Logo
আজঃ শনিবার ০৪ মে ২০২৪
শিরোনাম

দেশে ডেঙ্গুতে আরও ১৫ মৃত্যু

প্রকাশিত:বুধবার ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ | ২৮৩জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক:দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে এখন পর্যন্ত ৯৫৮ জনের মৃত্যু হলো। ২৪ ঘণ্টায় ২৯৫০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৭২৬ জন, আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ২২২৪ জন  ভর্তি হয়েছেন।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৯ হাজার ৯৬৭ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৩ হাজার ৫৩৮ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৬ হাজার ৪২৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন।

এ বছর দেশে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৯৬ হাজার ৮৩১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এরমধ্যে ঢাকায় ৮১ হাজার ২১৬ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৬১৫ জন।

তাদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ৮৫ হাজার ৯০৬ জন। এরমধ্যে ঢাকায় ৭৭ হাজার ৫৪ এবং ঢাকার বাইরে ১ লাখ ৮ হাজার ৮৫২ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।


আরও খবর



ওয়াপদা কলোনি কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ | ২০৪জন দেখেছেন

Image

মুশফিকুর রহমানঃরাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন  ওয়াপদা কলোনি কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে  ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার ৫ এপ্রিল এই কর্মসূচি পালিত হয়।এতে সভাপতিত্ব করেন ওয়াপদা কলোনী কল্যাণ সমিতির সভাপতি গাজী আজিজুর রহমান,প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা- ৫ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মশিউর রহমান মোল্লা সজল । বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ্ব মাসুম মোল্লা। অন্যান্যর মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন  যাত্রাবাড়ী ওয়াপদা কলোনি কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিলু ,সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মোঃ ইউনুস  , সাবেক সভাপতি আলমগীর  সহ কল্যাণ সমিতির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।ইফতার ও  দোয়া  মাহফিল অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন মজিবুল হক। এ সময় ইফতার মাহফিলে আগত অতিথিদের নিয়ে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।



আরও খবর



ঈদের ছুটিতে হাসপাতাল পরিদর্শনে যাবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | ১৯১জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক:স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন,ঈদের সময় স্বাস্থ্য সেবা পরিস্থিতি তদারকিতে বিভিন্ন হাসপাতালে আকস্মিক পরিদর্শনে যাবেন।

মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সামনে ঈদুল ফিতর, এর পরপরই নববর্ষ। এসময় অনেক বড় একটা ছুটি। ছুটিতে অনেকেই বাড়ি যান। এবার আমি হাসপাতাল সম্পর্কে যেটা নির্দেশ দিয়েছি, হাসপাতালে যারা চিকিৎসক কাজ করবেন, সাধারণত যারা সনাতন ধর্মের থাকেন তারাই এসময়ে কাজ করেন। ঈদের সময় রোগীদের উন্নত খাবার দেওয়া হবে।

ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, যাদের ডিউটি থাকবে সেটা যাতে ব্যাহত না হয়, সেটা আমি নিজে মনিটর করব। আমি কখন, কোথায় কোন হাসপাতালে যাব, সেটা বলব না। আমি নিজেই এ কয়দিন হাসপাতালগুলো মনিটর করব। শুধু ঢাকায় না, ঢাকার বাইরেও।

ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু এমন একটা রোগ, এখানে সচেতনতাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় জিনিস। সঠিক সময় হাসপাতালে ভর্তি না হতে পারলে ডেঙ্গুতে অনেক সময় মানুষ মারাও যায়।

তিনি বলেন, প্রথম বিষয় হলো আমাদের সচেতন হতে হবে। ডেঙ্গু মশার উপদ্রব বন্ধ করতে হবে। চিকিৎসা হলো পরের কথা। চিকিৎসা করার জন্য যা যা দরকার সেটা নিয়ে আমরা অলরেডি একটা মিটিং করেছি। ঈদের পরে আবার বসব যেন চিকিৎসায় কোনো ঘাটতি না হয়।


আরও খবর



নওগাঁয় দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে স্বামী-স্ত্রী নিহত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | ৬৯জন দেখেছেন

Image

নওগাঁ সংবাদদাতা:নওগাঁয় দুই মোটরসাইকেল এর মুখোমুখি সংঘর্ষে স্বামী-স্ত্রী নিহত হয়েছে। এসময় নিহতদের ৫ বছর বয়সী এক শিশু সন্তানসহ গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দুই জন। মর্মান্তিক এ দূর্ঘটনাটি ঘটে বুধবার সকালে নওগাঁ জেলা সদর উপজেলার নওগাঁ- বগুড়া মহাসড়কের শাহাপুর এলাকায়। নিহত স্বামী-স্ত্রী হলেন, পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী গ্রামের এনামুল হক (৪৯) ও তার স্ত্রী বৃষ্টি আক্তার (৩২)। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সন্তানসহ তারা স্বামী-স্ত্রী একটি মোটরসাইকেল যোগে নওগাঁ থেকে বগুড়ার সান্তাহারের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌছালে এসময় বিপরীত দিক থেকে আসা অপর একটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাদের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে তারা সড়কের উপর ছিটকে পড়েন এবং দূর্ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। স্থানিয়রা তাদের আহত সন্তানসহ অপর মোটরসাইকেল আরোহী একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। 

নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)  জাহিদুল হক বলেন, মোটরসাইকেল দুটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে মোটরসাইকেলের আরোহীরা ছিটকে সড়কের উপর পড়েন। প্রাথমিক ভাবে স্থানিয়রা ধারনা করছেন যে, সড়কের উপর পড়ে মাথায় আঘাত পেয়ে দূর্ঘটনা স্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। এদূর্ঘটনার খবর পেয়ে থানা পুলিশ দূর্ঘটনাস্থলে পৌছে প্রাথমিক সুরতহাল তথ্য ও আলামত জব্দ করে। পরে ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করেন। এব্যাপারে আইনানুগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।


আরও খবর



পত্নীতলায় ওয়েভ ফাউন্ডেশনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | ৫৩জন দেখেছেন

Image
পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি:পত্নীতলায় পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন ও বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রকল্পের আওতায় বেসরকারি এনজিও সংস্থা ওয়েভ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে উন্নয়ন কার্যক্রমে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অর্ন্তভুক্তি বিষয়ক মতবিনিময় সভা সোমবার নজিপুর পুরাতন বাজার পত্নীতলা প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ওয়েভ ফাউন্ডেশনের বিভাগীয় সহকারী সমন্বয়কারী সুদীপ কুমার ঘোষের সঞ্চালনায় ও ওয়েভ ফাউন্ডেশন নেটওয়ার্ক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব বুলবুল চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিসার মনোরঞ্জন পাল, জাতীয় মহিলা সংস্থা পত্নীতলার দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল হক, ওয়েভ ফাউন্ডেশন নেটওয়ার্ক কমিটির সাঃসম্পাদক আলহাজ্ব জয়নাল আবেদিন। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহ-সভাপতি স্বদেশ কুমার মন্ডল, অবসরপ্রাপ্ত মিলন কুমার মন্ডল, প্রো-বনো লইয়ার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু আইন ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য চৌধুরী ব্রেলভীর, কাউন্সিলর ফারজানা, ফারহানা, আদিবাসী নেতা নরেণ পাহান, পরেশ টুডু, দলিতনেতা সুমন রবিদাস, সেচ্ছাসেবক কনিকা হাসদা, সহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, উপজেলা এডভোকেসি নেটওয়ার্ক এর সদস্যবৃন্দ প্রমুখ।

আরও খবর



মহান মে দিবস, বঙ্গবন্ধু ও শ্রমিক অধিকার

প্রকাশিত:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | ৭৮জন দেখেছেন

Image

লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল ॥১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস, যা বিশ্ব পরিমন্ডলে ‘মহান মে দিবস’ বা শ্রমিক দিবস হিসেবে গুরুত্বসহকারে পালন করা হয়। বিশ্বের শ্রমজীবী-কর্মজীবী, পেশাজীবী, মেহনতি মানুষের ঐক্য, সংহতি, সংগ্রাম, সাফল্য ও বিজয়ের দিন মহান মে দিবস। মে দিবস এলেই আমাদের সামনে ভেসে ওঠে ঘর্মাক্ত মেহনতি-শ্রমজীবী মানুষের প্রতিচ্ছবি। আর এই শ্রমজীবী মানুষের অধিকারের প্রশ্নটিও সাথে সাথে উঠে আসে এই ঐতিহাসিক দিনে। এই দিবসের তাৎপর্য অনেক, এর পেছনে রয়েছে একটি রক্তস্নাত ইতিহাস। ১৮৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে আট ঘণ্টা শ্রম দিবস, মজুরী বৃদ্ধি, কাজের উন্নতর পরিবেশ ও শ্রমের ন্যায্য দাবি প্রতিষ্ঠা করার আন্দোলনে আত্মহুতি দান করেছিলেন শ্রমিকরা, ১ মে তারিখে বিভিন্ন দাবিতে ধর্মঘট সমাবেশে পুলিশের গুলি বর্ষণে ৬ জন শ্রমিক প্রাণ হারায়। এর প্রতিবাদে পরদিন হে মার্কেটে শ্রমিকরা মিলিত হলে কারখানার মালিকরা সেখানে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় এবং এতে ৪ শ্রমিক নিহত হয়। শ্রমিকদের নিয়ে আন্দোলন করার দায়ে অগস্ট স্পাইস নামে এক শ্রমিক নেতাকে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়। ১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল সোশ্যালিষ্ট কংগ্রেসে ১ মে শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষিত হয় এবং তখন থেকে অনেক দেশে দিনটি শ্রমিক শ্রেণী কর্তৃক উদযাপিত হয়ে আসছে।

