Logo
আজঃ শনিবার ১৮ মে ২০২৪
শিরোনাম

ফুলবাড়ীতে আমন মৌসুমে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৪ অক্টোবর ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ১৮ মে ২০২৪ | ২৮৭জন দেখেছেন

Image

ফুলবাড়ি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:চলতি আমন মৌসুনে দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ি উপজেলায় আমন ধানের আবাদে উপজেলার কৃষকগন বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন। উপজেলায় মোট আঠারো হাজার একশ নব্বই হেক্টর জমি আমন ধান আবাদের আওতায় এসেছে। এবারে উপজেলায় সর্বোচ্চ ফলনের সম্ভাবনা আছে বলে ধারনা করছেন উপজেলা কৃষি অফিস ও সাধারণ কৃষকেরা। এবারের আমন মৌসুমে উপজেলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তীক কৃষক সহ অন্যান কৃষকগনকে সরকারি প্রনোদনাসরুপ কৃষি অফিস বীজ ও সার বিতরন করেন এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আকতারের দিক নির্দেশনায় উপজেলার সকল ইউনিয়নে কর্মরত ব্লক সুপারভাইজার গন কৃষকের দোরগোড়ায় গিয়ে যথাসময়ে তত্বাবধান করেন, যার ফলশ্রতিতে এবারের এই বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা বাস্তবায়ন হওয়ার দ্বারপ্রান্তে উপনিত হয়েছে। উপজেলার কৃষকগন, কৃষি অফিস সহ সাধারণ মানুষ মনে করছেন যদি কোনপ্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসে তবে এই মৌসুমে আমনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা অর্জিত হবে।

গত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে দিনাজপুরের ফুলবাড়ি উপজেলা কৃষি অফিস সরকারি কৃষি প্রনোদনা কর্মসূচীর আওতায় বিনামূল্যে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে কৃষি প্রণোদনা ফসলভিত্তিক বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণের করেন ১৫০১০ জন কৃষকের মাঝে। প্রতিজন কৃষকের মাঝে বিতরণকৃত উপকরণের মধ্যে রয়েছে। খরিফ-২০২২-২৩ অর্থ বছরের মৌসুমে মাসকলাই প্রণোদনা কর্মসূচী,৬০জন কৃষকের মাঝে ৫ কেজি বীজ ও ১৫ কেজি সার বিতরন করেন।

সরিষা ৩২১০জন কৃষকের মাঝে ১কেজি বীজ ও ২০ কেজি সার বিতরন করেন। ৭০০জন কৃষকের মাঝে ২০ কেজি গম ২০ কেজি সার বিতরন করেন। এছাড়াও নিয়মতান্ত্রিক ভাবে ভুট্টা, সুর্জমুখী,পেঁয়াজ,মুগডালের বীজ ও সার বিতরন করেন। তাছাড়া গত বোরো মৌসুমে উফশী ও হাইব্রিড জাতের বীজ ও সার ৭৪২০ জন কৃষকের মাঝে বিতরন করেন। এবং ২০২২-২৩ অর্থ বছরে পাট ও উফশী আউশ ধানের বীজ ও সার ১৭৫০ জন কৃষকের মাঝে বিতরন করেন। সর্বশেষ আমন মৌসুমে উফশী ও হাইব্রিড জাতের ধান এবং সার ১০১০ জন কৃষকের মাঝে বিতরন করেন। সরকারি প্রনোদনা কর্মসূচীর আওতায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে সর্বমোট ১৫০১০ জন কৃষকের মাঝে বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরন করেন ফুলবাড়ি কৃষি অফিস। উপজেলার সকল ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে প্রনোদনা পাওয়ার উপযোগী কৃষক গনের তালিকা প্রনয়ণ করা হয়, সবমিলিয়ে ফুলবাড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আকতারের তত্বাবধান ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবার আমন আবাদে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন অত্র উপজেলার কৃষকগন।


