সিরাজুল ইসলাম রতন গাইবান্ধা সংবাদদাতা: পরীক্ষামূলকভাবে এ নৌরুটে চারটি ছোট লঞ্চ চলাচল শুরু করলেও নাব্যতা সংকটে এখন তা চলছে না। ফলে সরকারের মেগা প্রকল্প থেকে কাঙ্খিত সুফল পাচ্ছেন না মানুষ। সরেজমিনে বালানীঘাট টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়,সেখানে নির্মাণ করা হয়েছে বাস টার্মিনাল, টোল আদায় বুথ, পুলিশ ব্যারাক, ফায়ার সার্ভিস, আধুনিক ডিজাইনের মসজিদ, খাবার হোটেল, আনসার ব্যারাকসহ বেশকিছু নান্দনিক স্থাপনা।
তবে এতকিছুর মধ্যে শুধুমাত্র খাবার হোটেল চালু থাকলেও অন্য কিন্তু রয়েছে বন্ধ। তাই সরকারের এতটাকা ব্যয়ে সদন অবকাঠামোগুলো এখন জনমানবহীন পড়ে আছে। বালাশীঘাটে থেকে জামালপুরে যাওয়ার জন্য নৌকার জন্য অপেক্ষারত রাজু জানান বলেন,"আমি ময়মনসিংহে ব্যাবসা করি। আমরা নিরাপদে এ নৌরুটে পারাপার হতাম ফেরিতে।বর্তমানে কয়েকটি ছোট লঞ্চ চলাচল করছিল। কিন্তু সেগুলো ও এখন বন্ধ। এ কারণে আমাদের নৌকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হতে হচ্ছে।অপরদিকে সামাটা ফুলছড়ি আসনের এমপি মাহামুদ হাসান রিপন বলেন, নৌ পরীক্ষামূলকভাবে ছোট কয়েকটি লঞ্চ চলাচল শুরু করলে ও নদীতে চর ভেসে ওঠায় লঞ্চগুলো আর চলাচল করতে পারছে না। এ নৌরুট কে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে যদি দেখা হতো তাহলে দুপাশের মানুষ দ্রুত তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে।
পথ তৈরির যুক্তি দেখিয়ে ২০১৮ সালে বাহাদুরাবাদ ফেরিঘাট চালুর ক্ষেত্রে অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। ২০১৭ সালের অক্টোবরে একনেকের
সভায় বালাপী-বাহাদুরাবাদ নৌ-রুট টি আবার ও চালু উত্তরের আট জেলায় যোগাযোগ সহজ করতে গাইবান্ধার বালাসী থেকে জামালপুরের বাহাদুরাবাদ নৌরুটে ফেরি সার্ভিসের জন্য মেগা প্রকল্প চালু করা হয় । ১৯৫ কোটি টাকা ব্যায়ে দু পার্শ্বে ঘাট ও নৌ টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়।
শুধু মাত্র নাব্যতা সংকটের কারনে অনুপযোগী বলে জানায় বাংলাদেশীণ নৌ-
পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। পঞ্চ সার্ভিস চালু করলে সেটিও মুখ থুবড়ে পড়েছে।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৩৮ সালে বালাসীঘাট ও বাহাদুরাবাদ ঘাট চালু করা। এ দুই ঘাটে ফেরি সার্ভিসের মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর রেল যোগাযোগ চালু ছিল।
১৯৯০ সালে নদীর নাব্যতা সংকটের অজুহাতে তিস্তামুখ ঘাটটি স্থানান্তর করা হয়। নতুন করে সেখানেও ব্যয় করা হয় প্রায় ৩০ কোটি টাকা। নির্মাণ করা রেলস্টেশন থেকে বালাসীঘাট পর্যন্ত কিলোমিটার রেলপথ। সেখানেও কয়েক বছর চলার পর যমুনায় নানা হ্রাসের কারণে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যমুনা বহুমুখী সেতু চালু হওয়ার পর ২০০০ সাল থেকে পুরোপুরি এ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
তবে প্রয়োজনের তাগিদে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ঝুঁকি
নিয়ে পারাপার হতেন এ অঞ্চলের মানুষ। এদিকে বঙ্গবন্ধু সেতুর উপর যানবাহনের চাপ কমাতে বিকল্প করতে ফেরিঘাট টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১২৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। পরে দুই দফায় প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে দাঁড়ায় ১৯৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা। ২০২১ সালের মধ্যে বেশ কিছু স্থাপনা নির্মাণ কাজ শেষ হলে হঠাৎ করে বিআইডব্লিউটি এর কারিগরি কমিটি নাব্যতা সংকটের কারনে ২৬ কিলোমিটার বিশাল দূরত্বের নৌপথসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে নৌরুটমটি চলাচলের অনুপযোগী বলে ঘোষণা করে। পরীক্ষামূলকভাবে এ নৌরুটে চারটি ছোট লঞ্চ চলাচল শুরু করলেও নাব্যতা সংকটে এখন তা চলছে না।