রাশিয়া এবং পরবর্তীতে আরো কয়েকটি দেশে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব সংগঠিত হবার পর মে দিবস এক বিশেষ তাৎপর্য অর্জন করে। জাতিসংঘের একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক শাখা হিসেবে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ইন্টারন্যাশনাল লেবার অরগানাইজেশন বা আইএলও) প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে শ্রমিকদের অধিকার সমূহ স্বীকৃতি লাভ করে। আইএলও কতগুলো নিয়মকানুন প্রতিষ্ঠা করে এবং সকল দেশের শিল্প মালিক ও শ্রমিকদের তা মেনে চলার আহ্বান জানায় এবং এভাবে শ্রমিক ও মালিকদের অধিকার সংরক্ষণ করার চেষ্টা করে। বাংলাদেশ আইএলও কর্তৃক প্রণীত নীতিমালায় স্বাক্ষরকারী একটি দেশ। বাংলাদেশে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মাধ্যমে মে দিবস পালিত হয়ে আসছে।
রাষ্ট্রপ্রধান, সরকার প্রধান, বিরোধীদলীয় নেতা এবং সংশ্লিষ্ট শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা বাণী দিয়ে থাকেন। মে দিবসের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার জন্যে সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র বা প্রবন্ধ কিংবা বিশেষ নিবন্ধন প্রকাশ করে। মাথায় রঙ-বেরঙের কাপড় বেধে নানা রঙের ফেস্টুনসহ শ্রমিকরা মিছিল শোভাযাত্রা বের করে, বেতার ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া বিশেষ অনুষ্ঠানাদির ব্যবস্থা করে। বাংলাদেশে বিভিন্ন পেশাজীবী, শ্রমজীবী এবং সামাজিক -সাংস্কৃতিক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো নানা আয়োজনের মাধ্যমে দিবসটি পালন করে থাকে। দেশের সংবাদপত্র ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এই সকল সভা-সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামের খবর গুরুত্বসহকারে প্রচার করে থাকে। বাংলাদেশ মে দিবস পালনের ক্ষেত্রে মোটেও পিছিয়ে নেই। এ দেশে ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯৩৮ সালে নারায়ণগঞ্জে প্রথম মে দিবস পালিত হয়। তারপর পাকিস্তান আমলেও মে দিবস যথেষ্ট উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে পালিত হয়েছে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে হাজার হাজার শ্রমিক অংশগ্রহণ করে এবং দেশ মাতৃকার জন্যে শহীদ হয়।

১৯৭২ সালে ১ মে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১ মে-কে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা সহ রাষ্ট্রপতি আদেশ ২৭(ক) ধারা মোতাবেক এদেশের সকল ব্যাংক, বীমা, শিল্প- কলকারখানা, রেল, নৌ-পরিবহনসহ  বৈদেশিক বাণিজ্যের সিংহভাগ রাষ্ট্রায়ত্ব ঘোষণা করেন। ফলে এর সুফলও ঐ সকল শিল্প কলকারখানায় কর্মরত শ্রমিক কর্মচারীগণ ভোগ করতে থাকেন। সরকার নীট মুনাফার ৫% শ্রমিক কর্মচারীদের মধ্যে সমহারে বন্টনের ঘোষণা দেয়, ফলে বেশ কিছু শিল্পে উৎপাদন ও মুনাফা যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় যে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ডের পর জেনারেল জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে ১৯৭৭সালে প্রথম পাকিস্তানী অবাঙালিদের রেখে যাওয়া কিছু কিছু শিল্প কলকারখানা ব্যক্তি মালিকানায় দেওয়া শুরু করেন, পরবর্তীতে জেনারেল এরশাদ ও বেগম খালেদা জিয়ার সরকার কম-বেশী সবাই ব্যক্তি মালিকানায় মিল কলকারখানা হস্তান্তর করেন। আটের দশকের শেষের দিকে পূর্ব-ইউরোপে সমাজতন্ত্রের পতনের পর তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো অতিদ্রুত সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক কর্মসূচী পরিত্যাগ করে বাজার অর্থনীতি তথা মুক্তবাজার অর্থনীতি রাষ্ট্রীয় পলিসি হিসেবে ঘোষণা করেন।