আরও খবর



সাফল্য অর্জনকারী ৫ জয়িতার গল্প

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ | ১৫২জন দেখেছেন

Image
পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি:জয়িতা হচ্ছে সমাজের সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল নারীর একটি প্রতিকী নাম। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দিক নির্দেশনায় ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উদ্যোগে প্রতিবছর দেশব্যাপী “জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ” শীর্ষক অভিনব প্রচারাভিযানের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তৃণমূলের সফল নারী, তথা জয়িতাদের অনুপ্রাণিত করা। এরি ধারাবাহিকতায় নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলায় ২০২৪ সালে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিশেষ সাফল্য অর্জনকারী শ্রেষ্ঠ জয়িতা হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন ৫ জন আত্মপ্রত্যয়ী এবং সংগ্রামী নারী। তারা হলেনঃ

(১) অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী তাপসী রাবেয়াঃ নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর হরিরামপুর (দক্ষিণ) গ্রামের অধিবাসী এসএম রফিকুল ইসলামের মেয়ে তাপসী রাবেয়া একজন শিক্ষিত যুব নারী যার স্বপ্ন ছিলো ডাক্তার হবার। সেটাতে সফল হতে পারেনি। অনার্স মাস্টার্স কমপ্লিট করে বিসিএস পরীক্ষার ব্যর্থ হয়। তবে সে দমে যাবার মেয়ে নয়। ব্যথতায় হচ্ছে সফলতার স্তম্ভ বা খুঁটি এই মন্ত্রে  নতুন উদ্যমে নিজেকে সাজায় সে।

সমাজ, সংসারের আর্থিক ও সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চাওয়া রাবেয়া তার সংসার জীবনে জমানো টাকা-গয়না আর আত্মীয়দের কাছ থেকে ধার করা টাকা দিয়ে একটি জমি ক্রয় করে। তারপর সেই জমিতে বাগান করে, পরিচর্যা করে। দুই বছর পর আম বিক্রি করে মোটামুটি ভালো অঙ্কের টাকা পায়। এইভাবে কয়েক বছর কঠোর পরিশ্রম করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বি হওয়া শুরু করে।

রাবেয়া জানান মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার "একটি বাড়ি একটি খামার" এই প্রকল্পটি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আমি আমার স্বামীর জমিতে একটি খামার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেই। অক্লান্ত পরিশ্রম করে রোদে পুড়ে শ্রমিকদের সাথে হাতে হাত লাগিয়ে গড়ে তুলি "শাহ আলম এগ্রো" নামের একটি প্রতিষ্ঠান। যা একটি গবাদি পশু পালন, বায়োগ্যাস ও প্রাকৃতিক জৈব সার উৎপাদন কারী প্রতিষ্ঠান। 

যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে আমি গবাদির পশুর যত্ন, খাদ্য ব্যবস্থাপনা, পরিচর্যা, প্রাথমিক চিকিৎসা ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ করে। মৎস্য চাষ ও হাঁস-মুরগি পালন বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে কিভাবে লাভজনক ভাবে করা যায় তা আয়ত্ত করে স্বল্প সময়ের মধ্যে অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে দেশি মুরগি ও হাঁস পালন শুরু করি। এ লক্ষ্যে নিজস্ব হ্যাচারি স্থাপন করি খামারের মধ্যে। বাচ্চার বয়স আড়াই থেকে সাড়ে তিন মাস হলেই প্রতি চালানে (পাঁচশত) বিক্রি করে প্রায় দুই লক্ষ টাকা লাভ করি। এছাড়াও বিভিন্ন রকম মৌসুমি ফল ও শাক-সবজি চাষ করে খামারের এক ইঞ্চি জায়গাও নষ্ট করিনি। 

খামারের এক প্রান্তে একটি ছোট পুকুর আছে। সেটার ধারেই হাঁসের সেড স্থাপন করি। সেই পুকুরে সমন্বিত মাছ চাষের পাশাপাশি শামুকও চাষ করি। ফলে হাঁসের খাদ্যের খরচ অর্ধেক লাগে। আবার হাঁসের বিষ্ঠাগুলো পুকুরের মাছের খাদ্য হিসেবে কাজ করে। হাঁসের ডিম ও মাছ বিক্রি করে মোটামুটি ভালো অংকের অর্থ উপার্জন করি পাশাপাশি আমার পরিবারের আমিষের চাহিদাও পূরণ হয়।

