
সিরাজগঞ্জে সব ধরনের গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় বেশ বিপাকে পড়েছিলেন খামারিরা। তবে আশার খবর হলো অন্য পশুখাদ্যের দাম এখনো বাড়তি থাকলেও জেলায় কমেছে ভুসির দাম। এতে কিছুটা স্বস্তিবোধ করছেন খামারিরা।
তবে খামারিদের দাবি, যদি ভুসির মতো অন্য সব গো-খাদ্যের দাম ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে না আনা যায় তাহলে এই অঞ্চলের গবাদি পশুর খামারে ধস দেখা দেবে।
মঙ্গলবার (৭ জুন) সরেজমিনে সিরাজগঞ্জের কয়েকটি বাজারের পশুখাদ্যের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, ভুসির দাম বস্তাপ্রতি ৪০০ টাকা কমেছে। আগে এক বস্তা ভুসির দাম ছিল ১ হাজার ৯৫০ টাকা। বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৫০ টাকায়।
তবে গম মাসখানেক আগে ৩২ টাকা কেজি বিক্রি করলেও এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৪২-৪৫ টাকায়। খৈল আগে ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ৪৫ টাকা। প্যাকেটজাত দানাদার খাদ্য ছিল ১৮ টাকা কেজি, এখন তা বেড়ে হয়েছে ৩৫ টাকা।
জেলার শাহজাদপুর উপজেলার উল্টাডাব গ্রামের কৃষক আফাজ উদ্দিন বলেন, আমার খামারে বর্তমানে ১০টি গরু আছে। এখান থেকে যা দুধ পাই তা স্থানীয় ব্যাপারীর কাছে বিক্রি করি। কিন্তু খাদ্যের দাম বাড়াতে গরুকে ঠিকমতো খাবার দিতে পারছি না। তাই দুধ আগের চেয়ে কম হচ্ছে।
পোঁতাজিয়া গ্রামের খামারি আবুল কালাম বলেন, গম, ভুট্টা, খৈল, ময়দাসহ সব খাদ্যের দাম বেড়েছে। তবে দুই-তিনদিন হলো ভুসির দাম কমেছে। এতে আমরা যারা খামারি আছি তাদের একটু হলেও খাদ্য নিয়ে চিন্তা কমেছে। তবে ভুসির সঙ্গে আরও যেসব খাদ্যসামগ্রী রয়েছে সেগুলোর দাম কমলে খামারিদের খরচ কমবে।
বেলকুচি উপজেলার তামাই গ্রামের ফিরোজ হোসেন বলেন, প্রতিবছর কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে কিছু গরু মোটাতাজা করে বিক্রি করে থাকি। এবছরও বেশ কয়েকটা গরু মোটাতাজা করছি। তবে খাবারের যে দাম তাতে খরচ বেড়ে গেছে। যা খরচ হয়েছে গরু বিক্রি করে তা তুলতে পারবো কী না তা নিয়ে চিন্তায় আছি।
সিরাজগঞ্জ সদরের হাজী গো-খাদ্য ভাণ্ডারের ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন হলো ভুসির দাম কমেছে। আগে প্রতি বস্তা ১ হাজার ৯৫০ টাকা বিক্রি করলেও এখন তা ১ হাজার ৪৫০ টাকায় বিক্রি করছি। তবে অন্য সব খাদ্যের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত আছে।
বেলকুচি উপজেলার মুকুন্দগাঁতি বাজারে গো-খাদ্যের পাইকারি বিক্রেতা আব্দুল হালিম বলে, ভুসি বাদে সব খাবারের দাম বেড়েছে। আমি সপ্তাহখানেক আগে প্রতি বস্তা ভুসি বিক্রি করেছি ১ হাজার ৯৫০ টাকায়। এখন তা বিক্রি করছি ১ হাজার ৫৫০ টাকায়।
একই বাজারের ভুসি ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, বর্তমানে গো-খাদ্যের মধ্যে খৈল, গম, দানাদার খাবারের দাম চড়া রয়েছে। তবে দাম কমেছে ভুসির। বর্তমানে প্রতি বস্তা ভুসি আমরা ১ হাজার ৫৫০ টাকায় বিক্রি করছি। সামনে ভুসির দাম আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গৌরাঙ্গ কুমার তালুকদার বলেন, গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় এ অঞ্চলের খামারিদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তবে আমরা জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে খামারিদের সবসময় কাঁচা ঘাস খাওয়াতে পরামর্শ দিয়ে আসছি।