এই সব কারণে একদিকে যেমন শোষণ- নির্যাতন বেড়েছে অপর দিকে ব্যক্তির লুটপাটে পানির দামে ক্রয়কৃত চালু মিল কলকারখানাগুলো একে একে বন্ধ হয়ে গেছে। দেশ আজ আমদানি নির্ভর একটি সিন্ডিকেট চক্রের হাতে জিম্মি । বাংলাদেশে আজ শ্রমিকদের অবস্থা খুবই নাজুক । নারী-পুরুষের মুজুরী  বৈষম্যতো আছেই, এছাড়াও প্রায় সকল সেক্টরে ৮ ঘন্টার বেশী শ্রম দিতে হয়। হোটেল- রেস্তোরায় ও পরিবহন সেক্টরে ভোর ৬ টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত শ্রমিক খাটানো হয়, তারপরও নেই কোন নিয়োগপত্র, নেই কোন মজুরী কাঠামো, নেই কোন উৎসব ভাতা কিংবা চিকিৎসাভাতা, এই সব সেক্টরে অধিকাংশ শিশু শ্রমিক নিয়োজিত আছে। দেশের তৈরী পোশাকশিল্প , চাউলের কল, চাতাল, চিংড়ী ঘের ও কৃষি কাজে হাজার হাজার নারী ও পুরুষ শ্রমিক কর্মরত আছে। এখানেও তাদের নেই কোন মজুরী কাঠামো বা নির্ধারিত শ্রম ঘন্টা অথবা কর্মের উপযুক্ত পরিবেশ, এমনকি শ্রমিকদের নেই নিজের জীবনের নূন্যতম নিরাপত্তা, অথচ তাঁরাই নিজের শ্রম দিয়ে, ঘাম দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা চালু রেখেছেন। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে শ্রমিক হত্যাযজ্ঞ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় ১,৫০০ শ্রমিক নিহত এবং দুইসহস্রাধিক শ্রমিক আহত হয়ে পঙ্গুবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। বাহ্যিকভাবে এটি দুর্ঘটনা। একটি ভবন ধসে লোক হতাহত হয়েছেন।

আসলে এটা কি শুধুই দুর্ঘটনা? কথিত দুর্ঘটনার আগের দিন ভবনটিতে ভয়াবহ ফাটল দেখা যায়। লোকজন ভবন ছেড়ে চলে যায়। পরের দিন ভবনে অবস্থিত কয়েকটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান দুর্ঘটনার আশংকায় খোলেনি। সেখানে গার্মেন্টস শিল্পে কাজ করার জন্যে প্রায় ৪ হাজার শ্রমিককে চাকরির ভয়ভীতি দেখিয়ে ঐ ভবনের ভেতরে নেয়া হয়। তারপর এই দুর্ঘটনা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভবনটি বিপজ্জনক বলে ঘোষণা করে সিলগালা করে বন্ধ করতে অসুবিধা কোথায় ছিল? ভবনটি নির্মাণে রাজউকের কোন অনুমোদন ছিল না। ভবন মালিক পৌরসভা থেকে ছয় তলা করার অনুমোদন নিয়ে, সেখানে নয় তলা ভবন তৈরী করলো কিভাবে? এই ভবন ধসের বিষয়টি মানবসৃষ্ট, কাজেই এই বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানি নিছক দুর্ঘটনা নয়, ইহা হত্যাকান্ড। ফলে ভবন মালিক সোহেল রানাসহ দায়ী সব পোশাক শিল্পের মালিকদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে শ্রমিক হত্যার জন্য দায়ী পোশাক শিল্পের মালিকদের বাঁচানোর যে চেষ্টা অতীতে বিজিএমইএ করে এসেছে, তা থেকে তারা সরে আসবে বলে আশা করছি। দেশের তৈরী পোশাকশিল্প খাতকে বাঁচানোর স্বার্থেই এটা করতে হবে।কর্মস্থলে শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। রানা প্লাজা হতাহত শ্রমিকদের অনেকেই আজও তাদের ক্ষতিপূরণ পায়নি।

এমনকি নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজনরা শত চেষ্টা করেও খোঁজ কিংবা নিহত শ্রমিকের লাশও পায়নি। এই ভবন ধসের ঘটনার অভিজ্ঞতা নিয়ে অনুরূপ ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি অন্যান্য কারখানায় না ঘটে সেরকম প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করা হয়নি।

মহান মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক সংগ্রাম-আন্দোলনে বাংলাদেশের শ্রমিকদের আত্মত্যাগ ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে আছে। বাংলাদেশের শ্রমক্ষেত্রে যত আইন, নীতি, বিধি-বিধান ও নীতিমালা রয়েছে তা মূলত দেশের শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষা তথা শ্রমক্ষেত্রে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা  ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার জন্যে প্রণয়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে শ্রমিজীবী মানুষের অবদান সবচেয়ে বেশী। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে শ্রমিকদের একাগ্রতা ও শ্রমিক-মালিকের পারস্পরিক সুসম্পর্ক অপরিহার্য। টেকসই উন্নয়ন ও শিল্প-বাণিজ্য খাতে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও তাদের ন্যায্য অধিকারসমূহ নিশ্চিত করতে হবে।


আরও খবর