আজ আমি কারো বোঝা নই। অর্থের জন্য এখন আমাকে আর কারো কাছে হাত পাতাতে হয় না। বরং আমি আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের আর্থিক ভাবে সাহায্য করি। আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী ও গরিব অসহায় দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি। আমি মনে করি অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন নারীদের সামাজিক মুক্তির একটি বড় মাধ্যম।

(২) শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী নিয়তি রানী উরাওঃ পত্নীতলা উপজেলার অন্তর্গত পত্নীতলা ইউনিয়নের বুজরুক মামুদপুর গ্রামে বসবাস ৩৮ বছর বয়সী নিয়তি রানী উড়াও এর। তিনি প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন এবং স্বামী সন্তানদের ও প্রতিষ্ঠিত করেছেন। যার অন্য একটি পরিচিতি তিনি হলো মহীয়সী নারী।

বাবা শ্রীমন্ত উরাও ও মা যামিনী উরাও এর পাঁচ সন্তানের মধ্যে তিনি পঞ্চম সন্তান। তিনি ছিলেন একটু ভিন্ন প্রকৃতি কর্মচঞ্চল হাসিমাখা মুখের অধিকারী। তার বাল্যকাল কেটেছে চরম আর্থিক দৈনতায়। তিন বেলা তাদের খাবার যোগাড় ছিল না। 

পড়ালেখা করা খুবই কঠিন হয়ে ওঠে। নিয়তি রানী উড়াও তাই নিজের প্রচেষ্টায় লোকের বাড়িতে দিনমজুরি কাজ করে টাকা জোগাড় করে পড়ালেখার খরচ চালাতো। এভাবে সে জয়পুরহাট খঞ্জনপুর উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএসসি পাস করেন। একইভাবে সে জয়পুরহাট সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। আর্থিক অনটনের কারণে বাধ্য হয়ে বিবাহ জীবনে আবদ্ধ হন।

নতুন সংসার জীবন শুরু হয়। বছর না যেতেই তার কোলে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান ঘর আলো করে আসে। পরিবারের আর্থিক অনটনের জন্য এনজিও সংস্থা ব্র্যাকের এ.এন.পি স্কুলে ৪ বছর চালানোর পর দুই বছর পিপিএস বিদ্যালয় শিক্ষকতায় আবদ্ধ হন।

এরপর এনজিও সংস্থা আশ্রয় ৪ প্লাস শিশুর শিক্ষকতা করেন। এরই মধ্যে সার্বিক কল্যাণে সমাজের ক্ষেত্রে নারী নেত্রী হিসেবে দি হাঙ্গার প্রজেক্ট এর বাংলাদেশ নারীনেত্রী প্রশিক্ষণে চারদিন ব্যাপী জয়পুরহাটে টিএমএসএস তে ১৫০তম ব্যাচে অংশগ্রহণ করেন। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তিনি তার জীবনের মিল খুঁজে পান। এই প্রশিক্ষণের সুবাদে বিভিন্ন জায়গায় নানা শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে মিশার সুযোগ হয় মানুষকে চেনা এবং তাদের সাথে কেমন আচরণ করতে হবে তা খুব ভালোভাবে আয়ত্ব করেন নিয়তি রানী। সামাজিক সমস্যার সমাধানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এলাকায় নারীদের সংঘটিত করে অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধ এবং নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় আপোষের নেত্রী হিসেবে তিনি এলাকায় সুপরিচিত। এখন তিনি দ্যা হাঙ্গার প্রজেক্ট এর পুষ্টি উজ্জীবক হিসেবে সমাজ সেবায় স্বেচ্ছাসেবিকার কাজ করে চলেছেন। মানুষদের স্বাস্থ্য সম্মত জীবন যাপন এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করে থাকেন। তিনি বিভিন্ন দিবসে নিজের গ্রামে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন এলাকার তরুণ এবং বেকার যুবক যুবতীদের আয়বর্ধক কাজে যুক্ত করে সকলের কাছে নিয়তি দিদি জনপ্রিয় মানুষের পরিণত হয়েছেন।

নিয়তি রাণী মনে করেন মানুষ বাঁচে তার কর্মের মাধ্যমে, বয়স এখানে মুখ্য বিষয় নয়। অন্যের জীবনের ভরসার পাত্র কয়জনায় বা হতে পারে? যারা সমাজে মানুষের বিপদে- আপদে পাশে দাঁড়ায়, কাজ করে তারাই প্রকৃত মানুষ।

