
আদালত প্রতিবেদক; জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের আমির ডা. মো. শফিকুর রহমানকে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় তাকে এ রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
আজ মঙ্গলবার ডা. শফিকুরকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, পুলিশ পরিদর্শক মো. আবুল বাসার। আসামি পক্ষে রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন আহমেদ, আব্দুর রাজ্জাকসহ কয়েকজন আইনজীবী।
জামিন আবেদন করে তারা বলেন, নির্বাচনের আগে বিরোধীদলগুলো আন্দোলনে প্রস্তুতি নিচ্ছে। যুগপৎ আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামও প্রস্তুত। ঠিক তখনই তাকে (ডা. শফিকুর) গ্রেপ্তার করা হলো। রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি কারণে তাকে গ্রেপ্তার করে এ রিমান্ড আবেদন। বয়স্ক, অসুস্থ বিবেচনায় তার জামিন হওয়া প্রয়োজন।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে শুনানিতে অংশ নেওয়া ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু জামিনের বিরোধিতা করে রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালত ডা. শফিকুরের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১টায় রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে ডা. শফিকুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার ছেলে গ্রেপ্তার ডা. রাফাত চৌধুরী নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাকে যাত্রাবাড়ী থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। ওই মামলাতেই ডা. মো. শফিকুরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গত ৯ নভেম্বর তার ছেলে ডা. রাফাত চৌধুরীকে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসির বোম ডিসপোজাল ইউনিট। সিটিটিসি তখন জানায়, জামায়াতের আমিরের ছেলে গ্রেপ্তার ডা. রাফাত চৌধুরী নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন।
২০২১ সালে আরাকানে রোহিঙ্গাদের পক্ষে জিহাদের জন্য রাখাইনের সশস্ত্র সংগঠন ‘আরসা’ ও ‘আরএসও’ উভয় সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করে হিজরত (একটি উদ্দেশ্য নিয়ে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে গমন) করেন। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত ‘আরএসও’ নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন ডা. রাফাত।
গত ১ নভেম্বর রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- সেজাদুল ইসলাম সাহাব তানিম ওরফে ইসা ওরফে আরাফাত ওরফে আনোয়ার ওরফে আনবির (২৪), মো. জাহিদ হাসান ভূঁইয়া (২১) ও সৈয়দ রিয়াজ আহমদ (২২)।
তাদের তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা প্রত্যেকেই উগ্রবাদি জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়ক ডা. রাফাত চৌধুরীর মাধ্যমে দাওয়াতপ্রাপ্ত হন। তারা গত ৬ নভেম্বর ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে গ্রেপ্তার তিনজন ডা. রাফাতসহ অন্য সহযোগীদের নাম প্রকাশ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সিলেট এলাকা থেকে ডা. রাফাত চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়।