Logo
আজঃ বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪
শিরোনাম

গোপন কক্ষে প্রবেশ, ইসির নির্দেশনায় আটক ২

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৫ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | ২৬৬জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক:গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গোপন কক্ষে প্রবেশ ও ভোটদানে প্রভাবিত করার অভিযোগে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে  সিটি করপোরেশনের ১০৩ নম্বর ও ১০১ নম্বর কেন্দ্র থেকে তাদের আটক করা হয়।

আজ রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিসিটিভি মনিটরিং করে দুইজনকে গ্রেপ্তারের নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। এক কমিশনার এ তথ্য জানিয়েছে।

ইসি জানায়, গাজীপুর সিটির ১০৩ নম্বর কেন্দ্রে একজনকে তিন দিন আটক রাখার আদেশ দিয়েছে ম্যাজিস্ট্রেট। ইসি ঢাকা থেকে সিসিটিভি দেখা ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।

এছাড়া, ১০১ নম্বর কেন্দ্রে আব্দুর রহিম নামে একজন আটক করা হয়েছে। গোপন কক্ষে প্রবেশ ও ভোটদানে প্রভাবিত করায় তাদের আটক করা হয়েছে বলে জানায় ইসি।

উৎসবমুখর পরিবেশে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। এবার ভোট গণনার পালা। ভোট হওয়ায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জানা যাবে, কে হচ্ছেন গাজীপুরের পরবর্তী মেয়র।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটারদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। সব কটি কেন্দ্রেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএমে) মাধ্যমে ভোট নেওয়া হচ্ছে। দুই একটি কেন্দ্রে আঙুলের ছাপ না মেলায় ভোট গ্রহণে দেরি হয়।


আরও খবর



"মুক্তিপণে নাবিকদের উদ্ধারের তথ্য সরকারের কাছে নেই"

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ | ১২৭জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক:নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ বলেছেন জলদস্যুরদের মুক্তিপণ দিয়ে নাবিকদের উদ্ধারের তথ্য সরকারের কাছে নেই।

রোববার (১৪ এপ্রিল) সকালে মিন্টু রোডে প্রতিমন্ত্রীর বাসায় জিম্মি অবস্থার অবসান বিষয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, গতকাল (শনিবার) নাবিক মুক্ত হবার সময় জলদস্যুরা নিরাপত্তার জন্য কয়েকজন নাবিককে জাহাজ থেকে নিয়ে যেতে চেয়েছিল, কিন্তু সরকারের দৃঢ়তায় নাবিকদের নিরাপদ রেখেছে। আমার ধারণা, নাবিকদের দেশে ফিরতে ২০ দিনের মতো সময় লাগতে পারে।

তিনি বলেন, এত কম সময়ে জলদূস্যদের থেকে জিম্মি মুক্তির ঘটনা নজিরবিহীন। নাবিকদের সবাই সুস্থ আছেন। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দেশের পতাকাবাহী জাহাজ যেখানে যায়, সেটি আমরা অবগত থাকি।

খালিদ মাহমুদ বলেন, জাহাজ দখলে নেওয়ার সময় ২০ জন জলদস্যু ছিল। যখন তারা জাহাজ ছেড়ে যায় তখন ৬০ জন জলদস্যু ছিল। তারা জাহাজ ত্যাগের সময় নিরাপত্তার জন্য ৫-৬ জন নাবিককে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু সরকারের দৃঢ়তায় নাবিকদের মুক্ত রাখা সম্ভব হয়েছে।


আরও খবর



অতিরিক্ত সচিব হলেন ১২৭ কর্মকর্তা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ | ১০২জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক:১২৭ জন কর্মকর্তাকে প্রশাসনে কর্মরত যুগ্মসচিব ও সমপর্যায়ের অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দিয়েছে সরকার।

সোমবার (২২ এপ্রিল) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে তাদেরকে পদোন্নতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে।

পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মোবাইল নম্বর ও ই-মেইল আইডি উল্লেখ করে ং[email protected]-তে যোগদানপত্র পাঠাতে বলা হয়েছে।

এর আগে, গত বছরের ১২ মে যুগ্মসচিব পদমর্যাদার ১১৪ কর্মকর্তা জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়ে অতিরিক্ত সচিব করা হয়।


আরও খবর



ভোটগ্রহণ চলছে শিল্পী সমিতির

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | ১৭৬জন দেখেছেন

Image

বিনোদন ডেস্ক:ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে আজ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদি দ্বিবার্ষিক নির্বাচনের। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৯টায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) প্রাঙ্গণে শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। আর মাঝে এক ঘণ্টা থাকবে বিরতি।

সংগঠনটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ভোট গণনা শেষে আজই ফলাফল প্রকাশ করতে হবে। এদিকে ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পর পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য অভিনয়শিল্পীদের আগমনে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে বিএফডিসি প্রাঙ্গণ।

এবারের নির্বাচন ২৭ এপ্রিল সম্পন্ন করার কথা থাকলেও জানা গেছে একটি প্যানেল আপত্তি জানালে পরে ১৯ এপ্রিল তারিখই চূড়ান্ত রাখা হয়। ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির এ নির্বাচনে ছয়জন স্বতন্ত্রসহ দুটি প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দিদ্বতা করছেন ৪৮ প্রার্থী। প্যানেল দুটি হচ্ছে মাহমুদ কলি ও নিপুণ আক্তার এবং অন্যটি মিশা সওদাগর ও মনোয়ার হোসেন ডিপজল।

কলি-নিপুণ পরিষদ: সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন ড্যানি সিডাক ও অমিত হাসান। সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে বাপ্পি সাহা। সাংগঠনিক সম্পাদক অঞ্জনা রহমান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মারুফ আকিব, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক কাবিলা, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক মামনুন হাসান ইমন ও কোষাধ্যক্ষ পদে আজাদ খান।

প্যানেলটির কার্যকরী পরিষদের সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন সুজাতা আজিম, নাদের চৌধুরী, পীরজাদা হারুন, তানভীর তনু, মো. সাইফুল, সাদিয়া মির্জা, পলি, জেসমিন আক্তার, সনি রহমান, হেলেনা জাহাঙ্গীর ও সাইফ খান।

মিশা-ডিপজল পরিষদ: সহ-সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন মাসুম পারভেজ রুবেল ও ডি এ তায়েব। সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে আরমান, সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আলেকজান্ডার বো, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক জ্যাকি আলমগীর, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক ডন এবং কোষাধ্যক্ষ পদপ্রার্থী কমল।

এই প্যানেলে কার্যকরী পরিষদের সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন অভিনেত্রী সুচরিতা, রোজিনা, আলীরাজ, সুব্রত, দিলারা ইয়াসমিন, শাহনূর, নানা শাহ, রতœা কবির, চুন্নু, সাঞ্জু জন ও ফিরোজ মিয়া।

উল্লেখ্য, এবারের নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করবেন খোরশেদ আলম খসরু। তার সঙ্গে সদস্য হিসেবে আছেন এ জে রানা ও বিএইচ নিশান।


আরও খবর



বগুড়ায় এবার পিতার চাকুর আঘাতে প্রাণগেল শিশুকন্যার,পিতা গ্রেফতার

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ | ৭৯জন দেখেছেন

Image
বগুড়া বিশেষ প্রতিনিধি:বগুড়ার কাহালু পৌর এলাকার মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে সাগাটিয়া গ্রামে পিতা আব্দুর রহিমের চাকুর আঘাতে প্রাণ গেল শিশুকন্যা রাহী মনি (৭)। বগুড়ার কাহালু থানা পুলিশ রাহী মনির পিতা আব্দুর রহিমকে গ্রেফতার করেছে।

এলাকা সূত্রে জানা যায়: বগুড়ার কাহালু পৌর এলাকার সাগাটিয়া পশ্চিম পাড়া গ্রামের আব্দুল মালেকের পুত্র আব্দুর রহিম তার শিশু কন্যা রাহী মনিকে পড়তে বসতে বললে সে পড়তে না বসায় দিনমজুর আব্দুর রহিম রাগান্বিত হয়ে অসাবধানতা বসত তার হাতে থাকা ব্যাগ দিয়ে শিশুকন্যা রাহী মনিকে আঘাত করলে ব্যাগের ভিতর থাকা চাকু রাহী মনির শরীরের উরুতে ঢুকে যায়।গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে কাহালু হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দ্রুত তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। রাহী মনি কাহালু সিদ্দিকীয়া ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার এবতেদায়ী শাখার ১ম শ্রেণীর ছাত্রী ছিলেন। 

বগুড়ার সহকারি পুলিশ সুপার (নন্দীগ্রাম-সার্কেল) ওমর আলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, রাহী মনির পিতা আব্দুর রহিম উক্ত ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন তবে থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আরও খবর



গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ | ৫৮জন দেখেছেন

Image

লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল ॥৩ মে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের অধিকার ও নিরাপত্তার দাবিতে প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হয়। বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হয়। এই দিবসটি সামনে রেখে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক শতাধিক সংগঠন। ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ২৬তম সাধারণ অধিবেশনের সুপারিশ অনুযায়ী, ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ৩ মে দিবসটিকে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস হিসেবে পালনের স্বীকৃতি দেয়া হয়। এরপর থেকে বিশ্বব্যাপি গণমাধ্যমকর্মীরা ও তাদের বিভিন্ন সংগঠন এই দিবসটি পালন করে আসছে। সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার মৌলিক নীতিমালা অনুসরণ, বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মূল্যায়ন, স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ প্রতিহত করার শপথ গ্রহণ এবং পেশাগত দায়িত্ব পালন কালে ক্ষতিগ্রস্ত ও জীবনদানকারী সাংবাদিকদের স্মরণ ও তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো প্রভৃতি কর্মসূচি এই দিবসে পালন করা হয়।

গণমাধ্যম গণতন্ত্রের সদা জাগ্রত প্রহরী। কোথাও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলে, গণতন্ত্রের মর্যাদা লুন্ঠিত হলে, কিংবা গণতন্ত্রের পবিত্রতা কোন কারণে কলুষিত হলে, গণমাধ্যমের নির্ভিক কন্ঠ সেখানে সোচ্চার হয়ে উঠে। গণমাধ্যম তাই জনগনের পবিত্র গণতান্ত্রিক অধিকার সংরক্ষণে সর্বদা দায়িত্বশীল অভিভাবক। গণমাধ্যম জনগণকে সচেতন করতে সদা সচেষ্ট এবং জনগণ ও সরকারের মধ্যে গণমাধ্যম সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে। জনসাধারণের মতামত/চিঠিপত্র প্রভৃতি প্রকাশের মাধ্যমে জাগ্রত জনমতকে প্রতিফলিত করে সংবাদপত্র পালন করে তার পবিত্র নৈতিক দায়িত্ব। তাই বলা হয় “ওঃ রং ঃযব চবড়ঢ়ষবং চধৎষরধসবহঃ ধষধিুং ংবংংরড়হং” মন্তব্যটি সর্বোতভাবে স্বার্থক। সংবাদপত্র আক্ষরিক অর্থেই সদা জাগ্রত জাতীয় সংসদ।

গণমাধ্যম একটি সমাজ বা জাতির সামগ্রিক জীবনের প্রাত্যহিক দলিল। তাই গণমাধ্যমকে অবশ্যই স্বাধীন ও নিরপেক্ষ হতে হবে। গণমাধ্যম হতে হবে জনসাধারণের স্বার্থ রক্ষার অতন্দ্র প্রহরী। জনগণের স্বার্থে গণমাধ্যম যেমন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে, তেমনি ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্যে করবে সংগ্রাম। গণমাধ্যমকে নির্ভীক ও অকপট হতে হবে। আমাদের দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আশানুরুপ নয়। ক্ষমতাসীন প্রতিটি সরকারই স্বীয় দলের স্বার্থে গণমাধ্যমের উপর আধিপত্য বিস্তারের অপচেষ্টায় লিপ্ত থেকে বারবার গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে ক্ষুন্ন করেছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার দীর্ঘ ৫৩ বছরেও গণতন্ত্র ও গণমাধ্যম কোনটাই শক্তিশালী হতে পারেনি। কারণ দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র ৪৪ মাসের মাথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার পর বারবার সামরিক অভ্যুত্থান, হত্যা, রক্তপাতের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী দেশী ও বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীদের তৎপরতা, অর্থনৈতিক বৈষম্য, যুব সমাজের মধ্যে সৃষ্ট হতাশা, বেকারত্ব, জনস্ফীতি, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি, ঘুষ-দুর্নীতি, দলীয়করণ ইত্যাদি অবক্ষয় স্বাধীনতার মুল লক্ষ্য গণতন্ত্র, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মানবাধিকারকে বিপন্ন করে চলেছে। দেশের সবক্ষেত্রেই ব্যবসায়িক মানসিকতা বিদ্যমান। তোষামোদ, সুবিধাবাদিতা আর মিথ্যাচার সুবিধাভোগী সমাজকে স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতার শিখরে নিয়ে যাচ্ছে। বেশীর ভাগ গণমাধ্যম গণমানুষের মুখপত্র না হয়ে সুবিধাবাদী তল্পিবাহক, দুর্বৃত্ত রাজনৈতিক গোষ্ঠির ক্ষমতারোহন কিংবা ক্ষমতাকে পাকাপোক্তকরণের হাতিয়ারে পরিণত হচ্ছে।
দেশের গণতন্ত্র দুর্বল থাকলে চেষ্টা করলেও গণমাধ্যম শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারে না। কোন সংবাদপত্র বা গণমাধ্যম অথবা গণমাধ্যমকর্মী সমাজে ন্যায় বিচার, আইনের শাসন ও মানবাধিকার রক্ষার আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলেই নানা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তবে শত ঝুঁকির পরেও গণমাধ্যম তাদের দায়িত্ব, সততা, নিষ্ঠা ও নিরপেক্ষতার সাথে পালন করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আর দেশের গণমাধ্যম ও তার কর্মীরা যত দলনিরপেক্ষ, নির্ভীক, শিক্ষিত ও সৎ হবেন, ততই দেশের জন্য মঙ্গলজনক।