(৩) সফল জননী ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ জয়িতা প্রতিমা রানীঃ পত্নীতলা উপজেলার পত্নীতলা ইউনিয়নের বোরাম গ্রামের শ্রী সন্তোষ চন্দ্র দাসের স্ত্রী প্রতিমা রানী। বাবা হরেন্দ্র নাথ মন্ডল ও মাতা কাদম্বীনি মন্ডলের ৪ সন্তানের মধ্যে প্রতিমা রানী তৃতীয় সন্তান। বাল্যকাল কেটেছে চরম আর্থিক দৈন্যতায়। তিনবেলা তাদের খাবার জুটতোনা। লেখাপড়া তো দূরের কথা। স্কুলের গন্ডি পেরুনো ভাগ্যে জোটেনি। দৈন্যতার কারণে একেবারেই অল্প বয়সে বিয়ে হয় তার। শ্বশুর-শ্বাশুড়ির অস্বাভাবিক নির্যাতন আর সংসারে অভাব অনটনের মধ্যে সদ্য বিয়ের ১ বছরেই মাথায় জন্ম নেয় তাদের প্রথম সন্তান। এভাবে সুখে দুঃখে খরকুটু দিয়ে সংসার গড়তে গড়তেই ঠিক ৩ বছর পর তাদের আরও একটি পুত্র সন্তানের জন্য হয়। দুই ছেলে ও শ্বশুর-শ্বাশুড়ি নিয়ে কোন রকমে দিন কাটতো তারই মধ্যে তাদের সংসার আলো করে আসে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান। হাটি হাটি পা পা করে সংসার এগুতেই শুরু হয় সন্তানদের লেখাপড়ার খরচের চাপ।

অভাবের সংসার চালাতে অর্থের প্রয়োজন পড়লে তিনি পড়ে যান অর্থনৈতিক দৈনদশার মধ্যে। পাশের গ্রাম কাঁটাবাড়ীর এক বাবুর নিকট থেকে কিছু জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ শুরু করেন। পাশাপাশি কিছু গরু-ছাগল, হাঁস, মুরগি ইত্যাদি নানা ধরনের উৎস থেকে ইনকাম দিয়ে কোন রকমে সংসার ও ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া চালাতে থাকেন। আস্তেই সন্তানরা উঁচু ক্লাসে উঠে আর লেখাপড়ার খরচও বেশি হতে থাকে। এদিকে সন্তানেরা ক্লাস ফাইভে ও এইটে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পায়। তাদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। এস.এস.সিতে লেটার মার্ক নিয়ে ফাস্ট ডিভিশনে ফাস্ট হয়। এইদিকে অভাবের সংসার প্রতিবেশি লোকজনদের তিরস্কার, সামাজিক কুসংস্কার, লাঞ্ছনা-গঞ্জনা সবকিছু উপেক্ষা করে নিজের শেষটুকু দিয়ে প্রচেষ্টায় সন্তানদের মেধা ও হার না মানা পরিশ্রমের ফলে আজ তিনি সত্যিকারের একজন স্বশিক্ষিত মা হিসেবে সমাজে পরিচিত এবং প্রতিষ্ঠিত।

প্রতিমা রানী'র বড় ছেলে স্বপন কুমার দাস এখন সিনিয়র অফিসার জনতা ব্যাংক লিমিটেড, ছোট ছেলে অনুপ কুমার দাস সিভিল ইঞ্জিনিয়ার সিনিয়র ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার, নাভানা রিয়েল স্টেট লিমিটেড, আর মেয়ে কৃষ্ণাশ্রী দাস সহকারী শিক্ষিকা কাঁটাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

সন্তানদের জীবনে ভরসার পাত্র কয়জন মা'ই বা হতে পারে। যারা সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করে সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পারে। কিন্তু প্রতিমা রানী একজন মহীয়সী মা হিসেবে সন্তানদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করে তুলেছেন।

