বিনোদন প্রতিবেদক: অবশেষে দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে বলিউড বাদশা শাহরুখ খান অভিনীত সিনেমা ‘পাঠান’। সাফটা চুক্তির আওতায় আগামী শুক্রবার (১২ মে) ৩৮টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে এটি। এই সিনেমার মধ্যদিয়ে দেশের বাজারে বছরে ১০টি বিদেশি সিনেমা মুক্তির সূচনা হচ্ছে। যা বদলে দিবে এই শিল্পকে- এমনটাই মনে করছেন অনেকে।
‘পাঠান’ সিনেমার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাকশন কাট এন্টারটেইনমেন্টের পক্ষ থেকে অনন্য মামুন বলেন, ‘আমরা সব হলে ছবিটি দিচ্ছি না। যেসব সিনেমা হলের মান ভালো, সেখানেই একমাত্র “পাঠান” চলবে। আর হলগুলো নিয়ন্ত্রণ হবে একটি সার্ভারের মাধ্যমে। এর মধ্যে সিনেপ্লেক্স গুলোতে নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি আগে থেকেই আছে।
তবে দেশের যেসব হলে এই প্রযুক্তিটি নেই, সেখানে আমরা নিজস্ব সার্ভার বসাচ্ছি। আর যারা ছবিটি চালাতে চাচ্ছে তাদের বলেছি, হলের পরিবেশটি সুন্দর করার। আশা করি, দেশের দর্শকরা আগামীতে ভালো কিছু পাবে।’

এই নির্মাতা জানান, ‘পাঠান’র পর দেশের বাজারে আসছে বলিউড ভাইজানের নতুন সিনেমা। ফরহাদ সামজি পরিচালিত সালমান খানের ‘কিসিকা ভাই কিসিকা জান’ আনার চেষ্টা চলছে। যার ঘোষণাও আসবে খুব শিগগিরই।
এ প্রসঙ্গে মামুন বলেন, ‘সরকার দুই বছরের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে বিদেশি ছবি আমদানির অনুমতি দিয়েছে- আশা করি, এই সময়ের মধ্যেই দেশের হলগুলো ঘুরে দাঁড়াবে। আর ১০টি ছবির অনুমতি দিয়েছে। “পাঠান” আসার পর তো আরও ৯টি ছবি থাকছে। আমরা এরই মধ্যে পরবর্তী ছবির বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছি। এরপর দর্শক দেখবে সালমান খানের “কিসিকা ভাই কিসিকা জান”। এভাবে বছরজুড়েই থাকছে নতুন ছবি।
এদিকে, ‘পাঠান’র বিপরীতে ওপার বাংলায় যাচ্ছে শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস অভিনীত ‘পাঙ্কু জামাই’। অনেকেই ইতিমধ্যে নতুনের সঙ্গে পুরোনো সিনেমার আমদানি-রপ্তানির বিষয়টি নিয়ে কথা তুলেছে।
এ প্রসঙ্গে মামুন বলেন, ‘আমরা ২০১৯ সালে আবেদনটি করি। সেসময় “পাঙ্কু জামাই”-ই নতুন ছবি ছিল। আর এর বিপরীতে কথা হয়েছিল জয়া আহসানের “বিনিসুতোয়”র। সেসময় “পাঙ্কু জামাই” সেখানে মুক্তিও পায়। এরপর আমাদের আনার পালা ছিল। তার মধ্যেই তো করোনা চলে আসল। এখন আমরা “পাঠান” আনছি। তো এখানে নতুন-পুরোনোর কি আছে? আর “পাঠান” নিয়ে কিন্তু দর্শকদের দারুণ সাড়া পাচ্ছি। এরই মধ্যে প্রায় ৮০% টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। এমনটি চলতে থাকলে, দেশের বাজারে অন্যরাও বিদেশি সিনেমা আনতে আগ্রহী হবেন। শুধু তাই না, দেশেও ভালো সিনেমা নির্মাণ হবে।’

অন্যদিকে, ‘পাঠান’ মুক্তির মধ্যদিয়ে চলচ্চিত্র শিল্পে আশার আলো দেখছে হল মালিকরা। তাদের কথায়, দেশের প্রেক্ষাগৃহে বিদেশি সিনেমা মুক্তি পেলে এই শিল্প ও সরকার দু’জনেই লাভবান হবে।
আরও পড়ুন: বিদেশি সিনেমার মুক্তি পেছাতে সংবাদ সম্মেলন
স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ বিপণন কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমি সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। ভালো ছবি চললে দর্শক হলে আসবেই। আমরা কিন্তু “পরাণ” ও “হাওয়া’র বেলায় বিষয়টি দেখেছি। বিদেশি ছবি যখন বাংলাদেশে আসবে তখন ভালো গল্পের সিনেমা নির্মাণের প্রতিযোগিতাও বাড়বে। ভালো সিনেমা হলে মানুষ হলমুখী হবেই- এটা নিশ্চিত।’
যমুনা ব্লকবাস্টার সিনেমাসের অপারেশন ইনচার্জ এ আই রাজু বলেন, ‘বাংলাদেশে দর্শকদের কমতি নেই। যার প্রমাণ আমরা ইতিমধ্যেই পেয়েছি। ভালো ভালো সিনেমা দেশে মুক্তি পেলে মানুষ হলে আসবেই। আরেকটা বিষয়, দর্শকরা এখন উৎসব কেন্দ্রিক হলে আসছে। অনেক সিনেমা হলও ঈদকে কেন্দ্র করে চালু হয় আর ঈদ উৎসবের পর তা বন্ধ হয়ে যায়। এখন যদি নিয়মিত বিদেশি সিনেমা দেশে আসে, তাহলে সেই বন্ধ হয়ে যাওয়া হলগুলো পুরোদমে চালু হয়ে যাবে। আর দেশের প্রযোজক ও নির্মাতারা ভালো সিনেমা নির্মাণের সাহস পাবে।’