গণতন্ত্র বলতে জনসাধারণের শাসন ব্যবস্থাকে বুঝায়। যে শাসন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতা জনগণের হাতে ন্যস্ত থাকে তাকে গণতন্ত্র বলে। গণতন্ত্র অর্থ জনসাধারণের শাসন। জনগণ যখন সকল ক্ষমতার অধিকারী হয় এবং রাষ্ট্র পরিচালনার ভার জনগণের ওপর ন্যস্ত থাকে তখন তাকে গণতন্ত্র বলা হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা গণতন্ত্রকে রাষ্ট্রের সকলে অংশ গ্রহণ করতে পারে এমন এক ব্যবস্থা বলেছেন। কাজেই বলা যায়, যে সরকার বা শাসন ব্যবস্থায় জনমতের প্রধান্য স্বীকৃত হয় এবং জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে শাসনকার্য পরিচালিত হয় তাই গণতন্ত্র। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন গণতন্ত্রের একটি জনপ্রিয় সংজ্ঞা দিয়েছেন “উবসড়পৎধপু রং ধ এড়াবৎহসবহঃ ড়ভ ঃযব ঢ়বড়ঢ়ষব, নু ঃযব ঢ়বড়ঢ়ষব ধহফ ভড়ৎ ঃযব ঢ়বড়ঢ়ষব) তাঁর মতে “জনসাধারণের জন্য, জনসাধারণের দ্বারা পরিচালিত এবং জনসাধারণেই সরকারই হল গণতন্ত্র।

গণতন্ত্র নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করে, ফলে গণতন্ত্রে নাগরিকদের ব্যক্তিত্ব বিকাশের যথেষ্ট সুযোগ ও স্বাধীনতা থাকে। গণতন্ত্র আর গণমাধ্যম একটি আরেকটি পরিপূরক। যেখানে গণমাধ্যম যতবেশী শক্তিশালী যেসখানে গণতন্ত্র বেশী শক্তিশালী। পরমত সহিষ্ণুতাই গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় কথা। আলোচনা, মতপ্রকাশ, ঐক্য, সংহতি হলো গণতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ সিঁড়ি। অন্যের মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। মৌলিক অধিকার হলো মত প্রকাশের স্বাধীনতা। বাংলাদেশের সংবিধানের ধারার ৩৯(১) চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা নিশ্চয়তা দান করা হয়েছে এবং ৩৯ (২) সংবাদপত্র তথা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে।