(৪) নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন জীবন শুরু ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ জয়িতা মান্টি রানী দাসঃ পত্নীতলা উপজেলায় নজিপুর পৌরসভা মামুদপুর গ্রামের অসিম কুমার দাস এর মেয়ে মান্টি রানী দাস। বাবা মার প্রথম সন্তান হওয়ায় মান্টি রানী কৈশর কেটেছিল হেঁসে খেলেই। কিন্তু এই আনন্দ বেশি দিন স্থায়ী হয়না। বাবা অসুস্থ হওয়ায় সংসারে অভাবের কারণে ২০০৮ সালে তাকে বাধ্য হতে বিয়ের পিড়িতে বসতে হয়। বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে গিয়ে বেশি দিন ভালো থাকা হয়নি তার। নিজের জীবন এবং সংসার সম্পর্কে তেমন ধারণা ছিল না তার। একে তো বাল্যকালে বিয়ে আবার অকালে সন্তান ধারণ। শ্বশুড়-শ্বাশুড়ীর এবং স্বামীর কটু কথা এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে হয়। বাচ্চা হওয়ার দীর্ঘ ৯ মাস পরে মান্টির স্বামী মান্টিকে নিতে আসে এবং মান্টিকে নিয়ে যায় শ্বশুড় বাড়ীতে। আবারো তার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে এবং যৌতুকের জন্য চাপ দেয়। এক পর্যায়ে মান্টির শশুর বাড়ির লোকেরা মান্টি ও তার না-বালক সন্তানকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। মান্টির বাবা- মা বাধ্য হয়ে মান্টিকে নিজ বাড়ীতে নিয়ে আসে। এক পর্যায়ে তার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করলে ২০২১ সালে তার সংসার জীবনের ইতি ঘটে।

এরপর মান্টি সেলাই মেশিন পরিচালনার কাজ শেখে। বাবার অভাবী সংসার থেকেই কষ্ট করে একটি সেলাই মেশিন ক্রয় করে পোশাক তৈরির কাজ শুরু করে। সেলাই মেশিনের ক্ষুদ্র আয় থেকে একটি গরু ক্রয় করে। গরু বড় হলে তা বিক্রয় করে একটি ছোট সিট-কাপরের দোকান দেয়। পাশাপাশি মান্টি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে এসএসসি পাশ করে। কারিগরি কলেজ হতে এইচএসসি পাশ করে। স্নাতক ডিগ্রী সম্পন্ন করে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এরপর মান্টি তার যোগত্যা দিয়ে প্রথমত একটি সোলার কোম্পানীতে চাকুরী, দ্বিতীয়ত- বেডো এনজিওতে মাঠকর্মী পদে, তৃতীয়ত-ব্রাক প্রতিষ্ঠানে হেলথ্ স্বাস্থ্য কর্মী পদে চাকুরি করে, চতুর্থ পর্যায়ে- পত্নীতলা উপজেলায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আওতায় ভিজিডি প্রকল্পতে ট্রেনার পদে কাজ করে, পঞ্চম ধাপে 'কিশোর- কিশোরী' প্রকল্পে আবৃতি শিক্ষক পদে চাকুরী করে ও চলমান। ষষ্ঠ ধাপে আদমশুমারি ও গৃহগণনা কাজে নিয়োজিত ও একইসঙ্গে মান্টি বাড়িতেই পার্লারের কাজ করে।

সামাজের কিছু কুসংস্কার মানুষ তাকে বিভিন্নভাবে অপবাদ দেয়। তাকে হেও করা চেষ্টা করে। তবুও সমাজের অন্য মেয়েদের অনুপ্রেরনা হয়ে আছে মান্টি। যা অন্যান্য মেয়েদের সামনে চলার উৎসাহ প্রদান করে। মান্টি বলেন স্বপ্ন দেখব জেগে থেকে। অন্যকেও দেখাতে উৎসাহিত করব এমন স্বপ্নই বাস্তবায়ন করতে চাই।

(৫) সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছে যে নারী ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ জয়িতা সামিমা নাছরিনঃ পত্নীতলা উপজেলার আকবরপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ লক্ষনপুর গ্রামের সামিমা নাছরিন মতিউর রহমান ও নুরজাহান বেগমের দ্বিতীয় সন্তান। যার বাল্যকাল কেটেছে চরম আর্থিক দৈন্যতায়। আর্থিক অবস্থা ভাল না হলেও মায়ের প্রচেষ্টায় নিজেকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করে তুলেন। 

