তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে বিল কুমারী বিলের দেবে যাওয়া সংযোগ সড়কের অবশেষে মেরামত শুরু হয়েছে। কাজ শেষ না হতেই দেবে যায় সংযোগ সড়ক শিরোনামে আমাদের রাজশাহী পত্রিকায় খবর প্রকাশের পড় টনক নড়ে এলজিইডি কর্তৃপক্ষের। গত রবিবার উপজেলা প্রকৌশলী সাইদুর রহমান তদন্ত করে ঠিকাদার আব্দুর রশিদকে দেবে যাওয়ার জায়গা মেরামতের নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে সোমবার দুপুরের দিকে সংযোগ সড়ক মেরামত করতে দেখা যায়। তবে নিম্মমানের মেরামত কাজ নিয়েও দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন, বিরাজ করছে সমালোচনা। ফলে প্রকৌশলীর উপস্থিতিতে মেরামত কাজের দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা।সরেজমিনে দেখা যায়, তানোর ও মোহনপুর উপজেলা বাসীর সেতু বন্ধন বিলকুমারী বিলের ব্রীজ ও সংযোগ সড়ক। ব্রীজ নির্মানের কাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়কের কাজ বিগত প্রায় ১৫ বছরেও হয়নি শেষ। ব্রীজের পূর্বদিকের সংযোগ সড়ক বন্যায় ভেঙ্গে যায়। পূর্বদিকে ব্রীজের মুখ থেকে ২৯৫ ফিট সংযোগ সড়ক মেরামতের জন্য ২২ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়। কিন্তু যত সামান্য বালু ভরাট দিয়ে এইচবিবি সংযোগ সড়ক করা হয়। কাজ চলমান, এরই মধ্যে সংযোগ সড়কের উত্তর দিকে ৮-১০ হাত দেবে যায়। দেবে যাওয়ার জায়গায় সামান্য পরিমান নিম্মমানের খোয়া দিয়ে দায় সারছেন ঠিকাদার।
কাজ করছিলেন শ্রমিক দাড়িয়ে ছিলেন মিস্ত্রি, সে জানায় সড়ক দিয়ে ভারি যানবাহন চলার কারনে দেবে গেছে। গত রবিবার প্রকৌশলী দেখে মেরামত করতে বলেছেন। বালু ভরাটের সময় পানি না দেওয়ার জন্য দেবে গেছে কি না জানতে চাইলে তিনি জানান, ভরাটকৃত বালুতে পানি দেওয়ার সাথে সাথে বের হয়ে যেত, এজন্য পানি দেওয়া হয়নি।পথচারী মনি, দেলোয়ার, টুটুল, সাইদসহ অনেকে জানান, বালু ভরাটের সময় প্রয়োজনীয় পানি ব্যবহার করা হয়নি। পানি ব্যবহার করলে এত দ্রুত দেবে যেত না। পূর্বদিকের সংযোগ সড়কের কাজ চলছে আর পশ্চিম দিকের সড়কে ভয়াবহ গর্তের সৃষ্টি হয়ে মরনফাঁদে পরিনত হয়েছে। কাজের সময় এলজিইডি অফিসের কোন কর্মকর্তা কে দেখা যায় না। ঠিকাদার ইচ্ছেমত কাজ করছেন।গোল্লাপাড়া গ্রামের বাসিনা সাবেক কাউন্সিলর রাসেল সরকার উত্তম জানান, দেশে মেগা মেগা প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হচ্ছে না। দফায় দফায় শুধু বরাদ্দ আর বরাদ্দ। একদিকে করছে আরেক দিকে ভাঙ্গছে। য দেখারও কেউ নেই বলারও কেউ নেই। কাজ চলমান তারপরও দেবে যাচ্ছে তাহলে কি পরিমান অনিয়ম বা নিম্মমানের কাজ বুঝতে হবে। যাকে বলে আজব সংযোগ সড়কের আলৌকিক কাজ। আবার ব্লক দেওয়ার জন্য সড়কের নিচ থেকে মাটি কাটা হচ্ছে, যা সামনে বর্ষা মৌসুমেই ভেঙ্গে তছনছ হয়ে যাবে। শুধু তাই না সড়কের দু ধারে নামে খোয়া দেওয়া হচ্ছে। বালুর বিপরীতে মাটি দিয়ে দায় সারা কাজ করা হচ্ছে। এদিকে প্রায় দেড় যুগ চলছে, আরো কয়েকযুগ লাগবে মনে করেন তিনি।
ঠিকাদার আব্দুর রশিদ জানান, পূর্ব দিকের ব্রীজের মুখ থেকে টিবাঁধ পর্যন্ত ব্লক ও এইচবিবি কাজের জন্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং ২৯৫ ফিট সড়কে বালু ভরাট ও এইচবিবির জন্য ২২ লাখ টাকা বরাদ্দ। দুপাশে ভিজে মাটি ও নিম্মমানের খোয়া দেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি জানান, দুপাশে কাজের কোন বরাদ্দ নেই, ইচ্ছে করে করা হচ্ছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার আমি কাজ করতে চায়নি। কারন বরাদ্দ আগের আর এখন সবকিছুর দাম বাড়তি, কর্তৃপক্ষের অনুরোধে কাজ করা হচ্ছে। শেষ করতে পারলে জানে বাঁচা যায়।উপজেলা প্রকৌশলী সাইদুর রহমান জানান, সংযোগ সড়ক যত বসবে বা দেবে যাবে ততই ভালো, তাহলে টিকসই হবে। তারপরও কাজের স্থানে গিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব্লক দেওয়ার জন্য সড়কের নিচ থেকে মাটি কাটা ও পুরাতন ব্লক দেওয়া হচ্ছে প্রশ্ন করা হলে উত্তরে তিনি বলেন পুরাতন ব্লক ব্যবহার করা যাবে না। কাজ শেষে অনিয়ম হলে বিল দেওয়া হবেনা।প্রসঙ্গত, গত ৩০ এপ্রিল রাজশাহী থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমাদের রাজশাহী পত্রিকায় ব্রীজ সংযোগ সড়কের কাজ চলমান অবস্থায় দেবে গেছে শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এরপরেই নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ।