স্পোর্টস ডেস্ক: কাতার বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে আসরের পরেও থামানো যায়নি এমিলিয়ানো মার্তিনেজকে। বিশ্বকাপ জিতে তো ফ্রান্সের তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পেকে নিয়েও বিদ্রূপ করেছিলেন আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক। এ নিয়ে পরে অনেক সমালোচনা শুনতে হয় তাকে।
এমনকি ফ্রান্সের ক্রীড়ামন্ত্রী থেকে শুরু করে বিশ্ব ফুটবলের বর্তমান ও সাবেক খেলোয়াড়দের অনেকে মার্তিনেজকে সমালোচনায় বিদ্ধ করেন। ফ্রেঞ্চ ফুটবল ফেডারেশনও (এফএফএফ) নিন্দা জানিয়ে আর্জেন্টাইন ফুটবল ফেডারেশনে (এএফএ) চিঠিও পাঠিয়েছে ।
অবশেষে এ বিষয়ে মুখ খুললেন মার্তিনেজ। তিনি এমবাপ্পেকে নিয়ে ‘বিদ্রূপাত্মক আচরণের’ ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
ফাইনালে হ্যাটট্রিক করা কিলিয়ান এমবাপ্পেকে নিয়ে অন্তত দুবার ‘বিদ্রূপে’র দৃশ্য সামনে আসে। প্রথমবার ফাইনালের পরপর লুসাইল স্টেডিয়ামের লকার রুমে। আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়েরা দল বেঁধে নেচে-গেয়ে উদ্যাপন করার সময় আচমকাই এমবাপ্পের জন্য ‘এক মিনিট নীরবতা’র ঘোষণা দিয়ে গান ধরেন, ‘এমবাপ্পে মরে গেছে!’ এরপর ট্রফি নিয়ে আর্জেন্টিনায় ফেরার পর আরেকবার এমবাপ্পেকে সামনে টেনে আনেন তিনি। বুয়েনস এইরেসের রাজপথে ছাদখোলা বাসে একটি পুতুল হাতে দেখা যায় মার্তিনেজকে। সেই পুতুলের মুখে ছিল এমবাপ্পের মুখের ছবি।
মার্তিনেজ এ নিয়ে বলেন, ‘আমি কাউকে আঘাত করতে চাইনি। ক্যারিয়ারজুড়ে আমি ফরাসিদের সঙ্গে বেড়ে উঠেছি। কখনো একটুও সমস্যা হয়নি। আপনারা অলিভিয়ের জিরুকে জিজ্ঞেস করতে পারেন আমি কেমন মানুষ। আমি সত্যিই ফরাসি সংস্কৃতি এবং মানসিকতাকে পছন্দ করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘লকার রুমের ঘটনা কখনো বাইরে আসা উচিত নয়। তবু বলব, ২০১৮ বিশ্বকাপে আমাদের হারানোর পর ফ্রান্সও মেসিকে নিয়ে গান ধরেছিল। একইভাবে কেউ ব্রাজিলকে হারালে নেইমারকে নিয়ে গান ধরবে। এখানে এমবাপ্পের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনো ঝামেলা নেই। আমি তাকে অতিশয় সম্মান করি। আমরা যদি তাকে অথবা নেইমারকে নিয়ে গান ধরি, সেটা তারা সেরা খেলোয়াড় বলেই করি।’
‘ওই সময় মানুষ আমাদের দিকে প্রচুর পুতুল ছুড়ে মারছিল। পুরো পথে অন্তত এক শর মতো পুতুল এসেছে আমাদের কাছে। এর মধ্যে এমবাপ্পের মুখ লাগানো একটা পুতুল আমার পায়ের কাছে এসে পড়ে। দেখে হাসি আসায় ওটা আমি তুলে নিই। দুই সেকেন্ডের মতো আমার হাতে ছিল। এর পর ছুড়ে দিই। ঘটনা এটাই। এখানে এমবাপ্পেকে নিয়ে আমি মজা কীভাবে করলাম? সে তো আমার বিপক্ষে চারবার বল জালে পাঠিয়েছে। বিশ্বকাপ ফাইনালে চার গোল...আমাকে তো ওর মূর্তি ভাবার কথা। আবারও বলছি, আমি এমবাপ্পেকে অতিশয় সম্মান করি এবং এটাও বলে দিচ্ছি, আমার দেখা ফ্রান্সের খেলোয়াড়দের মধ্যে সে–ই সেরা।’-তিনি যোগ করেন।
এদিকে ফাইনালের পর এমবাপ্পের সঙ্গে কথা বলেছেন জানিয়ে মার্তিনেজ বলেন, ২৪ বছর বয়সী ফরাসি ফরোয়ার্ডই ভবিষ্যৎ ফুটবলের মহাতারকা, ‘ম্যাচের পর তাকে বলেছি, তুমি নিজের জন্য গর্বিত হতে পারো। মাথা উঁচু রাখো, তুমি দুর্দান্ত খেলেছ, তুমি বিশ্বসেরা খেলোয়াড়দের একজন। এটাও বলেছি, তোমার সঙ্গে খেলে আনন্দ পেয়েছি। একাই ফাইনাল জিতিয়ে ফেলছিল। ওর মুখোমুখি হয়ে বুঝেছি, সে খুবই প্রতিভাবান। লিও যখন ফুটবল ছাড়বে, সে অনেক অনেক ব্যালন ডি’অর জিতবে।’