শামীমা শংকরপুর দাখিল মাদ্রাসায় পড়াশোনা শুরু করেন এবং ১৯৯৫ সালে দাখিল পাস করেন। কিন্তু অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও সামাজিক চাপে বাধ্য হয়ে শামীমার মা তার বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরিবারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক একই গ্রামের মামুনুর রশিদের সাথে ২০০৫ সালে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। সংসার জীবনে প্রায় শশুর শাশুড়ির নানা কথা ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়। যৌতুক হিসেবে টাকা-পয়সা দিতে না পারাই স্বাশুড়ির নির্যাতন এবং অনাহার সহ্য করতে হতো যা দেখে প্রতিবেশীরা খাবার এনে দিয়েছেন। 

অভাবের সংসার সাজাতে অর্থের প্রয়োজনে তিনি ব্রাক প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। স্কুলের শিক্ষকতার সময় ননদের নির্যাতনে বাবার বাড়িতে এসে দক্ষিণ লক্ষনপুর গ্রামের গ্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকতা শুরু করেন। এরই মধ্যে সার্বিক সাক্ষরতার আন্দোলন আনসার ভিডিপি গ্রাম উন্নয়ন দলের সভানেত্রী হিসেবে কাজ করতে থাকেন। এর মধ্যে প্রথম সন্তান জন্মগ্রহণ করে। দৈন্যতা দূরীভূত হতে থাকলে স্বামীও শামীমকে গুরুত্ব দিতে থাকেন। এরপর পত্নীতলা উপজেলা আশা ব্যাংক প্রজেক্ট মাঠকর্মী হিসেবে আকবরপুর ইউনিয়নের কার্যক্রম শুরু করেন সামাজিক সমস্যার সমাধানে সহায়তার মধ্য দিয়ে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ মানুষ হিসেবে পরিচিতি হয়ে ওঠেন শামিমা। এছাড়াও বসতবাড়িতে সবজি চাষ, কম্পোস্ট তৈরি জৈব সার প্রস্তুত, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সহায়তা বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্যে জড়িয়ে পড়েন শামীমা।

সামাজিক কাজের অংশগ্রহণ এর সুবাদে বিভিন্ন জায়গা ঘুরে নানা শ্রেণী পেশা মানুষের সাথে মিশা সুযোগ হয়। যখনই তিনি বাড়িতে আসেন গ্রামের মানুষ অভাব অভিযোগ তাকে ব্যতীত করে তোলে। 

২০১৪ সালে গণ গবেষণা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ৩০ জন নারীকে নিয়ে সামিমা গড়ে তোলেন মুষ্টির চাল সমিতি। তিনি এখন এই সমতির সভাপতি এলাকার কেউ অসুস্থ হয়েছে শুনলে নিজে গিয়ে তাকে ডাক্তার দেখান। কিংবা হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। জমি সংক্রান্ত মামলা মোকদ্দমা মীমাংসা, অসহায় পরিবারকে আইন সহায়তা, গ্রামের স্যানিটেশন ব্যবস্থা শততাগ উন্নতি করন, সকল শিশু বিদ্যালয় ভর্তি নিশ্চিত করন, গর্ভবতী ও পুষ্টি মায়ের পরিচর্যা করা, বিচার সালিশে মেয়েদের মতামতের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করার মতো কাজ গুলো তিনি করে থাকেন।২০১৮ সালে ইউনিয়ন পরিষদের গণ গবেষণা ফোরাম নির্বাচিত হলে তিনি সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের নারী নেত্রী হিসেবে ইউনিয়ন কমিটির কেশিয়ার ও জেলা কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। উপজেলা প্রতিবন্ধী কমিটির সদস্যও তিনি। এতাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।

পরিবারের অন্যদের আস্থা অর্জন করে আজ সবার মনের মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন শামীমা। পরিবারের যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে তিনি এখন প্রধান ভূমিকা পালন করেন। মানুষের আত্মশক্তিকে জাগিয়ে দিতে পারে সেই অজয়কে সহজে জয় করতে পারে শামীমা। আর কোন বাধাই তার চলার পথকে রুখতে পারেম না। পরিবর্তনশীন সমাজ সম্পর্কে শামীমার ভাবনা পরিষ্কার। তিনি সবার আগে নিজের মানসিকতা পাল্টিয়েছেন। আর সমাজ পরিবর্তনে ধনী-দরিদ্র কিংবা নারী পুরুষ আলাদা না রেখে সবাইকে মানুষ হিসেবে মূল্য দেওয়া এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠান গুলোকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে পাশাপাশি সমাজের শিক্ষিত ও জন প্রতিনিধিদের দায়িত্ব নিতে হবে বলে তিনি মনে করেন। তাহলেই কেবল সমাজ পরিবর্তন করা সম্ভব।

