগের আহবায়ক ও দৈনিক ভোরের চেতনার সম্পাদক মোঃ আলী আশ্রাফ সহ আরো অনেকেই।

প্রথম অধিবেশনের পর চলে দ্বিতীয় অধিবেশনের কাজ।দ্বীতিয় অধিবেশনে সর্ব সম্মতিক্রমে ৬১ সদস্য বিশিষ্ট সদর ইউনিয়ন কৃষকরীগের কমিটি ঘোষনা করা হয়।কমিটিতে মোঃ গোলাম হোসেনকে সভাপতি,মোঃ ইলিয়াস মিয়াকে সম্পাদক ও মোঃ মোখলেছুর রহমানকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে।

-খবর প্রতিদিন/ সি.বা


আরও খবর



কৃষকের আয় কমবে বিদ্যুতের দাম বাড়ায়

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৩ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ২৫ মার্চ ২০২৩ | ১২৬জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষকের আয় কমে যাবে বিদ্যুতের দাম বাড়ার  বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নেদারল্যান্ডসের পিপলস পার্টি ফর ফ্রিডাম অ্যান্ড ডেমোক্র্যাসির (ভিভিডি) এমপি ফিম ভ্যান স্ট্রিয়েনের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ শঙ্কা প্রকাশ করেন।

বিদ্যুতের দাম বাড়ায় কৃষির ওপর প্রভাব পড়বে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘বিদ্যুতের দাম বাড়ানোয় কৃষিতে কিছুটা প্রভাব তো পড়বেই। ফসলে পানি দিতে না পারলে উৎপাদন কম হবে। তবে জমিতে সার দেওয়া নিয়ে কৃষকরা ঝুঁকি নিতে চায় না। ফলে এদেশের চাষিরা নিজের বউয়ের গয়না কিংবা গরু বিক্রি করেও সার কিনবেন। হয়তো চাষিদের কষ্ট হবে, তার আয় কমে যাবে। তার যে লাভ হওয়ার কথা, সেটা হবে না।’

ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা তো চাই কৃষকের জীবনযাত্রার মান উন্নত হোক। আমাদের ৬০-৭০ শতাংশ মানুষ গ্রামে বাস করেন। তাদের জীবিকার জন্য কোনো না কোনোভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। বিদ্যুতের দাম বাড়লে তাদের আয় কমে যাবে, সন্তানদের লেখাপড়াসহ তাদের জীবনযাত্রার মান কমে যাবে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব যেভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে পড়েছে, তাতে সরকারেরও কোনো উপায় নেই 

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ঋণ না নিলে এভাবে মাসে মাসে বিদ্যুতের দাম বাড়ত কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আইএমএফ তো সারের দামও বাড়াতে বলে। সারে যে ভর্তুকি দিই, সেটিই তো আইএমএফ-ওয়ার্ল্ড ব্যাংক মানে না। তারা সারাজীবন বাধা দিয়ে আসছে। বিএনপির সময় ৯০ টাকা যে সার ছিল, আমরা ১৬ টাকায় দিয়েছি।

ড. রাজ্জাক বলেন, ‘আইএমএফ-ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের কথা শুনতে গিয়ে অনেককেই বেশি মূল্য দিতে হয়েছে। তখন তো প্রধানমন্ত্রীর ওপর অনেক চাপ ছিল। তারা বলতো, সারে ভর্তুকি দিলে তোমরা উন্নয়ন করবে কীভাবে? তাহলে স্কুল-কলেজ ও রাস্তাঘাটের কী হবে? কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘আমরা ভর্তুকি দিচ্ছি না, বিনিয়োগ করছি। আমরা সেই বিনিয়োগের ফল পাচ্ছি’’।

তিনি বলেন, ‘নেদারল্যান্ডসের প্রতিনিধিরা বিশ্বাস করতে পারছেন না যে ২০০৮ সালে আমাদের তিন মিলিয়ন টন সবজি হতো, বর্তমানে তা ২২ মিলিয়ন টন। পৃথিবীর কোনো দেশে ১৩ বছরে সবজির উৎপাদন এত বেড়েছে!’


আরও খবর