
অনলাইন ডেস্ক: দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় থাকা গভীর নিম্নচাপটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’য় পরিণত হয়েছে। এজন্য দেশের চার সমুদ্রবন্দরকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আজ বৃহস্পতিবার অধিদপ্তরের বিশেষ বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, আগামী রোববার বাংলাদেশের কক্সবাজার ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের চকপিউ শহরের মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে ‘মোখা’। এই ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় এরই মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো, ঘূর্ণিঝড়ের নাম মোখা কেন এবং এটি কীভাবে এল?
‘মোখা’ নামের উৎস
ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন/ইউনাইটেড নেশনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিকের (ডাব্লিউএমও/ইএসসিএপি) তথ্য অনুযায়ী, এই ঘূর্ণিঝড়টির নাম দিয়েছে ইয়েমেন। দেশটির বিখ্যাত শহর মোখার নাম থেকেই রাখা হয়েছে এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম।
মোখা ইয়েমেনের লোহিত সাগর উপকূলে একটি বন্দর শহর। ঊনবিংশ শতাব্দীতে এটাই ছিল ইয়েমেনের প্রধান বন্দর শহর। কফি বাণিজ্যের জন্য বিখ্যাত ছিল এই বন্দর। এখান থেকেই কফির উৎপাদন এবং সারা বিশ্বে সরবরাহের কাজ করা হয়। তাই এটির নামেই ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণে কমিটি
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার অধীনে আরব মহাসাগর ও ভারত মহাসাগরের উত্তরাঞ্চলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের জন্য একটি কমিটি রয়েছে। এই কমিটিতে রয়েছে- বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, শ্রীলংকা, ওমান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান, সৌদি আরব ও ইয়েমেন।
.jpg)
ঝড়ের নাম ঠিক করার জন্যে প্রত্যেক দেশ কিছু নাম প্রস্তাব করে। প্যানেল অন ট্রপিকল সাইক্লোন-এর কাছে সেই নামগুলো পেশ করা হয় ও একটি তালিকা তৈরি হয়।
এই ১৩ দেশের সংস্থা এস্কেপ ২০২০ সালেই ১৬৯টি ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করে একটি তালিকা তৈরি করে রেখেছে। সেই তালিকা থেকে এবারের ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয় ‘মোখা’।
ঘূর্ণিঝড়ের নামের ওই তালিকা থেকেই এর আগের ঘূর্ণিঝড়ের নাম ছিল থাইল্যান্ডের দেওয়া ‘সিত্রাং’। এরপরের ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে ‘বিপর্যয়’। এই নামটি বাংলাদেশের দেওয়া।
এর পরবর্তী পাঁচটি ঘূর্ণিঝড়ের নাম হবে যথাক্রমে তেজ (ভারত), হামুন (ইরান), মিধিলি (মালদ্বীপ), মিগজাউম (মিয়ানমার), রিমাল (ওমান)।
ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের প্রচলন হয় ২০০০ সালে। ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের কারণ সম্পর্কে ওয়ার্ল্ড মেটেরলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, একটি ঘূর্ণিঝড় এক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এই সময়ের মধ্যেই একই অঞ্চলে আরও ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়া অসম্ভব কোনো ব্যাপার নয়। এ কারণে ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হলে সম্ভাব্য বিভ্রান্তি এড়ানো সহজ হয়।