আরও খবর



প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আজ বৈঠক করবেন কাতারের আমির

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ | ১২৫জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক:দুই দিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। সফরের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। বাংলাদেশ ও কাতারের দুই রাষ্ট্রপ্রধানের বৈঠকের পর দেশ দুটির মধ্যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) সই হবে।

এর আগে, সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেল ৫টার দিকে বিশেষ একটি ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন কাতারের আমির। এ সময় বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আমিরের সফরে কাতার ও বাংলাদেশের মধ্যে ছয়টি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হওয়ার কথা রয়েছে। চুক্তিগুলো হলো- দ্বৈতকর পরিহার, আইনগত বিষয়ে সহযোগিতা, সাগরপথে পরিবহন, বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা, দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বদলি ও যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠন।

সমঝোতা স্মারকের মধ্যে রয়েছে- শ্রমশক্তি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক, বন্দর পরিচালনা, উচ্চ শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা, যুব ও ক্রীড়া সহযোগিতা এবং কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ সহযোগিতা।

বিকেলে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বঙ্গভবনে কাতারের আমির সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। তারপর সন্ধ্যায় বিশেষ বিমানযোগে ঢাকা ত্যাগ করবেন শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি।

ঢাকায় কাতারের আমিরের নামে একটি সড়কের নামকরণ করা হবে। এ ব্যাপারে গত ২১ এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মিরপুরের কালশী এলাকার বালুর মাঠে নির্মিতব্য পার্ক ও মিরপুর ইসিবি চত্বর থেকে কালশী উড়ালসড়ক পর্যন্ত সড়কটি কাতারের আমিরের নামে নামকরণ করা হবে।

২০০৫ সালের পর এবারই প্রথম ঢাকায় সফরে এলেন কাতারের কোনো আমির।


আরও খবর



ফুলবাড়ীতে ক্ষুদ্র প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূলে বীজ ও সার বিতরণ

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ | ১৫৩জন দেখেছেন

Image

ফুলবাড়ী, দিনাজপুর প্রতিনিধি:দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ক্ষুদ্র প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূলে বীজ ও সার বিতরণের উদ্বোধন। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস চত্ত্বরে ৫৮০ জন প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণের উদ্বোধন করেন ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর মোহাম্মদ আল কামাহ তমাল।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে ৭টি ইউনিয়ন ও ১ পৌসরভার মোট ৫৮০ জন প্রান্তিক কৃষদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ করেন। ৫শত কৃষকের মাঝে ধান বীজ ও সার এবং ৮০ জন কৃষকের মাঝে পাট বীজ ও সার দেওয়া হয়। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে খরিপ-০১/২০২৪/২৫ মৌসুমে উফসী আউশ ও পাট চাষে প্রনোদনার জন্য ক্ষুদ্র প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূলে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছাঃ রুম্মান আক্তার, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকতা মোঃ সোহানু রহমান সোহান  সহ কৃষি অফিসের সকল কর্মকর্তা কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। এসময় প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আয়োজনে ছিলেন, ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস।


আরও খবর



সরকার ১ কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কিনবে

প্রকাশিত:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৮ মে ২০২৪ | ৫৭জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক:১ কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কিনবে স্থানীয়ভাবে টিসিবির মাধ্যমে সরকার। মোট খরচ পড়বে ১৮২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। সায়বিন তেলের এরকম আরও কয়েকটি ক্রয় প্রস্তাবসহ উত্থাপিত ১২টি প্রস্তাবের সবগুলোই অনুমোদন করেছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা।

বুধবার (৮ মে) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মাহমুদুল হোসাইন এ তথ্য জানান।

