মিজানুর রহমান মিজান, বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : দিনাজপুর জেলার বিরামপুরে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে দূর্ঘটনা এড়াতে নেই কোন গতিরোধক ও ফুট ওভারব্রীজ। এই মহাসড়কটি জনবহুল ও ব্যস্ততম হওয়ায় যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। প্রতিদিনই রাস্তা পারাপারে চরম দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থী ও পথচারীসহ এলাকাবাসীকে।
দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কটি বিরামপুর পৌর শহরের অনেক ব্যস্ততম সড়ক। এই মহাসড়কের উপর দিয়ে প্রতিদিনই অনেক দূরপাল্লার বাস, ট্রাক ও ঢাকাগামী কোর্সসহ বিভিন্ন ভারী যানবাহন চলাচল করে থাকে। এই উপজেলায় প্রায় ৬ লক্ষ লোকজন বসবাস করে। তাছাড়াও দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, জয়পুরহাটসহ বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের আনাগোনা তো আছে। তাই প্রতিদিন ব্যস্ত হয়ে পড়ে এই শহর ও মহাসড়ক।
এই মহাসড়কে নেই কোন ফুটপাত, গতিরোধক, ফুট ওভারব্রীজ কিংবা জেব্রা ক্রসিং। এ অবস্থায় প্রতিদিনই শিক্ষার্থী ও পথচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যস্ততম এই রাস্তা পারাপার হচ্ছে। সকলেই জীবনকে বিপদাপন্ন করে মহাসড়কটি আড়াআড়ি ভাবে পাড়ি দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে যাচ্ছে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন সকালে সড়ক পার হয়ে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়া ও বাড়িতে ফেরা হয়ে পড়েছে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কিছু সময় পরপর শিক্ষার্থী ও পথচারীরা হাত উঁচিয়ে গাড়ি থামিয়ে মহাসড়কের রাস্তা পার হচ্ছে। এতে প্রায়ই সময়ই সৃষ্টি হয় অনাকাঙ্ক্ষিত যানজট, মানব জটলা, এমনকি ঘটছে দূর্ঘটনা। কেউ কেউ হাত না দেখিয়ে গাড়ি না থামিয়ে দৌড়ে রাস্তা পার হচ্ছেন। এতে করে ঘটছে দূর্ঘটনা।
বিরামপুর পৌর শহরের মহাসড়কের দু’পার্শ্বে রয়েছে অনেক গুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সড়কের এক দিকে রয়েছে টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট, আদর্শ হাইস্কুল ও আদর্শ মহিলা মাদ্রাসা, আইডিয়াল কেজি স্কুল, শিমুলতলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও শিমুলতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
অন্যদিকে রয়েছে বিরামপুর সরকারি কলেজ, চাঁদপুর ফাজিল মাদ্রাসা, উপজেলা কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজিয়েট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং আমানুল্লাহ আদর্শ বিদ্যা নিকেতন, বিরামপুর মহিলা কলেজ, পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, বিরামপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বিরামপুর উপজেলা পরিষদ। এই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ও উপজেলা পরিষদে বিভিন্ন দপ্তরীক কাজে আগত জনসাধারণ।
বিরামপুর আর্দশ হাইস্কুলের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী এ এম এম মাহী কৈশোর বলেন, আমাদের বিদ্যালয় অনেক ছাত্র-ছাত্রী। আমরা খুব-ই ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করি। ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হলে আমরা নিরাপদে রাস্তা পারাপার হয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে পারব। স্থানীয় প্রশাসন ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণে সু-দৃষ্টি দিনেন বলে আশা করছি।
বিরামপুর আর্দশ হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মোকছেদ আলী বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থী, পথচারী ও এলাকাবাসীর পারাপার ও দুর্ভোগ লাঘবে জন্য উপজেলা প্রশাসন ও পৌর মেয়র ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশা করছি।
বিরামপুর চাঁদপুর ফাজিল মাদ্রাসার প্রভাষক মেফতাহুন নাহার কবিতা বলেন, পথচারী ও শিক্ষার্থীদের নিরাপদে মহাসড়ক পারাপারের জন্য বিরামপুর শহরে স্কুল- কলেজ ও মাদ্রাসা এলাকায় ফুট ওভারব্রিজের দাবী আমাদের দীর্ঘদিনের। এই ফুট ওভারব্রিজের নির্মাণ করা হলে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে পারবে। সেই সঙ্গে দূর্ঘটনার এড়ানো সম্ভব হবে আশা করছি।
বিরামপুর পৌরসভা মেয়র অধ্যক্ষ মো. আক্কাস আলী বলেন, নিতান্তই বিরামপুরে ফুটওভার ব্রীজ প্রয়োজন। আমি সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাথে কথা বলেছি। আশা করিছ খুব শীঘ্রই পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফুটওভার ব্রীজ নির্মাণ করা সম্ভব হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পরিমল কুমার সরকার বলেন, দিনাজপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাথে পৌর শহরের মহাসড়কে গতিরোধক এবং ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের বিষয়ে কথা হয়েছে। আশা রাখছি এর দ্রুত সমাধান হবে।