গণমাধ্যম সমাজের দর্পণ, জাতির বিবেক, জনতার কন্ঠস্বর, রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ ইত্যাদি নানা নামে গণমাধ্যমকে অভিহিত করা হয়। কিন্তু সেই জাতির বিবেকের উপর চলে নানা জুলুম, অন্যায়-অত্যাচার, গণমাধ্যমকর্মীদের উপর করা হয় নির্যাতন, এমনকি তাদের হত্যা করা হচ্ছে। কিন্তু খুনি ও নির্যাতনকারীরা আইনের আওতায় আসছে না, তাদের শাস্তি হচ্ছে না। এই বিষয়ে সাংবাদিক ইউনিয়ন বা সংগঠনগুলোর ঐক্য প্রয়োজন। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও পেশাগত মর্যাদার জন্যে রাজনৈতিক বিশ্বাসের উর্ধ্বে উঠে সকল সাংবাদিক সংগঠনগুলোর ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরি। আইনের শাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সাংবাদিকদের পেশাগত ঐক্যের কোন বিকল্প নেই।
পরিশেষে বলা যায় যে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা অপরিহার্য। তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সম্প্রতি জানানো হয় যে, তথ্য মন্ত্রণালয় সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা ও বর্তমান সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরণ, গণমাধ্যমের সহায়তায় জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, গণমাধ্যম শিল্পের মানোন্নয়ন, সম্প্রচার ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, জাতীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির লালন, বিকাশ ও সংরক্ষণ এবং গণমাধ্যমকর্মীর পেশাগত দক্ষতা ও সেবার মানোন্নয়নের কৌশলগত উদ্দেশ্য অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। সম্মেলনে আরো জানানো হয় যে, বর্তমান সরকার গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতায় বিশ্বাসী এবং গণমাধ্যমকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার সচেষ্ট রয়েছেন। কিন্তু সাংবাদিকগণ পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রায় হামলা ও নানা রকম হুমকীতে শিকার হতে হয়। গত ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি নিজ বাসায় নৃশংসভাবে খুন হন এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনি ও মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার। নিহতদ্বয় স্বামী-স্ত্রী। ছয় বছর বয়সী একমাত্র শিশু পুত্র মাহির সরোয়ার মেঘের সম্মুখে এই সাংবাদিক দম্পত্তি খুন হয়েছেন। কিন্তু আজো খুনীদেরকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধরতে পারেনি, কিংবা চিহ্নিত করতে পারেনি। ২০১১ সালের ২৮ জানুয়ারি পল্টনের নিজ বাসায় খুন হন দৈনিক জনতার সহ-সম্পাদক ফরহাদ খাঁ ও তাঁর স্ত্রী রহিমা খাতুন। বিগত খালেদা-নিজামীর আমলে খুন হন সাংবাদিক মানিক সাহা, হুমায়ুন কবির বালুসহ আরো অনেকে। বর্তমান সরকার গণমাধ্যম কর্মী সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও ‘সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাষ্ট’ গঠনসহ সাংবাদিকদের কল্যাণে কতিপয় প্রসংশনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গণমাধ্যম কর্মী আইনটি সংসদে উপস্থাপিত হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয়  স্থায়ী কমিটিতে আইনটি যাচাই-বাচাইয়ের জন্যে প্রেরণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি জারি করেন নিউজপেপার এমপ্লয়ীজ (কন্ডিশন অব সার্ভিস) অডিন্যান্স জারি করেন। এই আইনের অধীনে সাংবাদিক ও সংবাদপত্র বোর্ড কর্মচারীদের  ওয়েজ বোর্ড  হয়ে আসছিল। কিন্তু ৬ষ্ঠ ওয়েজ বোর্ড গঠনের সময় ধরা পড়লো বিএনপি সরকার কোনো অংশীজনের সাথে আলোচনা না করে এই আইনটি বাতিল করে দিয়েছে। উল্লেখ্য যে, ১৯৭৪ সনের আইনটি সাংবাদিকতা পেশাকে কয়েকটি বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে। এই আইনে সাংবাদিক বা সংবাদমাধ্যমের কর্মচারীদের অধিকার ও বিরোধ নিস্পত্তির বিষয়গুলো শ্রম আইনের মধ্যে রেখেও কিছু বিশেষ মর্যাদা নিশ্চিত করেছিল। এই গুলো হচ্ছেঃ সাংবাদিক বা সংবাদমাধ্যমে কর্মচারীদের জন্য পৃথক ওয়েজ বোর্ড গঠন, পেশার সংজ্ঞায়ন,  বিশেষায়িত বলে কতপিয় বিশেষ সুবিধা  নিশ্চিতকরণ। প্রক্রিয়াধীন  নতুন আইন ১৯৭৪ সালের আইনের মূল চেতনা ধারণ করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি। নতুন আইনে বিশেষ অধিকারগুলো সুনির্দিষ্ট করবে, প্রচলিত শ্রম ও সংশ্লিষ্ট আইনের সাথে বিশেষায়িত বিষয়গুলো সমন্বয় করবে, যেগুলো বিধিতে আনা সম্ভব সেগুলো বিধির জন্য পাঠাবে, যেগুলো ওয়েজ  বোর্ড নির্ধারিত হবে সেগুলো পৃথক করবে, ‘যা বাহুল্য তা’ বাতিল করবে। এভাবেই নতুন আইনটি সংবাদপত্র, টেলিভিশন, অনলাইন,  বেসরকারি বেতার মাধ্যমে সাংবাদিক, আলোকচিত্র সাংবাদিকসহ গণমাধ্যমের সকল কর্মচারীদের অধিকার, নিরাপত্তা, মর্যাদা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি। এই নতুন আইনটি দ্রুত প্রণয়ন ও গেজেট আকারে প্রকাশ এবং গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট বর্তমানে বিদ্যমান আইনসমূহের কার্যকর প্রয়োগ অপরিহার্য। দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

আরও খবর