মাহমুদুল হোসাইন জানান, টিসিবির মাধ্যমে ৪০ লাখ লিটার রাইস ব্র্যান তেলও কিনবে সরকার, যার মোট খরচ পড়বে ৫৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এবার স্থানীয়ভাবে সংগ্রহের ক্ষেত্রে টিসিবির গুরুত্বই বেশি।

তিনি জানান, সংস্থাটির মাধ্যমে ৩ দফায় যথাক্রমে ৬ হাজার মেট্রিক টন, ১০ হাজার মেট্রিক টন ও ৬ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কিনবে সরকার। যার দাম পড়বে যথাক্রমে ৬১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, ১০৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ও ৬০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।

মাহমুদুল হোসাইন আরও জানান, বরাবরের মতো সারও কিনবে সরকার। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কিনবে, যার খরচ পড়বে ৯৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। একই পরিমাণ ইউরিয়া সার কেনা হবে কাতার থেকে, যার মোট খরচ ৯৩ কোটি ২২ লাখ টাকা।

সচিব বলেন, তিন কার্গো এলএনজি কেনা হবে। দুই কার্গো কেনা হবে সিঙ্গাপুর থেকে, দুটোরই দাম পড়বে যথাক্রমে প্রতি ইউনিট ১০ দশমিক ৪৬ মার্কিন ডলার করে। তৃতীয় কার্গো কেনা হবে কাতার থেকে প্রতি ইউনিট মার্কিন ডলার দরে।


আরও খবর



হাকিমপুরে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে নির্বাচনী সরঞ্জাম

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৮ মে ২০২৪ | ৭৬জন দেখেছেন

Image

মাসুদুল হক রুবেল,হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:রাত পোহালেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৬ ষ্ঠ প্রথম ধাপে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। এরই মধ্যে নির্বাচনের সকল ধরনের প্রস্ততি সম্পন্ন হয়েছে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে যাচ্ছে নির্বাচনী সরঞ্জাম।

মঙ্গলবার (০৭ মে) দুপুর ১ টায় হাকিমপুর উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে নির্বাচনী সামগ্রী বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা এসব সামগ্রী সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার,পোলিং অফিসারসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের নিয়ে নিজ নিজ কেন্দ্রে যাচ্ছেন।

হাকিমপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে এসব বিতরণকালে সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার মোঃ কামরুল ইসলাম,হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায়,সহকারী কমিশনার ভূমি লায়লা ইয়াসমিন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছাঃ আরজেনা বেগম,অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন অফিসার আফতাব হোসেন,সহকারী রিটার্নিং অফিসার শিমুল সরকার, থানার ওসি মোঃ দুলাল হোসেনসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

জেলা রিটার্নিং অফিসার কামরুল ইসলাম জানান, ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ধাপের হাকিমপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উৎসব মুখর পরিবেশে সুন্দর, সুষ্ঠু ও নিরপক্ষ ভাবে ভোট গ্রহনের সকল প্রস্ততি গ্রহন করা হয়েছে। আগামীকাল হাকিমপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ইতিমধ্যে ৩৬ টি কেন্দ্রের মধ্যে কিছু কেন্দ্র আমরা ঝুঁকিপূর্ন মনে করে তালিকা তৈরি করেছি। তিনটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ৩৬ টি কেন্দ্রে জন্য চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, স্ট্রাইকিং ফোর্সসহ পুলিশ বাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলার কোন অবনতি ঘটবে না বলেও  আশা করছেন তিনি। 

এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তিন জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তারা হলেন টেলিফোন মার্কার প্রাথী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন উর রশীদ হারুন,মোটরসাইকেল মার্কার প্রাথী সাবেক মেয়র মো: কামাল হোসেন রাজ ও আনারস মার্কার প্রার্থী আমিনুল ইসলাম (অভি)। 

ইতিমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহর করে নেওয়ায় হাকিমপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) শাহীনুর রেজা শাহীন ও ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) পারুল নাহার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় বে-সরকারি ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। 

হাকিমপুর উপজেলায় ৮০ হাজার ৪৪৩ পুরুষ ও নারী ভোটার গোপন ব্যালোট এর মাধ্যমে ভোট তাদের পছন্দের মার্কাকে ভোট প্রয়োগ করবেন সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবে ভোট গ্রহণ চলবে।


আরও খবর